অসুস্থ পুঁজিবাদী দানবের - TopicsExpress



          

অসুস্থ পুঁজিবাদী দানবের রোগোদ্মাদনা আমরা যারা ইসলামী জঙ্গীবাদের কর্মকাণ্ডে ভীষণ ক্ষুব্ধ তাদের ইসলামী জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের সাথে সাথে মনে রাখতে হবে গত একশ বছেরর পৃথিবীর ইতিহাসকে। সেটা আমরা যদি না করি, তা হলে আমরা মারাত্মক ভ্রান্তিতে জড়িয়ে পড়ব। কারা সোদি আরব-জর্ডন- ইসরাইল-পাকিস্তানের মত ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রকে গত প্রায় ষাট ভছর ধরে লালন করে করে আসছে? কারা আইসিস-আলকায়দাকে সৃষ্টি করেছে? কারা বাংলাদেশ-মিসর-ইরান—ইন্দোনেশিয়ায় গত শতাব্দীতে বামপন্থী -জাতীয়তাবাদীদেরকে ঠেকানর জন্য ইসলামী জঙ্গীবাদীদেরকে মদদ দিয়েছিল। গত প্রায় একশ বছরে তৃতীয় বিশ্বে, বিশেষ করে মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোতে তথাকথিত আলোকিত ঈউরোপ-যুক্ত্ররাষ্ট্রের চরম সবার্থপর দ্বিচারী নীতিকে হিসেবে নেই, মোসাদ্দেঘ-নাসের-সুকর্ণ-শেখ মুজিব-তাজুদ্দিন-তারাকি-অক্লান প্রমুখের প্রতি তাদের চরম শত্রুতামূলক ব্যবহারকে মনে রাখি, ইসরাইল-সৌদি আরব-জর্ডান প্রভৃতি চরম প্রতিক্রিয়াশীল রাষ্ট্রের প্রতি তাদের শর্তহীন আনুগত্যকে বিবেচনায় নেই, WARSAW ভেঙে দেওয়ার পরও NATO ঠিকিয়ে রাখার যৌক্তিকতাকে প্রশ্ন করি, প্রতিটি ধর্মের মত ইসলাম ধর্মের নানান ধরনের প্রবণতাকে খেয়াল রাখি – তা হলে কেবল মাত্র ধর্মে, বিশেষ করে ইসলাম ধর্মের মধ্যে জঙ্গীবাদের মূল বা একমাত্র কারণ অনুসন্ধান করতে যাব না। ১৯৪৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় বিভাগের এক নথিতে লেখা হচ্ছে, “বিশ্ব ইতিহাসের অন্যতম বৈষয়িক সম্পদ এবং রণনীতিগত প্রচণ্ড শক্তির উৎস।” (স্টক, ১৯৭৫)। ১৯৫০ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যান সৌদি রাজাকে লিখেছেন, “আপনার ক্ষমতার প্রতি কোনো চ্যালেঞ্জ আমাদের স্বার্থের প্রতি তাৎক্ষণিক হুমকি বলে বিবেচিত হবে।” (কার্টিস, ১৯৯৮)। ইসরাইলে সমগ্র পৃথিবীর জনগণের সহস্রাংশের বাস, মাথাপিছু আয়ে ষোলতম; অথচ ২০০০ সাল পর্যন্ত মার্কিন সাহায্যের ৪০ শতাংশ পেয়েছে সে। ১৯৯৯ সালে মধ্যপ্রাচ্য যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্যের ৫৪% পেয়েছে ইসরাইল। সম্প্রতি বাৎসরিক সাহায্য ৩.৫ বিলিয়ন ডলার ছড়িয়ে গেছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে--এক্ষেত্রে মার্কিন কংগ্রেসে কোনো দ্বিমত দেখা যায় না। ১৯৫১ সালে ইসরাইল যেখানে ০.১ মিলিয়ন ডলার মার্কিন সাহায্য পেয়েছে, সেখানে মিসরে নাসের ক্ষমতায় আসর পর ১৯৫২ সালে ঐ দেশে মার্কিন সাহায্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৬.৪ মিলিয়ন ডলার। (পাঠকগণ এই বৃদ্ধির কারণ অনুমান করুন)। নাসেরের সাম্রাজ্যবাদবিরোধী জাতীয়তাবাদী চেতনা ও জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনে নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়াই কী এর কারণ নয়। মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল পাঁচটি ‘CIA’ এবং প্রতিবছর একশ পঁচিশ বিলিয়ন ডলার খরচ হত এমন সেনাবাহিনীর কাজ সমাধা করছে’ (Benjamin Beit Hallahmi, ১৯৮৭)। ১৯৬৬ সালে সর্ববৃহৎ মুসলিম প্রধান দেশ ইন্দোনেশিয়ার জনপ্রিয় বাম-জাতীয়তাবাদী নেতা সুকর্ণকে, যিনি জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনেরও নেতা ছিলেন রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে ক্যুদেতার মাধ্যমে উৎখাত করা হল, দশ-সহস্রাধিক মানুষকে হত্যা করা হল। নেপথ্যের নায়ক হিসেবে দেখা গেল সাম্রাজ্যবাদকে।সাম্রাজ্যবাদের শত চেষ্টা সত্ত্বেও আমরা ১৯৭৫-এ সায়গন বিজয় পর্যন্ত সমগ্র বিশ্ব, বিশেষ করে, তৃতীয় বিশ্বে দেখি সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী ও বাম কমিউনিস্ট শক্তির শক্তিবৃদ্ধি-মহাকাশে স্পুটনিক গমন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোলে বিষফোঁড়া হিসেবে ১৯৫৯ সালে বিপ্লবী কিউবার আবির্ভাব, আফ্রিকায় নক্রুমা লুমুম্বা প্রমুখ সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী নেতার জয়রথ, ১৯৬৮-৬৯ বিশ্বব্যাপী বিপ্লবী ছাত্রান্দোলন, সাম্প্রদায়িক পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশের অভ্যুদয়, ১৯৬০ সালে OPEC গঠন এবং ১৯৭০-৭৪ সালে এর শক্তিবৃদ্ধি এবং ইন্দোচীনে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের পতন। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশে ঘটান হল হৃদয়বিদারক ঘটনা- সামরিক ক্যুদেতায় বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হলেন, জেল হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন তাজউদ্দিনসহ আমাদের সবাধীনতাযুদ্ধের চার নেতা। গত একশ বছর আগেই পুঁজিবাদ মানবিকতা হারিয়ে ফেলেছে। তার ফলেই জাতীয়তাবাদের মোড়কে ফ্যাসিজম সৃষ্টি হয়েছিল, ফ্যাসিজম মানব জাতিকে দুটো বিশ্বযুদ্ধ ঘটিয়েছে। তারপরেও আমরা পুঁজিবাদ উৎখাত করতে পারি নি। আজকে সে ধর্মের মোড়কে ফ্যাসিজম সৃষ্টি করছে===
Posted on: Thu, 08 Jan 2015 14:06:04 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015