#Pranto নিউজফিডে ভর্তি - TopicsExpress



          

#Pranto নিউজফিডে ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্টের একেকটা প্রতিক্রিয়া দেখছি আর প্রচণ্ড ভয়ে কেঁপে উঠছি। চান্স পাওয়ার আনন্দের ভিতরেও কী গভীর হতাশা আর বিষাদ! প্রথমত, ২০১৪ সালের ব্যাচটার দিকে সবাই যেন ঘৃণা আর বিদ্বেষের তীর খাড়া করে রেখেছে। কারণ, এরা গণনকলের শিকার। যে দেশে ফেসবুকে কোনো সরকারি উচ্চপদস্থকে নিয়ে সামান্য কিছু লিখলেও পুলিশ হিঁড়হিঁড় করে টেনে জেলে পুরে দেয় সেই একই দেশে ফেসবুকে পাবলিকলি পেজ খুলে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সাপ্লাই করা হলে র্যাব-পুলিশ- গো য়েন্দাবাহিনী কিচ্ছুটি টের পায় না! না, এ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা যাবে না। করলে আপনি আমিও জেলে যাব। শুধু, ১৪ ব্যাচকে এজন্য কোনোমতেই দোষ দিতে রাজি নই আমি। আমার তো মনে হয় আমাদের ব্যাচ কি তারও আগের ব্যাচ এমন সুবর্ণ সুযোপ পেলে কেউ হাতছাড়া করতাম না। তাছাড়া, নকলের ইতিহাস বহু পুরোনো, সেই ইতিহাসের দায় আমরা এড়াতে পারি না। এটা তারই পরম্পরা মাত্র। এর দায় কার তা আমরা ভালোমতোই জানি। কিন্তু, তাদের দায়ী করার মতো ন্যূনতম স্বাধীনতাবোধ, গণতান্ত্রিক চর্চা অথবা মেরুদণ্ড আমাদের নাই। কিন্তু, বাচ্চাদের পাছা থাপড়ে ভয় দেখানোর উৎসাহ আমাদের আছে। তাই বড়রা নিজেদের প্রবৃত্তি ভুলে, নিজেদের অতীত ভুলে এইসব বাচ্চাদের ঘৃণা করার মতো অমানবিক আচরণ করতে পারছি। এবারে আসি কেন ভয়ে কেঁপে উঠছি সেই প্রসঙ্গে। দিন যত যাচ্ছে শিক্ষাজীবন নিয়ে আমাদের হতাশা, বিষাদ আর হয়রানি ততোই বাড়ছে। একটা দুঃখজনক উদাহরণ দেই। আমাদের কাছে স্কুল পড়ুয়া দুইজন ছেলে প্রায়ই আড্ডা দিতে আসে (অবশ্যই কোচিং পালিয়ে)। এদের একজন কখনোই পিঠ থেকে ব্যাগ খোলে না। তার নাকি পিঠ থেকে ব্যাগ নামিয়ে রাখার কথা মনেই থাকে না! খুবই ছোট্ট ঘটনা। কিন্তু, মর্মার্থ খুব ছোট নয়। বিকালে তাদের ন্যায্য অবসরটুকু কেড়ে নিচ্ছে কোচিং সেন্টার। ব্যস্ততা এতোই যে তারা কাঁধ থেকে ব্যাগ খুলতে সময়টুকু পায় না। আর ন্যায্য অধিকারটুকু পেতে দিতে হচ্ছে কোচিং ফাঁকি। এজন্য অপরাধবোধও কাজ করে। না হয় নিশ্চিন্ত অবসর, আড্ডা, না হয় লেখাপড়া। এমন অমানবিক ঘটনার শিকার আমরা প্রায় সবাই। অথচ, এটা যে অমানবিক এমনটাই কেউ মনে করে না! বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা আরও এক আতঙ্ক। এই আতঙ্কের সবচেয়ে বড় কারণ পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন, প্রেম ও বন্ধুত্বের প্রচলিত সম্পর্কগুলো। পরীক্ষায় কাঙ্খিত রেজাল্ট না হলেও পরিবার ও সামাজিক সম্পর্কগুলো কতোটা বৈরি হয়ে যায় তা আমরা সকলেই জানি। বাবা কথা বলে না, মা আদর করে না, আত্মীয়-স্বজন খোঁটা দেয়, প্রেম ছুটে যায় আরও কতো কি! দিন যত যাচ্ছে ততোই এগুলো বাড়ছে। বাড়ছে লাভ- ক্ষতির হিসাব নিকাষ, বাড়ছে ভবিষ্যত নিরাপত্তার হিসাব-নিকাষ। আর, তাই চান্স না পেলে এমনকি মনমতো বিষয়ে চান্স না পেলে পরিবারও একটা সময় ঘোষণা করে বসে - তোর পিছে এতো টাকা খরচ করে, এতো সুযোগ- সুবিধা দিয়ে লাভটা কি হয়েছে? যেন সন্তান হলো এক ধরণের ইনভেস্টমেন্ট। অবশ্য, লেখাপড়ার খরচ যে একপ্রকার ইনভেস্টমেনট তা অস্বীকার করারও উপায় নাই। কারণটা ঐ একই, বাজারের যুগে তুমি-আমি ও আমাদের সম্পর্কও একেকটা পণ্য, একেকটা পুঁজি। তাই পরীক্ষার্থীদের অথৈ সাগরে খড়কুটো ধরে বাঁচার কী প্রাণান্ত চেষ্টা! কোনো সুস্থ মানুষকে অসুস্থ বানিয়ে দিতে এইরকম এক শিক্ষাজীবনই যথেষ্ট।
Posted on: Sun, 21 Sep 2014 11:57:40 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015