আমরা সবাই ধর্ষক! - TopicsExpress



          

আমরা সবাই ধর্ষক! ---------------------- একজন ধর্ষক, কোন নারীকে কেবল অল্প কিছু সময়ের জন্য ধর্ষন করেন। কিন্তু আমরা তাকে ধর্ষন করি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। আপনি মানুন আর নাই মানুন!! একজন ধর্ষিতা বহু ভাবে জীবনভর ধর্ষন হতেই থাকেন। -প্রথম বার,কুকুর নামক পুরুষটির কাছে। -Two Finger Test নামক ডাক্তারী পরীক্ষার কাছে। -মামলা যখন আদালতে তোলা হয়। -মিডিয়া যখন বড় করে পাসপোর্ট সাইজ ফটো ও ঠিকানা ছাপিয়ে দেয় পেপারে। -সমাজে সন্মান সুচক স্থান না পেয়ে যখন পতিতালয়ে যেতে বাধ্য হয়। একজন নারী যখন ধর্ষিতার খেতাব লাভ করেন, তখন তার মানসিক অবস্থা কি হতে পারে, তা আপনার-আমার ধারনার বাহিরে। তারপর আসে আইনের অধিকারের কথা! আদালতে ন্যায় বিচারের আশায় যখন একজন ধর্ষিতাকে তার মুখ থেকে সবার সামনে ধর্ষনের বর্ননা নিজ মুখে দিতে হয়, তখন তা কতোটা সুখকর?? এ কি ধর্ষনের চেয়ে কোন অংশে কম? এর পর আসি টু ফিংগার টেস্ট এর কথায়।এতোদিন পর্যন্ত ধর্ষনের শিকার নারীর মেডিকেল পরীক্ষা করা হতো “টু ফিঙ্গার টেস্ট” নামক পরীক্ষার দ্বারা, যাতে ধর্ষনের শিকার নারীর যোনীপথে আঙ্গুল ঢুকিয়ে তার হাইমেনের অস্তিত্ব দেখা হতো।শিশু, বৃদ্বা থেকে শুরু করে সবাইকেই এই ভয়াবহ পরীক্ষার দিতে হতো। এরপর গত বছর, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ এর পুরুষ ডক্টর দ্বারা, ধর্ষীতাদের টেস্ট করানো নিয়ে যখন টু ফিংগার টেস্ট ধর্ষণ পরীক্ষা পদ্ধতির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে, তখন ব্লাস্ট, আসক, মহিলা পরিষদ, ব্র্যাক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, নারীপক্ষসহ দুই চিকিৎসক হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করে। এই চ্যালেঞ্জের ভিত্তিতে, সম্প্রতি উচ্চ আদালত ত্রুটিপুর্ন এই ধর্ষণ পরীক্ষা বাতিলের লক্ষ্যে নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ জারি করেছেন। সেই নির্দেশ বাস্তবায়ন হয়েছে কিনা, তা আমার জানা নেই। এবার আসি একজন ধর্ষীতার সামাজিক ও মানসিক অবস্থানে। একজন ধর্ষিতার সামাজিক অবস্থান কতটা নিরাপদ? মিডিয়া যখন ধর্ষিতার ছবি ও বায়োডাটা পেপারে ছাপিয়ে দেন, পৃথিবী তাক হয়ে তাকিয়ে থাকেন তার দিকে! আর সেই ভয়াবহ নোংড়া দৃস্টি ধর্ষিতার বেঁচে থাকা দুর্বিসহ করে তুলেন। মানুষটির রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়। পথে বেড়ুতে ভয় হয়। মনে হয় এই বুঝি কেউ তাকে অচ্যুত বলে তাড়া করছেন! ভালবাসা কিংবা স্বপ্নগুলো হয়ে উঠে দুঃস্বপ্ন! সমাজ তাকে অবহেলায় মুখ ফিড়িয়ে নেয়। স্কুল, কলেজ, কর্মসংস্থান..... সর্বত্র লোভী চোখ গুলো তাক হয়ে থাকে তাকে ভোগ করার জন্য। যেন ধর্ষিতা মানেই সস্তা খাদ্য। যার ইচ্ছা, সেই আংগুলের ডগায় নিয়ে চেটে দেখতে পারেন। সমাজে কজন পুরুষ আছেন, যে একজন ধর্ষিতাকে বিয়ে করতে চান? বুকে হাত দিয়ে সুপুরুষেরা বলুন দেখি!!! নেই....! কেউ নেই। অথচ যখন কোন ধর্ষিতা নারী, সমাজের অবহেলায়, জীবনের অনিশ্চয়তায়, অভিমান ও বুকের জ্বালায়, নিজেকে পতিতালয়ে নিয়ে ছেড়ে দেন, তখন আমাদের সুশীল সমাজের ভদ্রলকেরা তাকেই বেশ্যা বলে গালি দেন।। হায় রে পশুর দল! নির্লজ্জ্বের দল। যদি পারিস তাহলে কোন ধর্ষিতাকে ভালবেসে বুকে ঠাঁই দে। সমাজে বাস করার অধীকার দে। না পারলে, মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাক। জবান খুলার দু:সাহস করিস না পাষন্ড হায়ানার দল!!!! একজন নারী যখন ধর্ষন হয়, তার যে কি ভয়াবহ পরিমানে নানাবিধ মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে, সে কথা কজন ভাবে? আর মানসিক ভাবে অসুস্থ্য একজন মানুষ, ভালো মন্দ বিচার করে, সঠিক সিদ্বান্ত নিতে কখনোই পারেন না। আত্বহত্যার মত নির্মম ও জগন্য অপরাধ তখনি ঘটে। ধর্ষনের স্বীকার একজন নারীর মাঝে দেখা যায় এমন কিছু উল্লেখ্য যোগ্য সমস্যা হলো- পিটিএসডি (traumatic stress disorder (PTSD)), এংজাইটি এন্ড স্ট্রেস ডিসর্ডার (anxiety and stress disorder), ডিপ্রেশন (Depression), ফ্ল্যাশ ব্যাক (Flashbacks), বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার (Borderline personality disorder), স্লিপ ডিসর্ডার (Sleep disorder), ইটিং ডিসর্ডার ( Eating disorder), ডিসোশিয়েটিভ আইডেন্টিটি ডিসর্ডার (Dissociative identity disorder)! আসুন, একজন ধর্ষিতাকে, নরক যন্ত্রনায় ঠেলে না দিয়ে, তাকে ভালবাসা ও সহমর্মিতার মাঝে, অন্য ৪/১০ জনের মতই, আমাদের মা-বোনদের মতই সন্মান করি, তার বেঁচে থাকা দুর্বিসহ না করে, তাকে বেঁচে থাকার উপকরন দিয়ে সাহায্য করি। এমন না হয়, আজ আপনি তাকে ঘৃনাভরে দুরে ঠেলে দিলেন। কাল আপনার ৬ বছরের মেয়েটি ওই হায়ানাদের লোলুপ দৃস্টির স্বীকার হলো। Anything can happen as long as BASTARDS are there....... :)
Posted on: Thu, 27 Nov 2014 01:21:22 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015