Ragging !! its not a joke, its a - TopicsExpress



          

Ragging !! its not a joke, its a CRIME (সম্পূর্নটা পড়ার অনুরোধ করছি) গ্রামের আর দশটা ছেলের মতই অতি সহজ সরল প্রকৃ্তির ছেলে সুমন । দিনময় সারাটা গ্রাম টো টো করে ঘুরে বেড়ানো, বিকেল বেলা বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা আর হৈ-হুল্লোর করা, রাত হলেই মায়ের আঁচলের নিচে এসে ঘুমানোই ছিল তার দৈনন্দিন কার রুটিন । গ্রামের ছেলেগুলো সাধারনত একটু চঞ্চল ও ডানপিটে সভাবের হয় । সুমন ও এর ব্যতিক্রম হয়নি । দুষ্টমি, চাঞ্চল্যতা, হৈ-হুল্লোর সবকিছুতে এগিয়ে থাকলেও লেখাপড়ায় কিন্তু সে পিছিয়ে ছিলনা । সুমনের স্কুল এবং কলেজ লাইফটা কাটে তাদেরি গ্রামের স্কুল-কলেজে । এস,এস,সি ও এইচ,এস,সি তে ভালো রেজাল্ট করার সুবাদে ভর্তি যুদ্ধে টিকে যায় দেশের নামকরা এক ইউনিভার্সিটিতে । কেননা ছাত্র হিসেবেও সুমন ছিলো খুব ভাল, বুদ্ধিমান এবং সবার পছন্দের । ইউনিভার্সিটিতে টিকে যাওয়ায় সুমনের বাবা মা অনেকটা খুশি । খুশি এই ভেবে যে তাদের স্বপ্ন ছিলো ছেলে বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হবে, যা এখন সময়ের অপেক্ষা । মনে মনে সুমনও অনেকটা খুশি আর উৎফুল্ল ছিলো । কেননা এর আগে কখনো শহরে যাওয়া হয়নি । ইশ আর মাত্র কিছুদিন !! তারপর সে শহরের মানুষদের সাথে মিশবে, চলাফেরা করবে, তাদের সাথে বসবাস করবে ভাবতেই অজানা এক ভাললাগা অনুভব করে সুমন । দেখতে দেখতেই গ্রামে থাকার সময় ফুরিয়ে এলো সুমনের । সময় হলো সেই রোমাঞ্চকর পরিবেশে যাবার, সময় হলো শহরের ব্যস্ততায় ঘেরা আধুনিক পরিবেশে যাওয়ার । সবার কাছ থেকে দোআ এবং বিদায় নিয়ে রওনা দিলো তার নির্দিষ্ট গন্তব্যের উদ্দ্যেশে । ইউনিভার্সিটির হোস্টেলে সে কোন সিট পাইনাই । তাই পরিচিত একজনের সাহায্যে সে একটা মেসে উঠে । রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে অতি দ্রুত ঘুমিয়ে পড়লো সুমন । কেননা কাল অরিয়েন্টেশন ক্লাস সকাল সকাল ভার্সিটি যেতে হবে, আর এমনিতেও জার্নি সে করে এসেছে । সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে রৌনা হলো ভার্সিটির উদ্দ্যেশে । ভার্সিটির গেটে পা রাখতেই নিজেকে অতি সৌভাগ্যবান মনে করল সুমন । আজ থেকে সে দেশের নামকরা এক ইউনিভার্সিটির ছাত্র । গেট থেকে কিছুদুর এগিয়ে যেতেই সামনে একদল ছেলে মেয়েকে এক সাথে গল্প আর হাসি-ঠাট্টায় মগ্ন দেখলো । উৎসুখ দৃষ্টিতে সেদিকে একটু তাকিয়ে থাকলো সুমন । কেনইবা থাকবে না গ্রামেতো কখনোই এমন ভাবে কাওকেই দেখে নাই । হঠাৎ সেই দল থেকে একটা মেয়ে তাকে ডাক দিলো । - এই ছেলে শোন ! - জি আমাকে বলছেন ? - হুম তোমাকেই চান্দু, এদিকে আসো ! - জি বলুন - কোন ইয়ার ? - ফাস্ট ইয়ার ! সুমন সে দলটার কাছাকাছি যেয়ে কথাটা বলতে বাকি আর অমনি একটা মেয়ে ঠাস করে তার গালে চড় বসিয়ে দিলো । বলল ইউনিভার্সিটিতে পড়স আর বড় আপুদের দিকে কেমন করে তাকাতে হয় তা শিখস নাই !! বড় আপুদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় শিখস নাই !! নেক্সট টাইম যদি এমন দেখি একদম জুতা পেটা করবো । অনেকটা হতভম্ব হয়ে গালটা চেপে ধরে সরি বলে সেখান থেকে বিদায় নিলো সুমন আর ভাবলো আজব ব্যাপার কারো দিকে কি তাকানোও যাবেনা । তবে সে নিজেরই দোষ দিলো কেনইবা সে তাকাতে গেলো । কথাগুলো ভাবতে ভাবতে আর কোন দিকে না তাকিয়ে মাথা নিচু করে অরিয়েন্টেশন রুমে প্রবেশ করল । অরিয়েন্টেশন শেষ করে রুম থেকে বের হচ্ছে । বারান্দায় দারিয়ে থাকা একটা ছেলে হঠাতই পেছন থেকে তার কলার চেপে ধরে হ্যাচকা টান দেয় । কিছু না বুঝে দারিয়ে যায় সুমন । দারিয়ে যতক্ষনই কলার ছাড়াবার চেষ্টা করছে তার বিপরীতে ঠাস ঠাস শব্দে কিছু হাত রিদম তুলছে তার গালে । তার অপরাধ সে রুম থেকে বের হওয়ার সময় এক বড় ভাইয়ের পায়ে পা লাগছে । ভীরের মাঝে লাগতেও পারে ভেবে সরি বলে সেখান থেকে চলে এলো । কিন্তু সুমনের ঠিক মনে আছে তার পা তো কারো সাথেই লাগেনি একমাত্র ফ্লোর ছাড়া । অগত্যা মাইর খাইলো সে । মেসে এসে আজ শুয়ে শুয়ে সারাদিনের কথাগুলো মনে মনে ভাবলো সুমন । সে তো কোন অপরাধই করে নাই কিন্তু তার পরেও তাকে মাইর খাইতে হইল । ভাবলো বড়রাইতো মারছে, বড়রা ছোটদের একটু আকটু শাসন করতেই পারে । পরদিন ঘুম থেকে উঠে আয়নার সামনে গিয়ে গালের দিকটা ভালো করে দেখলো । নাহ কোন দাগ নাই, তবে একটু লাল লাল ভাব রয়েই গেছে । ফ্রেশ হয়ে ভার্সিটিতে গেলো । না আজ গেটের সামনে কোন থাপ্পর খেতে হয়নি । কেননা সে আজ কোন দিকেই তাকায়নি । মোটামুটি নিচের দিকে তাকিয়ে চলছে ক্লাস রুমের দিকে । কিছু ছেলেকে পাশ কাটিয়ে ক্লাসে ঢুকলো সুমন । দুইটা প্রিয়িড শেষ করার পর তৃতীয় প্রিয়ডের সময় একটা মোটাসুটা ছেলে এসে ল্যাবে ডেকে নিয়ে যায় সুমনকে । ল্যবে গিয়েই দেখতে পায় আরো অনেক গুলো ছেলে বসে আছে তারি অপেক্ষায় । সুমন কে নিয়ে ঢোকা মাত্রই একটা ছেলে গালে ঠাস করে চড় দিয়ে বলল হ্যা এই শালায় ছিলো । ল্যাবে এসে জানতে পারে ক্লাসে ঢোকার আগ মুহূর্তে যে ছেলেগুলোকে সে পাস করেছে তারা তার সিনিয়ার, কিন্তু সে তাদের সালাম দেয়নি । এইটাই তার অপরাধ । সুমন বলল ভাইয়া তারাহুরা করে ঢোকার সময় খেয়াল করিনাই, সরি ভাই আর ভুল হবে না । তখন সিনিয়ারদের একজন বলল প্রথম দিন থেকেই লক্ষ্য করছি এই ভীষন বেয়াদব, একে এমনি এমনি ছেড়ে দেওয়া যাবেনা, হারামজাদাকে এমন কিছু কর যাতে আর কোন দিন এইরকম ভুল আর না করে । ভাই আমার ভুল হইয়া গেছে মাফ মইরা দেন । মাফ হুম !! তুই জুতা ছাড়া, সেন্ডো গেঞ্জি গায়ে দিয়ে আমাদের এই ক্যাম্পাস মাঠটা দশবার রাউন্ড দিবি, তাইলেই তর মাফ । কি আর করার কথা বাড়াইলে আরো মার খাওয়ার চান্স আছে ভেবে দুপুরের কড়া রোদে নির্দেশনা অনুযায়ী দৌড়াতে লাগলো । মাঠে সুমনকে এভাবে দৌড়াতে দেখে চারিদিকে দাড়িয়ে থাকা ছাত্র- ছাত্রীরা বিনোদনের মাধ্যম পেয়ে স্ব- হাস্যে হাসতে লাগলো । যা দৌড়ানোর কষ্টের চেয়ে অতিকষ্ট আকারে দংশিত হচ্ছিলো সুমনের অন্তরে । সেদিনের মত ছাড়া পেয়ে মেসে এসে অসুস্থ হয়ে পরে সুমন । মোটামুটি ভাবেই অসুস্থ হয় সে । যার কারনে কয়েকদিন ভার্সিটিতে যেতে পারেনি । সুস্থ হয়ে ভার্সিটিতে যাওয়া কন্টিনিউ করার পর এই ভাবে প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন ভাবে নতুন নতুন সমস্যায় পরে অত্যাচারিত হত বড় আপু বা ভাই নামক কিছু মানুষদের কাছে । ঠাট্টা বা হাসির পাত্র বানিয়ে মজা নিত সুমনের কাছ থেকে । সিনিয়াররা ভয় দেখাতো কারো কাছে বিচার দিলে একদম হাওয়া করে দেবে । তাই সবকিছু সে নিরবে সহ্যই করে যেতো । কারনে অকারনে কান ধরে উঠা-বসা,,, বড়দের চিরকুট নিয়ে গিয়ে মেয়েদের কছে চড় খাওয়া,,, কেন্টিনে বড়দের খাওয়ার বিল পরিশোধ করা,,, সিনিয়ারদের নির্দেশে লেডিস টয়লেটে গিয়ে অপমানিত হওয়া,,, ওদের কথায় মেয়েদের হাত ধরে অন্যদের হাতে মার খাওয়া,,, সিনিয়ারদের জুতা পরিষ্কার করে দেওয়া এগুলা প্রায় নিত্যদিনের কাজ হয়ে গিয়েছিলো সুমনের জন্যে । সুমন এই সবের কথা কাউকে বলতেও পাড়ছেনা, আবার সহ্যও করতে পারছেনা । কিন্তু এত সব কিছুর পরেও ওখান থেকে চলে যায়না সুমন । কেন যাবে !! তার এই একটু কষ্টের জন্যে তো তার বাবা- মার স্বপ্নকে এক নিমিশেই শেষ করে দিতে পারে না সে । যে স্বপ্ন অনেক দিন থেকে লালিতো হয়ে আসছে তাদের মনে । সুমনকে থাকতেই হবে, যত কষ্টই হোকনা কেন................................। এখন এই সিনিয়ার আপু এবং ভাইয়াদের প্রতি আমার কিছু প্রশ্নঃ * সুমনের মত সহজ সরল ছেলেরা আপনাদের কি এমন ক্ষতি করছে যার পরিনামে তাদের এই অত্যাচার সহ্য করতে হয় ?? * তারা ইন্সটিটিউটে নতুন বলে কি তাদের খেলার পুতুল বানিয়ে খেলতে হবে ?? * তারাতো আপনাদের ছোট ভাইয়ের মতো, তাহলে কেন তাদের প্রতি আপনাদের এরূপ ব্যবহার ?? * ছোটরা ভুল করতেই পারে, তাদের ভুলগুলো ধরিয়ে দিয়ে তাদের উত্তম মানুষ বানানো কি আপনাদের দায়িত্ব না ?? লেখাঃDhrubo Tara
Posted on: Fri, 23 Jan 2015 04:38:18 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015