অপ্রতিরোধ্য - TopicsExpress



          

অপ্রতিরোধ্য মহাবিপর্যয় শনিবার, ০৬ Jul ২০১৩, ০২:৪০ অপরাহ্ন আলমগীর মহিউদ্দিন শক্তিমানদের পরম আকর্ষণ আধিপত্যের দিকে। এর প্রধান কারণ আধিপত্য ক্ষমতাকে নিশ্চিত করে। আধিপত্যহীনতায় এটা হারানোর ভয় থাকে। ক্ষমতা শাসন-শোষণ-নিয়ন্ত্রণের প্রধান হাতিয়ার। এ জন্যই স্থানীয় ক্ষমতাবান, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের শক্তিমান বা বিশ্বমঞ্চের পরাশক্তি নানা আকারে আধিপত্যের চর্চা করছে। আর এই চর্চার রূপ ও পথ একই। শুধু আঙ্গিক ও আকার ভিন্ন। এবং আধিপত্যচর্চার বাহন হলো শক্তির ব্যবহার। স্থানীয়পর্যায়ে এটা অমার্জিত ও নগ্ন। রাষ্ট্রীয়পর্যায়ে কখনো স্থূল আবার কখনো ছদ্মাবরণে। আইনের আবরণে সে শক্তির ব্যবহার হচ্ছে। যখন শক্তিমানেরা আধিপত্য চর্চা ও ক্ষমতা ব্যবহারে নিশ্চিত হয়, তখন এরা ছদ্মাবরণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে না। আজকের ভাবনা মানবজাতি এই আধিপত্যবাদের কোনপর্যায়ে। সাধারণ মানুষ এর ফলশ্রুতির বোঝা কতখানি বইছে। বিশ্বের শক্তিমানেরা হলো বৃহৎ ও পরাশক্তি বলে পরিচিত জনগোষ্ঠীর শাসক ও তাদের অনুসারীরা। প্রযুক্তির কল্যাণে বিশ্ব অনেকখানি সীমিত হয়ে পড়েছে। ক্ষমতাবানেরা এই প্রযুক্তির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। এর মধ্য দিয়ে এরা আধিপত্যের নিত্যনতুন পদ্ধতির উদ্ভাবন ঘটিয়ে তাদের সম্পদ, ক্ষমতা ও সুবিধার নিশ্চিত করার পথ নির্মাণ করছে। ফলে সাধারণ মানুষ যন্ত্রণাকাতর এবং মানবজাতি এক মহাবিপর্যয়ের মুখোমুখি। এখন এর গতি অপ্রতিরোধ্য হতে চলেছে। তবে সাধারণ মানুষের এ বিপর্যয় সংঘটনে বিন্দুমাত্র অংশ নেই। এর মূল নট ও নটী বৃহৎ ও পরাশক্তি। এরা আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে প্রযুক্তির অনৈতিক ব্যবহার এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে, যার বিবর্তমান প্রভাবের ধাক্কা বিশ্ব ক্রমবর্ধমান হারে অনুভব করতে শুরু করেছে। খরা, বন্যা, আবহাওয়ার অস্থিরতা এর একাংশ। বৃহৎ ও পরাশক্তি একে অন্যকে নিজের আধিপত্যে আনতে অথবা তাদের প্রতিপক্ষের আধিপত্যের এলাকা সঙ্কুুচিত করার জন্য প্রযুক্তির অনৈতিক ব্যবহার শুরু করে এক শতাব্দী আগে। এর ভয়াবহ প্রভাব এখনই হয়তো মানবজাতির ওপর পরিপূর্ণভাবে পড়ছে না। তবে জন্তু ও গাছপালার ওপর এর প্রভাবের প্রকাশ পেয়েছে। প্রযুক্তির পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে অত্যন্ত গোপনে। তাই বিশ্বের জনগণের কাছে কর্মকাণ্ডটি ছিল এত দিন অস্পষ্ট। সম্প্রতি লন্ডনের অবজারভার পত্রিকা ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা বাহিনীর এক সমীক্ষা প্রকাশ করেছে। ৬০ পৃষ্ঠার সমীক্ষাটিতে ১৯৪০-১৯৭৯ সালের মধ্যে ব্রিটেনসহ নানা স্থানে ‘বায়োলজিক্যাল উয়েপনের’ (জীবনিধনের অস্ত্র) অন্তত ১০০টি পরীক্ষা চালায়। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, আবহাওয়া ও বায়ুকে ভর করে জীবাণুযুদ্ধের অবস্থা কেমন হতে পারে এ পরীক্ষার উদ্দেশ্য ছিল এটাই। সে দেশের প্রতিরক্ষা দফতর নিশ্চিত হতে চেয়েছেÑ যদি রাশিয়া জীবাণুযুদ্ধ চালায় তবে ব্রিটেনে তার অবস্থা কেমন হবে? অবশ্য দাবি করা হয়েছে, এসব পরীক্ষায় কোনো জীবাণুর ব্যবহার হয়নি। এর মাধ্যমে কোনো ক্ষতি হবে না। কিন্তু অবজারভারের এন্টনি বারনেট অতি সম্প্রতি লিখেছেন, যেসব জায়গায় এসব পরীক্ষা চালানো হয়েছিল সেখানে বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম হয়েছে। বারনেট এ জন্য অনুসন্ধান দাবি করেছেন। এ সমীক্ষার এক অংশে উল্লেখ করা হয়েছে, উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ড থেকে কর্নওয়াল পর্যন্ত দক্ষিণ ও পশ্চিম সমুদ্রতীর ঘেঁষে বিশাল জনগোষ্ঠীর ওপর জিঙ্ক ক্যাডমিয়াম সালফাইড ছড়িয়ে দেয়া হয়। সরকার দাবি করে, এ রাসায়নিকটি নিরাপদ। অথচ দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে ক্যাডমিয়ামের ক্ষতিকারক দিকের ব্যবহার হয়েছিল শত্রুপক্ষের ওপর। কারণ, এর ফলে ক্যান্সার সৃষ্টি হয়। আরো একটি ভয়ঙ্কর তথ্য এ সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়। টরকোয়া থেকে নিউ ফরেস্ট পর্যন্ত ১০ লাখ লোকের ওপর ই’কলি ও ব্যাসিলাস গ্লোবিগি ছড়ানো হয়। এ রাসায়নিক মারাত্মক অ্যানথ্রাক্সের মতো। এ পরীক্ষা ১৯৬১-৬৮ সালে চালানো হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সাথে। সমীক্ষায় রয়েছে জীবাণুযুদ্ধের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ইতিহাস। এ ইতিহাসের শুরু দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময়। তখন ৫০ লাখ অ্যানথ্র্রাক্স কেক তৈরি করা হয়েছিল জার্মানির ওপর ফেলার জন্য। অবশ্য এরপর অ্যানথ্রাক্সের ব্যবহার হয় স্কটিশ সমুদ্রতীরের গ্রইনার্ড দ্বীপে। তাই এ দ্বীপে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত জনবসতি সম্ভব হয়নি। এ পরীক্ষা ক্যারিবিয়ানেও করা হয়। ডেভিড ওরমন্ড বলেন, বর্নমুথের এক সামরিক অফিসার এর পাবলিক ইনকোয়ারি দাবি করেছেন। কারণ, এর ফলে তার স্ত্রী ও বহু মহিলার গর্ভস্রাব হয় এবং বহু বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম নেয়। তার স্ত্রীর জন্মও এই ডরসেট এলাকায়। ব্রিটিশ সাংবাদিক কলিন টডহান্টার দাবি করেছেন, বিশ্বের সব পরাশক্তি এবং কিছু বৃহৎ শক্তি যেমনÑ যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য প্রভৃতি এই ভয়াবহ প্রযুক্তির অধিকারী। এবং এরা বহু পরীক্ষা-নিরীক্ষা গোপনে করেছে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে। এসব স্থানের মানুষ এর কোনো খবরই রাখে না। টডহান্টার বলেছেন, ‘এসব কর্মকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য পূর্ণ আধিপত্য বিস্তার এবং তা অুণœ রাখার বিরামহীন কর্মপদ্ধতি।’ সংক্ষেপে এ কর্মকাণ্ড হলোÑ ১. ক্ষতিকারক বিষাক্ত পদার্থের প্রভাব নির্ণয় করা, ২. সূর্যের আলোর তীব্রতাকে নিয়ন্ত্রণ করে প্রতিপক্ষ দেশগুলোকে প্রভাব বলয়ে রাখা, ৩. প্রতিপক্ষের প্রজননের ক্ষমতা কেড়ে নেয়া, ৪. আবহাওয়াকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রেখে প্রতিপক্ষ দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করা, ৫. ইচ্ছেমতো বন্যা, ভূমিকম্প, খরা, মহামারী সৃষ্টি করা। যেমন আণবিক অস্ত্র নির্মাণ করে পরীক্ষা করা হয়েছিল সে অস্ত্রের কার্যকারিতা ও ক্ষমতা নির্ধারণের জন্য তেমনি এই নতুন বহুমুখী পরীক্ষাগুলো করা হয়েছে। এ অস্ত্রগুলোর ব্যবহার এবং ফলের খবর প্রতিপক্ষ জনগোষ্ঠী কখনোই জানতে পারে না। বরং কখনো কখনো অতি উৎসাহে এ নিধনকাজে অংশ নিচ্ছে। যেমনÑ আবহাওয়া পরিবর্তনের পরীক্ষা। জনগণ বৃষ্টি, ঝড় সুনামি প্রভৃতি প্রাকৃতিক অবস্থাকে মেনে নিতে চায় না। তাই এ কর্মকাণ্ডে তারা সোৎসাহে যোগদান করে থাকে। তবে যুদ্ধবাজেরা বরাবরই আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ ও তাকে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবহারের চেষ্টাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। এর এক পথিকৃত হলেন যুক্তরাষ্ট্রের গণিতবিদ জন ভন নিউম্যান। গত শতাব্দীর চল্লিশের দিকে তিনি গবেষণা করে প্রমাণ করেন আবহাওয়াকে সামরিক কাজে ব্যবহার করা সম্ভব। ১৯৬৭ সালে প্রজেক্ট পপিয়ার অধীনে ‘কাউড সিডিং’ (মেঘ বোনা) করে ভিয়েতনামে বর্ষাকালকে দীর্ঘায়িত করে ‘হো চিন মিন ট্রেইল’ (রাস্তা) ডুবিয়ে রাখা হয়েছিল, যেন শত্রুরা সে রাস্তা ব্যবহার না করতে পারে। বিখ্যাত লেখক ও গবেষক মাইকেল চসুদভস্কি লিখেছেন, মজার কথা জাতিসঙ্ঘের আবহাওয়ার পরিবর্তন সংক্রান্ত সংস্থা ইউএনসিসির নোবেল প্রাইজ পাওয়া সংস্থা আইপিসিসি (ইন্টারগভার্নমেন্টাল প্যানেল অন কাইমেট চেঞ্জ) এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে না। এখন যে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক পদ্ধতিতে আবহাওয়া পরিবর্তন এসব পরাশক্তি করতে পারে সে কথাটি এসব সংস্থা উচ্চারণও করে না। এরা শুধু কার্বন নিঃসরণ নিয়ে আলোচনা করছে। কারণ, শক্তিমানেরা এর বেশি বলতে দিতে চান না। অথচ পরাশক্তিগুলো গোপনে এবং নানা ছদ্মাবরণে এ কর্মকাণ্ড ও পরীক্ষা সারা বিশ্বে চালিয়ে যাচ্ছে। টডহান্টার, বারনেট (লন্ডন অবজারভারের), এফ উইলিয়াম এংগডাল (গ্লোবাল রিসার্চ), ডেভিড এডওয়ার্ডস (এপি), প্রকৃতিবিদ ডেন উইগিংটন এবং এনড্রোমিডার লেখক মাইকেল ক্রিচটন অন্তত চারটি ভয়াবহ পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথা উল্লেখ করেছেন। এর মাঝে হারপকে (হাইফ্রিকোয়েন্সি অ্যাক্টিভ অরোরাল রিসার্চ প্রোগ্রাম) বিখ্যাত স্টার ওয়ারের লেজুড় বলে বর্ণনা করেছেন চসুদভস্কি। এটা মহাশূন্য থেকে পরিচালনা করা হয়। ইউএস এয়ারফোর্সের এএফ ২০২৫ নম্বর রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘এই কর্মকাণ্ড একজন যোদ্ধাকে বিশাল ক্ষমতা দেয়। এর মাধ্যমে সে প্রতিপক্ষের এলাকায় বন্যা, হারিকেন, খরা ও ভূমিকম্পের সৃষ্টি করে তাকে বশ্যতায় আনতে পারবে সহজেই। এর জন্য তাকে যুদ্ধ ঘোষণা করতে হবে না, অথচ জয় তার হাতের মুঠোয়।’ আলাস্কার গোকোনা এর প্রধান কর্মকাণ্ডের স্থল। অধ্যাপক ফ্রান্সিক বয়েল বলেছেন, ২০০১-২০০৪ সালে পেন্টাগন এই জীবাণুযুদ্ধের সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা-কর্মকাণ্ডে ১৪.৫ বিলিয়ন (১৪৫ কোটি) ডলার খরচ করে। অধ্যাপক বয়েল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বায়োলজিকাল উইপনস অ্যান্টি-টেররিজম অ্যাক্ট ১৯৮৯-এর প্রণেতা। এ দিকে রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী রিচার্ড ইব্রাইট লিখেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তিন শতাধিক বিজ্ঞানী প্রতিষ্ঠান এবং ১২ হাজার ব্যক্তি এই জীবাণুযুদ্ধের অনুষঙ্গ (প্যাথোজেন) নিয়ন্ত্রণে সক্ষম। নরওয়ের স্থালবার্ড দ্বীপে নির্মিত হয়েছে এক বিশাল বীজাগার। গ্লোবাল রিসার্চের এংগডাল এর নাম দিয়েছেনÑ শেষ বিচারের দিনের বীজাগার (ডুমস ডে সিড ভল্ট)। এখানে বিশ্বের সব ধরনের বীজ (লাখ লাখ) সংরক্ষণ করা হচ্ছে। মজার কথা হচ্ছে, এই বিশাল লোকচুর অন্তরালের এই বীজাগারে অর্থায়ন করেছেন বিল গেটস, রকফেলার ফাউন্ডেশন, মনসানটো (বহুল নিন্দিত জিএমও প্রস্তুতকারক), সিনজেনটা ও নরওয়ে। এরা বিশ্বাস করে, যখন বিশ্বের দেশগুলোর প্রাকৃতিক বীজ শেষ হয়ে যাবে, তখন এই বীজাগারে থাকবে এসব বীজ এবং তা বিক্রি করার অধিকার তাদের থাকবে। বিভিন্ন লেখক প্রকাশ করেছেন, মনসানটো-সিনজেনটারা কেমনভাবে ‘গ্রিন রেভ্যুলেশনের’ নামে বীজের একক অধিকার গ্রহণ কাহিনী এবং যেসব দেশে এর কর্মকাণ্ড চালানো হয়েছে, সেখানে জমির উর্বরতা ও কার্যকারিতা রক্ষার জন্য এসব করপোরেশনের ওপর নির্ভরশীলতার কথা উল্লেখ করেছেন। এরা এটাও দেখিয়েছেন, বিশ্বসংস্থাগুলোকে কেমনভাবে এরা যথেচ্ছ ব্যবহার করে তাদের আধিপত্য বজায় রাখছেন। এখন দেখা যাচ্ছে, গ্রিন রেভ্যুলেশন আসলে রকফেলার পরিবারের মুনাফা লাভের একটি বুদ্ধিতাড়িত কর্মকাণ্ড। এর মাঝ দিয়ে হাইব্রিড বীজ উন্নয়নশীল দেশে চিরকালের জন্য চুকিয়ে দেয়া হয়। হেনরি কিসিঞ্জার একবার বলেছিলেন, ‘তুমি যদি তেল নিয়ন্ত্রণ করতে পারো, তাহলে একটি দেশকে সহজেই অধীনে আনতে পারবে। যদি খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারো তাহলে জনগোষ্ঠী তোমার দাস হবে।’ এর বাস্তবায়ন হচ্ছে নানা আঙ্গিকে। এপির সংবাদদাতা সেল্ট লুইস কম্যুনিটি কলেজের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপিকা লিজা মারটিনো টেলরের এক রিসার্চকে উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছেন এক রেডিও অ্যাক্টিভ বস্তু জিঙ্ক ক্যাডমিয়ামের সাথে সেন্ট লুইয়ে ছড়ানো হয়, এর প্রভাব পরীক্ষার জন্য। সেন্ট লুইকে নির্ধারণ করা হয়, কারণ এখানে কালো ও সংখ্যালঘুরা বাস করে এবং শহরটি নাকি রাশিয়ান কোনো শহরের সদৃশ। হিটলার আর্য-সমাজ গড়ার লক্ষ্যে সুপ্রজনন (ইউজেনিকস) পদ্ধতি চালু করেছিলেন। তারই পথ ধরে এসেছে প্রজননশাস্ত্র (জেনেটিকস)। মজার ব্যাপার, এ দুই পদ্ধতির অর্থ জোগানদাতা হলো রকফেলার ফাউন্ডেশন। এবং এ ফাউন্ডেশনই মলিকুলার বায়োলজি গবেষণা চালাচ্ছে। এর উদ্দেশ্য মানুষের গুণাবলির পরিবর্তন ইচ্ছামতো করা। অন্য কথায় হিটলারের ‘মাস্টার রেস’ নির্মাণের কর্মপন্থা থেমে নেই। আর এর সব গিনিপিগ হচ্ছে কালো-বাদামি মানুষগুলো। এ পরীক্ষাটি নাকি সফল হয়েছে। এবং এটা আধিপত্য বজায় রাখার জন্য বিশাল পদক্ষেপ। এবার বিলগেটস-রকফেলার-মনসানটোরা আফ্রিকার দিকে নজর দিয়েছেন। এ প্রজেক্টের নাম দিয়েছেন ‘আগ্রা’ (অ্যালায়েন্স ফর এ গ্রিন রেভ্যুলেশন ইন আফ্রিকা)। এর প্রধান হলেন কফি আনন। প্রথম গ্রিন রেভ্যুলেশনের একজন প্রধান কর্মী ছিলেন ড. নরম্যান বরলো। যাকে ‘গমের পিতা’ বলা হতো। হাইব্রিড উদ্ভাবনের জন্য তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেয়া হয়েছিল। এটা সত্যি, এসব পদ্ধতি দিয়ে খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে। এ উদ্ভাবন রকফেলার ও তার সহযোগীদের নিয়ন্ত্রিত সাতটি তেল কোম্পানি ও সার কোম্পানির ওপর ব্যবহারকারীদের পূর্ণ নির্ভরশীল করে ফেলেছে। যেমন ‘টারমিনেটর বীজ’। এটা আবিষ্কার করেছে মনসানটো-দুঁপো কোমিক্যাল। এ বীজ একবার মাত্র প্রজনন সক্ষম। অর্থাৎ কৃষককে এই উচ্চফলনশীল বীজ বারবার একই উৎস থেকে কিনতে হবে। এ দিকে ‘এপিসাইট’ বলে একটি ক্যালিফোর্নিয়ার কোম্পানি গম-মেইজ তৈরি করেছে, যা খেলে পুরুষেরা নপুংসক হয়ে যায়। আবার এমনিভাবে নিকারাগুয়া, মেক্সিকো, ফিলিপাইনসহ অনেক দেশে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার টিটেনাস টিকা যখন শুধু মহিলাদের দেয়া হয় তখন মেক্সিকোর এক রোমান ক্যাথলিক সংস্থা (কমিটে প্রো ভিডা দ্য মেক্সিকো) এর বিশ্লেষণ করে দেখে, এটা মহিলাদের প্রজনন ক্ষমতা কেড়ে নেয়। আরো অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই টিকা আবিষ্কারের পেছনে আছে ১৯৭২ সাল থেকে ২০ বছরের গবেষণার। এ গবেষণায় অর্থায়ন করেছে রকফেলার, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও নরওয়ে। গ্লোবাল রিসার্চের উইলিয়াম এংগডাল বলেছেন, পরিকল্পনা ও কর্মপন্থাগুলো যদি একত্রে চালু থাকে তবে এটা বলার কোনো অবকাশ থাকে না যে, এটাই মানবসমাজের জন্য মহাদুর্যোগ, যা ক্ষমতাবানেরা ক্ষমতা ও সম্পদের জন্য করতে গিয়ে এই গ্রহকে সর্বনাশের এক প্রান্তে এনে ফেলেছে। এখানে উত্তর মেরুর বরফ গলে যাওয়ার বৈজ্ঞানিক তথ্যের উল্লেখ করা যায়। ১৯৭৯ সাল থেকে বরফ এলাকা কমে যাচ্ছে পৃথিবী আরো বেশি উত্তপ্ত হয়ে ওঠার সাথে সাথে। এখন এটা সবচেয়ে ছোট হয়ে গেছে। অথচ এক শতাব্দীতেও এমনটি হওয়ার কথা ছিল না। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিটার ওয়াডহ্যাম বলেছেন, ২০১৫ সালে উত্তর মেরু বরফহীন গ্রীষ্ম হবে। অন্য কথায় তখন পৃথিবীর তাপ দ্বিগুণ হয়ে যাবে। এ কথা উল্লেখ করে নাসার জেমস হানসেন বলেছেন, ‘এখন আমরা গ্রহগত জরুরি অবস্থার মাঝে।’ এই দ্রুত উত্তাপ বেড়ে যাওয়ার একমাত্র কারণ আবহাওয়া নিয়ে গত অর্ধশতাব্দীর বৃহৎ ও পরাশক্তির পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং শূন্যে বিপুল পরিমাণ হেভি মেটাল ছড়ানো। জাতিসঙ্ঘের আইপিসিসি বলেছে, অবস্থার পরিবর্তন না হলে ২০৩০ সালে শুধু দূষিত আবহাওয়ার জন্য ১০ কোটি মানুষের মৃত্যু ঘটবে প্রতি বছর। যখন মেরুর বরফ গলছে, তখন উত্তর মেরুর তেল আহরণের কর্মযজ্ঞ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে বলেছে, উত্তর মেরুতে অন্তত ৯০ বিলিয়ন ব্যারেল অথবা বিশ্বের অনাবিষ্কৃত ১৩ শতাংশ তেল রয়েছে। যত বরফ গলছে, তেল আহরণের প্রক্রিয়াও তত দ্রুত হচ্ছে। এর পরিণতি ভয়াবহ হবে বলে বিজ্ঞানীরা বহু দিন ধরে বলে আসছেন। আসলে বিশ্বের এই মহাদুর্যোগের পথে অগ্রসর হওয়ার প্রথম সঙ্কেত দেন ডেন উইগিংটন। তিনি গোপন তথ্যগুলো ফাঁস করে দিলে পশ্চিমা বিশ্বে বিশাল নাড়া দেয়। তবে তখনই সরকারি বিজ্ঞানী ও সংবাদমাধ্যম এই তথ্যকে অসত্য বলে বিশাল প্রচারণা চালাতে থাকে। কিন্তু আবহাওয়ার খবর প্রতিকূলে আসতে থাকলে, সরকার ধাপে ধাপে ছোট আকারে তাদের অনিয়মের কথা প্রকাশ করতে থাকে। উইগিংটন বলেছেন, পশ্চিমা বিশ্বকে এখনই এই আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ, জীবাণুযুদ্ধ ও কৃষি পরিবর্তনের কর্মযজ্ঞ থেকে বিরত থাকতে হবে এবং প্রকৃতিকে সুস্থ হয়ে ফিরে আসার সুযোগ দিতে হবে। নতুবা মহাদুর্যোগ থেকে রেহাই যারা আধিপত্য নিয়ে আবিষ্ট, তারাও রক্ষা পাবে না, বিশ্বের মানুষ ত নয়ই।
Posted on: Sun, 07 Jul 2013 02:33:47 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015