বছর চারেক আগের কথা, - TopicsExpress



          

বছর চারেক আগের কথা, ব্যক্তিগত প্রয়োজনে রাজশাহী গিয়েছিলাম। ফেরার পথে শ্যামলী পরিবহনের টিকেট নিলাম। ভালোই চলছিলো রাতের জার্নি, বাসের স্টাফরা পরস্পরের নাম ধরে সম্বোধন করায় বুঝতে পারছিলাম সবাই হিন্দু ধর্মের অনুসারী, এমনকি যে কাউন্টারে টিকেট করেছি তারাও হিন্দু। সুন্দর ছিম ছাম একটি হোটেলে যাত্রা বিরতী দেয়া হলো। সবাই রাতের খাবার খাওয়ার পরে আবার গন্তব্য পথে ছুটবে গাড়ি। বিড়ানীর অর্ডার দিলাম, সাথে কোল্ড ড্রিংকস। খাওয়ার পরে বাসে উঠেই কেমন যেনো মাথা ঘুড়াচ্ছিলো, সাথে বমি বমি ভাব। জার্নিতে অনেকেরই এমন হয় সেটা জানি, কিন্তু প্রচুর জার্নির অভ্যাস থাকাতে আমার এই প্রব্লেমটা নেই। কেমন যেনো একটা সন্দেহ হলো। পরের স্টপেজে গাড়ি ঢুকলো একটি পেট্রোল পাম্পে, বাস থেকে নেমে পেট্রোল পাম্প ঘুড়ে ঘুড়ে দেখলাম, পাম্পের বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের নানা রকমের দেব দেবীর ছবি টানানো। বুঝতে অসুবিধা হলোনা, শ্যামলী পরিবহনের মালিক কর্মচারী সবাই হিন্দু, এমনকি তারা যে রেষ্ট্রুরেন্টে গাড়ি থামায় সেটাও হিন্দু মালিকের, যে পেট্রোল পাম্প থেকে তেল নেয় সেটাও হিন্দু। তার মানে হারাম পন্থায় জবাই করা পশুর মাংস দিয়ে রান্না করা বিড়ানী খাওয়ায় অসুস্থ বোধ করছিলাম! পরে দেখেছি শ্যামলী পরিবহনের সুপার ভাইজারের কাছে যে যাত্রী তালিকা থাকে তার শিরোনামে লেখা থাকে, “বাবা লোকনাথের নামে চলিলাম!” সেদিন ফেসবুকে কার যেনো একটা লেখা দেখেছিলাম সম্ভবত ‘ফারিজা বিনতে বুলবুল’ আপার লেখা। হিন্দুদের যে ইউনিটি সেটার কথা উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি সি.পি ফুডের কথা উল্লেখ করেছেন, এই প্রতিষ্ঠানের মালিক থেকে শুরু করে সকল কর্মচারী হিন্দু! আচ্ছা, ‘সি.পি. ফুডে’র কর্মীদের হাতে জবাই করা মুরগী কি হালাল? তারা কি আল্লাহর নামে জবাই করে, নাকি ভগবানের নামে মাথা কাটা মুরগী দিয়েই সুস্বাদু সব আইটেম তৈরী করে?! চট্টগ্রামের গোল পাহাড় থেকে শুরু করে আন্দরকিল্লা এবং জামাল খানে বেশ কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ক্লিনিক রয়েছে। এর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে সকল ডাক্তার এমনকি চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পর্যন্ত সবাই হিন্দু। কি চমৎকার ঐক্য তাদের মাঝে। ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে এতোক্ষণ কথা বললাম, এবার আসি সরকারী এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে। সমগ্র বাংলাদেশের কথা জানিনা, চট্টগ্রামের স্কুল গুলোতে ব্যাপক হারে হিন্দু শিক্ষক নিয়োগ প্রদান করা হচ্ছে। একজন, দুইজন, তিনজন বাড়ছেই, প্রতি নিয়তই বাড়ছে। কি মনে হচ্ছে, হিন্দুরা অত্যান্ত মেধাবী তাই চাহিবা মাত্রই চাকরী হয়ে যাচ্ছে!? সেদিন আমার রুমমেট প্রশ্ন করলো, আচ্ছা বিদ্যুৎ বিভাগ কি হিন্দু প্রতিষ্ঠানের কাছে লিজ দেয়া হয়েছে? আমি আসলে জানিনা কেনো, কিন্তু ব্যাপারটা সত্যি, ‘পাওয়ার গ্রিড কোম্পানী অব বাংলাদেশ’ খুলশী এড়িয়ার অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী হিন্দু! পুলিশের এস.আই নিয়োগ দেয়া হবে, বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা দৌড় ঝাপ শুরু করলো। রেজাল্টের দিন দেখা গেলো দারুণ দৃশ্য। ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা কেউ চাকরী পেলো, কেউ পেলোনা! কিন্তু অমুসলীম হলের সিংহভাগ ছাত্রই চাকরী পেয়ে উল্লাসে ফেটে পড়লো। এটা আমার কথা না, ঢাকা ভার্সিটির এক ছাত্রলীগের নেতাই ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকে স্টাটাস দিয়েছেন। সম্প্রতি পুলিশের এ.আই.জি প্রলয় কুমারের মহা প্রলয়তো আমরা দেখলামই। কিভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগ উত্থাপন করে ইনকিলাবের নির্বাহী সম্পাদককে রিমান্ডে নেয়া হলো। তিনি নাকি প্রকাশ্যেই পুলিশের মধ্যে হিন্দু পুলিশ লীগ গঠন করেছেন, এবং পুলিশ হেড কোয়ার্টারে বসে বসে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে গালা-গালি করছেন। এই প্রলয় কুমার ঘুশের টাকায় কিংবা ‘র’(RAW) এর টাকায় উত্তরাতে ১২তলা ভবন নির্মান করছেন। আরো দেখলাম ঢাকাতে হিন্দু পুলিশ কর্মকর্তা কর্তৃক মসজিদে তালা দেয়ার হুমকির ঘটনা। বাংলাদেশের সবগুলো থানাতে এখন হিন্দু পুলিশ অফিসারদের জয় জয়কার। প্রচন্ড দাপটশালী এই পুলিশ কর্মকর্তারা। কিছুদিন পূর্বে এক ভাই সম্ভবত বরিশাল শিক্ষাবোর্ড ঘুড়ে এসে ফেসবুকে লিখেছেন, তিনি অবাক হয়ে গিয়েছেন, এটা কি বাংলাদেশের শিক্ষাবোর্ড, নাকি ভুলে ভারতে ঢুকে পড়েছেন। সিরিয়ালি যতজন কর্মকর্তা বসে আছেন তাদের অধিকাংশরই রুমের সামনে নেমপ্লেটে হিন্দু নাম লেখা। সুরঙ্গ ব্যাংক নামে পরিচিত সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে বসানো হয়েছে দুইজন হিন্দু পরিচালক। সরকারী ব্যাংকগুলোতে গণহারে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে হিন্দু কর্মকর্তা। বিগত অবৈধ নির্বাচনের পূর্বে একটা নিউজ দেখেছিলাম, জানিনা কতটুকু সত্য সেখানে বলা হয়েছিলো ৬৪টি জেলার মধ্যে ৪০টির জেলা প্রশাসক হচ্ছেন হিন্দু। বেশ কিছুদিন পূর্বে একটি প্রগ্রামে গিয়েছিলাম, সেখানে একজন বক্তা বলছিলেন, সেনাবাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তাদের প্রমোশনের পূর্বে ভারতে গিয়ে ছয় মাসের একটি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করার নিয়ম চালু করা হয়েছে। সেখানে প্রশিক্ষনের নামে বাংলাদেশী সেনা কর্মকর্তাদের মদ, নারী ইত্যাদি অফার করা হয়। যারা সহজেই এগুলো গ্রহণ করে তারা পজেটিভ হিসেবে বিবেচিত হন এবং তাদের প্রমোশন দেয়া হয়। আর যারা মদ, নারী এড়িয়ে চলেন তারা মৌলবাদী বলে বিবেচিত হন, সামরিক বাহিনীতে তাদেরকে ব্যাপকভাবে কোনঠাসা করে রাখা হয় এবং সুযোগ বুঝে ঠুনকো অভিযোগে বহিস্কার কিংবা বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। সবচাইতে যেটা ভয়াবহ সেটা হচ্ছে, যেসব কর্মকর্তা সেখানে গিয়ে মদ, নারীতে আসক্ত হয়ে পড়েন তাদের গোপন মূহুর্তগুলোর প্রমাণ ধরে রাখা হয় পরবর্তীতে ব্লাক মেইল করে বিভিন্ন সুবিধা আদায় করার জন্য। একটা সময় ভারতীয় উপামহাদেশ ছিলো শত শত ছোট ছোট রাজ্যে বিভক্ত, জুলুম ছিলো সেসব রাজ্য শাসনের স্বাভাবিক নীতি। উচ্চ বংশের হিন্দুরা নিম্ন বংশের হিন্দুদেরকে এবং বৌদ্ধদেরকে চরম পর্যায়ে নির্যাতন চালাতো। এক পর্যায়ে ভারত বর্ষে মুসলিমদের আগমন হলো, তারা সমগ্র ভারতের রাজ্যগুলো দখল করে একটি বিশাল সাম্রাজ্য গঠন করলেন এবং সাম্য ও ন্যায় ভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করলেন। ইসলামে সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে দলে দলে হিন্দু এবং বৌদ্ধরা ইসলাম গ্রহণ করলো। এক পর্যায়ে ব্রিটিশরা এ অঞ্চল দখল করলো, মুসলিমদেরকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে প্রশাসনের সর্বস্তরে বসিয়ে দিলো এদেশীয় দালাল হিন্দুদেরকে। ক্ষুব্ধ মুসলিমরা প্রতিবাদ জানালো, ফলাফল হলো ভয়াবহ। মুসলমানদের জমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সব কেড়ে নিয়ে তাবেদার হিন্দুদের নেতৃত্বে জমিদারী প্রদান করা হলো। মুসলিমরা রাজা থেকে পরিণত হলো গোলামে, এমনকি হিন্দু জমিদারদের বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় মুসলিম প্রজারা বাধ্য হয়ে জুতা খুলে বগলে নিতো, নইলে জমিদারের অবমাননা হবে! ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মুসলিমদের গালি দিয়ে বলেছিলো, “চাষার ছেলেরা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে তবে ক্ষেতে খামারে কাজ করবে কারা?” পরবর্তীতে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৪৭সালের ১৪ই আগস্ট মুসলমানরা পেলো স্বাধীন আবাস ভূমি। পেলো হিন্দুত্বের গোলামী হতে মুক্তি। বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের শাসন দেখে বারবারই কেবল মনে হচ্ছে, আমরা কি বৃটিশ শাসনাধীন ভারতের অবস্থায় পতিত হচ্ছি, যেখানে হিন্দুরা শাসন করবে মুসলিমদেরকে! আওয়ামীলীগের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার লক্ষে প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে বিপুল সংখ্যক সংখ্যালঘু হিন্দু কর্মকর্তা এবং দেয়া হচ্ছে অপরিসীম ক্ষমতা। বাংলাদেশ কি হিন্দু প্রশাসন শাসিত মুসলিম দেশে পরিণত হচ্ছে? লেখাঃ সংখ্যালঘুর প্রশাসন, সংকটে মুসলিম। © শামীম রেজা ২৫/০৮/২০১৪
Posted on: Mon, 25 Aug 2014 12:40:03 +0000

Trending Topics



ht:30px;">
Who needs Melo 1s Speak Now or Forever hold your peace! $200 each

Recently Viewed Topics




© 2015