#কোটা ও কিছু কথা - TopicsExpress



          

#কোটা ও কিছু কথা # ||পুর্বকার কিছু || ২০০৯ সাল তখন। সদ্য পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে চাকুরী পাওয়া এক বড় ভাইয়ের সাথে কথা হচ্ছিল। হঠাত কোটা প্রসঙ্গ চলে আসে। উনি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় চাকুরী পেয়েছেন। আমি বুদ্ধি হওয়ার পরেই উনাকে অন্তত কয়েকবার এস এস সি দিতে দেখেছি। ইন্টারমিডিয়েটও একাধিকবার তাও আবার আমাদের প্রচলিত সাধারন শিক্ষব্যাবস্থায় নয়। অন্য শর্টকার্ট পদ্ধতি । কোটাবিরোধী কথা শুরু থেকেই বলার স্বভাবগত বৈশিষ্ঠ থেকেই কোটা নিয়ে কিছু কাটা কথা বলায় উনি অনেক যুক্তি দিয়েও যখন হেরে গেলেন শেষে পেরেকটা পুঁতলেন এই বলে "যারা এইসব কোটার বিরুদ্ধে কথা বলে আর কোটাবিরোধী আন্দলনে নামে(উল্লেখ্য ততদিনে অনেকবার এর বিরুদ্ধে ছোটবড় প্রতিবাদ হয়েছে ) খোঁজ নিয়ে দেখা যাবে তারা সবাই রাজাকারের ঘরের সন্তান অথবা রাজাকারের সঙ্গে সম্পর্ক আছে " । ব্যাস এটা অনেক সেনসেটিভ বিষয় ,আর না এগোনোই শ্রেয় । ||এখনকার ভাবনা || রাষ্ট্রের প্রশাসন হল তার হৃদপিন্ড। প্রাশাসনিক ব্যাবস্থা ভেঙ্গে পড়লে বা সুষ্ঠুভাবে তা রান না করলে রাষ্ট্রের সার্বিক চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে পড়ে। সুতরাং এই অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন ব্যাবস্থা পরিচালনার জন্য প্রয়োজন অসম্ভব মেধাবী ,মনন ও চিন্তাশিল,কর্মঠ একঝাঁক শিক্ষিত শ্রেণি। বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষার মাধ্যমে এই নিয়োগ হয়ে থাকে । যেখানে সকল কোটা বাদ দিয়ে সাধারনের জন্য উন্মুক্ত প্রায় ৪৫% !! কি সাঙ্ঘাতিক ব্যাপার লক্ষ করলে বোঝা যায় যে শতভাগের মধ্য পঞ্চাশ শতাংশের উর্ধেই কোটা ব্যাবস্থা দখল করে ফেলেছে। আমের চেয়ে আঁটি বড়। লিচু বা সে জাতীয় কোন ফল কিনতে গিয়ে দশবার দোকানকীকে জিজ্ঞেস করেন যে "বিচি ছোট হবে তো ?" । অথচ এখানে কি ? বিচিই ফলকে গ্রাস করছে,আপনি কি গিলবেন। এর চেয়ে সুন্দর করে বলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। ||বিষয়ভিত্তিক ক্ষুদ্র বিশ্লেষন|| প্রসঙ্গ : মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংবেদনশীল ইস্যু। আলোচনা করা বিপদজ্জনক। তবুও বলি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মুল চেতনা কি ছিল ? পশ্চিম পাকিস্তানের সীমাহীন শোষন ,দু:শাসন ,দুই অংশের মধ্য আকাল পাতাল বৈষম্য ,অন্যায় অনাচার এর বিরুদ্ধেই তো জমে ওঠা অদম্য "মুক্তির চেতনা "র চুড়ান্ত বহি:প্রকাশই তো আমাদের রক্তক্ষয়ি নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধে যাঁরা গিয়েছিলেন তাঁরা কখনোই ভবিষ্যত লাভ ক্ষতির হিসেব এঁকে মুক্তিযুদ্ধ করেননি। কিন্তু দু:ক্ষের বিষয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অন্যতম দিক "বৈষম্যহীন " সমাজ তথা একটি রাষ্ট্র বিনির্মান ;সেই রাষ্ট্রেই আজ রাষ্ট্রিয় ভাবে বৈষম্যকে পেট্রনাইজ করা হচ্ছে কোটাপ্রথায়। যে দেশে সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধার রিকশার পেডেল মারা শরীর দিয়ে দরদরিয়ে পরা ঘামে রাজপথ সিক্ত,ঘরের বেড়া দিয়ে সকাল বিকাল শেয়াল বিড়াল দৌড়ায় ,কামলা খেটে সন্ধার পরে টাকা পাবার জন্য লাইনে দাঁড়াতে সেই ভুস্বামীর যে হয়ত সেদিন পাকবাহীনিকে খাসী পাকিয়ে মেহমানদারী করেছে,ব্যাংক লুটের অর্থ দিয়ে তেলতেলে ধর গড়েছে সেই দেশে কতিপয় সার্টিফিকেটধারী মুক্তিযোদ্ধা যারা হয়ত সেসময় শশুরবাড়ীর নিরাপদ দোচালা টিনের তলে আরামে কাঁথা মুড়েছে , মনে মনে হয়ত মুক্তিযুদ্ধকে এখনও "গন্ডগোল " বলে,(সবাই নয়,ব্যতিক্রম অনেক ,তবে এ সংখ্যা কম নয় ) তারা আজ মুক্তিযুদ্ধের রাষ্ট্রিয় ফয়দা হাসিলে অগ্রগামী। নয় মাস জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে স্বাধীন দেশের অভ্যুদয় ঘটাতে পারলে কোটাহীন স্বাধীন ব্যাবস্থায় যুদ্ধে নেমে কেন সেই গর্বিত পিতার সন্তানেরা ভাল ফলাফল করে রাষ্ট্রের গুরুত্বপুর্ন দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হতে পারবেনা ? আরেকটা ব্যাপার খেয়াল করবেন যে চাকুরী যদি কেউ কোটায় পেয়ে থাকে তাহলে "ওহ ও তো কোটায় চাকুরী/চান্স পাওয়া পাবলিক !" -বলে খোটা দেয়াটা নৈমত্তিক ঘটনা। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা কেন এই অপবাদ নিয়ে ঘুরবে? বীর সৈনিকের সন্তান বীরের মত লড়াইয়ে জিতবে ,পেছনের সুবিধা বা সমোঝোতায় কেন? রাষ্ট্র জাতীর এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের (মুক্তিযোদ্ধা )অন্য অনেকভাবে সম্মান ও অর্থনোতিক নিরাপত্তা প্রদান করতে পারেন। তবুও রাষ্ট্রের এই গুরুত্বপুর্ন অংশে মেধার কোন বিকল্প নেই,থাকতে পারেনা। দেশের মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড় করাতে এই অনৈতিক "কাপুরুষোচিত " কোটাপ্রথা কে চিরতরে যাদুঘরে প্রেরন এখন সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি। বি:দ্র =অন্যান্য কোটাগুলো নিয়েও বিস্তর বলা যায় কিন্তু আজ আর ধৈর্যে কুলোচ্ছে না। পরে কোন এক সময়। ধন্যবাদ । -Soaib Hossen
Posted on: Sat, 13 Jul 2013 08:19:12 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015