ইবলিস পদকপ্রাপ্ত - TopicsExpress



          

ইবলিস পদকপ্রাপ্ত তারেকের ভয়াবহ মিথ্যাচারের জবাব পর্ব ১৬ঃ পুরাটা পড়ুন প্লিজ। বংগবন্ধুই স্বাধীনতার ঘোষনা দেন এবং পাকিদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন।১৯৭২ সালের মহান বিজয় দিবসে দৈনিক বাংলার বাণীতে জেনারেল ওসমানীর স্বনামে লেখা নিবন্ধটির শিরোনাম ছিল- বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে বঙ্গবীরেরা ইয়াহিয়ার বর্বর বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে। তাতে তিনি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন : বাংলাদেশ বাহিনী ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের স্বাধীনতালাভের মুহূর্ত পর্যন্ত বহু প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম করেছে। মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হওয়ার দুর্লভ সম্মানের উপযুক্ত না হলেও অত্যন্ত গৌরব ও আনন্দের সঙ্গে এই সুমহান দায়িত্বভার আমি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে গ্রহণ করেছিলাম।বঙ্গবন্ধুর গোপন সামরিক নির্দেশ মোতাবেক আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে গোপন সামরিক নির্দেশনা গোপন কোডের মাধ্যমে জানিয়ে দিই। যার ফলে পাকিস্তান আর্মি ২৫ মার্চ আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশব্যাপী আর্মি, বিডিআর, পুলিশ, আনসার এবং আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের দ্বারা গণপ্রতিরোধের মুখে পড়ে এবং সর্বত্র তারা মারা পড়তে থাকে। ওই বিষয়ে জেনারেল ওসমানী স্যারের সঙ্গে আমার কথা বলার সুযোগ হয় ১৯৭৪ সালে তাঁর সঙ্গে বুড়িগঙ্গায় এক নৌবিহারকালে। সেই সুযোগে আমি তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়ে নিই। তিনি তখন বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী ছিলেন। তিনি আমাকে ৭১-এর ঐতিহাসিক মার্চের স্মৃতি রোমন্থন করে বললেন : বঙ্গবন্ধু আমাকে ও জেনারেল আই আই মজিদকে (আসামের অধিবাসী, ৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারতে তিনি ব্রিটিশ আর্মিতে আইয়ুব খানের সিনিয়র ছিলেন) জেনারেল ইয়াহিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর সঙ্গে সঙ্গে তা প্রতিরোধের নির্দেশ দিয়ে রাখেন। বঙ্গবন্ধুর গোপন সামরিক নির্দেশ মোতাবেক আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে গোপন সামরিক নির্দেশনা গোপন কোডের মাধ্যমে জানিয়ে দিই। যার ফলে পাকিস্তান আর্মি ২৫ মার্চ আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশব্যাপী আর্মি, বিডিআর, পুলিশ, আনসার এবং আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের দ্বারা গণপ্রতিরোধের মুখে পড়ে এবং সর্বত্র তারা মারা পড়তে থাকে। তাঁকে আমি প্রশ্ন করেছিলাম যে প্রতিবেশী দেশের সাহায্য-সহযোগিতার বিষয়ে তিনি কি নিশ্চিত ছিলেন? উত্তরে তিনি বলেছিলেন, হ্যাঁ, আমরা সবাই নিশ্চিত ছিলাম। কারণ বঙ্গবন্ধু আমাদের যুদ্ধের জন্য সামরিক গোলাবারুদ ও আগ্নেয়াস্ত্রের বিষয়ে নিজের থেকে বলেছিলেন যে প্রতিবেশী কোনো একটি দেশের নেতার সঙ্গে তিনি এ বিষয়ে গোপনে চূড়ান্ত সমঝোতা করে রেখেছেন এবং বন্যার স্রোতের বেগে সামরিক ও বেসামরিক সহযোগিতা ও সমরাস্ত্রের সরবরাহ আমাদের হাতে চলে আসবে। তিনি আগরতলা মামলার কয়েকজন সামরিক অফিসারের উপস্থিতিতে আমাদের দুজনকে ২১ মার্চ রবিবার ধানমণ্ডির একটি বাড়িতে অনুষ্ঠিত গোপন মিটিংয়ে আশ্বস্ত করেছিলেন। যেখানে বঙ্গবন্ধু সুস্পষ্টভাবে বলেছিলেন, ৫৪,০০০ বর্গমাইলের সীমান্ত থেকে ঝড়ের বেগে সামরিক সাহায্য আসবে আর বন্যার বেগে সমরাস্ত্র তোমাদের হাতে চলে আসবে। বঙ্গবন্ধুর মুখ থেকে এ কথা শোনামাত্র আমরা সবাই হাঁফ ছেড়ে বাঁচি এবং বঙ্গবন্ধুকে দাঁড়িয়ে একযোগে অভিবাদন জানিয়ে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলে উঠি। যেখানে খন্দকার স্যার বলেছেন, যুদ্ধের নির্দেশ পাইনি, সেখানে তাঁর প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানী স্যার বলেছেন যে যুদ্ধের নির্দেশ পেয়েছেন। সামরিক নিয়মে জেনারেল ইয়াহিয়ার নির্দেশ পাবেন জেনারেল টিক্কা। টিক্কার নির্দেশ পাবেন অধস্তন কর্মকর্তারা। নির্দেশদানের স্তর আছে। ঠিক সেভাবে, বঙ্গবন্ধুর সামরিক নির্দেশ পেয়েছেন প্রধান সেনাপতি ওসমানী স্যার। তাঁর থেকে পাবেন তাঁর অধস্তনরা। বাঙালি জাতির অস্তিত্ব রক্ষার সেই চরমলগ্নে বাঙালি জাতির দূরদর্শী ও বিচক্ষণ কাণ্ডারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আসন্ন সামরিক অভিযান আঁচ করে অতি সংগোপনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শক্তির সমন্বয়ে প্রতিরোধের ও প্রতি-আক্রমণের সামরিক মহাপরিকল্পনা গড়ে তোলেন। তাঁর বিশ্বস্ততম সহচর ছয় দফার রচয়িতা ও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামি আমার মামা রুহুল কুদ্দুস সিএসপি এবং আওয়ামী লীগের দীর্ঘকালের কোষাধ্যক্ষ ও বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত সহচর বরিশালের জনাব নুরউদ্দিন আহমদকে (১৯৫৪ সালে গণপরিষদ সদস্য) সাতক্ষীরার ভোমরা বর্ডারসংলগ্ন মাহমুদপুর গ্রাম দিয়ে বিনা পাসপোর্টে ১৯৭১ সালের ৯ মার্চ মঙ্গলবার দিল্লি পাঠানো হয় (তাঁদের সঙ্গে খুলনার মহসীন সাহেব এমপিরও যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি সে সময় কালাজ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় যেতে পারেননি)। কথা ছিল, তাঁরা কলকাতা গিয়ে লন্ডনে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি শ্রী শশঙ্ক শংকর ব্যানার্জিকে টেলিফোন করে জানাবেন, বঙ্গবন্ধু তাঁদের পাঠিয়েছেন দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য। বঙ্গবন্ধুর পক্ষে শ্রীমতী গান্ধীর কাছে তাঁরা এই মর্মে অনুরোধ জানাবেন যে বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। এমতাবস্থায় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান যেকোনো মুহূর্তে বাঙালি জাতির ওপর পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে আক্রমণের নির্দেশ দিতে পারেন। নিরস্ত্র বাঙালি জাতি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সামরিক অভিযানের মুখে গণহত্যার শিকারে পরিণত হবে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সামরিক অভিযান প্রতিরোধের জন্য বাংলাদেশের জনগণকে ভারত সরকার সমরাস্ত্র দিয়ে ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সর্বাত্মকভাবে সাহায্য করতে সম্মত হতে হবে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় জেনারেল দ্য গলের নেতৃত্বে লন্ডনে যেভাবে ফ্রান্সের প্রবাসী সরকার গঠিত হয়, সেভাবে কলকাতায় বাংলাদেশের নির্বাচিত এমপিদের দ্বারা প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার গঠনের সব সুযোগ-সুবিধা ও আর্থিক সহায়তা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্মত হতে হবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং বাংলাদেশের ভূখণ্ডে গণহত্যার শিকার জনগণকে ভারতের মাটিতে আশ্রয় দিতে সম্মত হতে হবে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের মিত্রবাহিনীর মতো বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর পক্ষে যুদ্ধে অংশ নিতে সম্মত হতে হবে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে সর্বাত্মক ভূমিকা পালন করতে সম্মত হতে হবে। (বাংলা ও বাঙালির ইতিহাস, পৃষ্ঠা-২৭৮, বাংলা একাডেমি)। জনাব রুহুল কুদ্দুস সিএসপি ও নুরউদ্দিন আহমদ কলকাতায় ১১ মার্চ বৃহস্পতিবার পৌঁছে ধর্মতলার একটি হোটেলে ওঠেন। ওই হোটেল থেকে তিনি যথারীতি লন্ডনে ট্রাংকল বুক করে ভারতীয় দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি (১৯৬৯-৭২ পর্যন্ত লন্ডনে পদায়নরত) শ্রী শশঙ্ক শংকর ব্যানার্জির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। উল্লেখ্য, শ্রী ব্যানার্জি ১৯৬২-৬৬ সাল পর্যন্ত ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের সেকেন্ড সেক্রেটারি পদে চাকরি করাকালীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ইত্তেফাক সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার সঙ্গে বাঙালি জাতির মুক্তির লক্ষ্যে বহু মতবিনিময় করেন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গড়ে তোলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত রুহুল কুদ্দুস সাহেব যতবার লন্ডনে ভারতীয় দূতাবাসে ফোন করে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চান, ততবার তিনি শুনতে পাচ্ছেন না বলে টেলিফোন রেখে দেন। সেই মুহূর্তে রুহুল কুদ্দুস সাহেবের স্মরণে পড়ে যায় যে বঙ্গবন্ধু তাঁকে একটি code name- অর্থাৎ একটি সাংকেতিক নামে কথা বলতে বলেছিলেন। আগরতলা মামলা চলাকালে আইয়ুব খানের গোয়েন্দা বাহিনী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের code name দিয়েছিল পরশ। ভারতীয় ওই কর্মকর্তা বঙ্গবন্ধুর ওই code name সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু রুহুল কুদ্দুস সাহেবকে বলে দিয়েছিলেন যে লন্ডনে ভারতীয় দূতাবাসের শ্রী শশঙ্ক শংকর ব্যানার্জির সঙ্গে তুমি পরশমণি বলে কথা বলবে। রুহুল কুদ্দুস সাহেব চিৎকার করে বললেন, Parashmoni speaking... ... ...? সঙ্গে সঙ্গে চিচিং ফাঁক-এর মতো খুলে গেল সব দরজা। কথা হলো তাঁদের মধ্যে। তিনি জানালেন, পরদিন যেন তিনি তাঁকে আবার লন্ডনে ফোন করেন। ১৩ মার্চ শনিবার রাত ৮টায় রুহুল কুদ্দুস সাহেব লন্ডনে তাঁকে আবার ফোন করেন। তিনি তাঁকে তৎক্ষণাৎ জানান যে তাঁরা দুজন ওই রাতেই ট্রেনে যেন দিল্লি রওনা হয়ে যান। ১৪ মার্চ রবিবার দিল্লি পৌঁছে তাঁকে ফোন করলে তিনি পরবর্তী করণীয় জানাবেন। ১৪ মার্চ সকালে নুরউদ্দিন আহমদ ও রুহুল কুদ্দুস সাহেব দিল্লি পৌঁছে রাত ১০টায় লন্ডনে শ্রী শশঙ্ক শংকর ব্যানার্জিকে ফোনে পেয়ে যান। তিনি তাঁকে জানান, শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী খুব ব্যস্ত বলে তাঁর সঙ্গে তাঁদের দেখা হবে না। তবে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, তাঁরা যেন তাঁর পরিকল্পনামন্ত্রী বাঙালি শ্রী ডি পি ধরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি শ্রী ধরের ফোন নম্বর রুহুল কুদ্দুস সাহেবকে দিয়ে বলেন, তাঁকে ফোন করা মাত্র তিনি তাঁর স্টাফ পাঠিয়ে তাঁদের তাঁর অফিসে নিয়ে যাবেন এবং তাঁর সঙ্গে আলোচনা বৈঠকের ব্যবস্থা করবেন। ১৫ মার্চ সোমবার সকাল ১১টায় ভারতের পরিকল্পনামন্ত্রী শ্রী ডি পি ধরের পিএসের সঙ্গে জনাব রুহুল কুদ্দুসের কথা হয় এবং ওই দিন রাত ১০টায় তাঁদের শ্রী ধর তাঁর বাসায় নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানান। তাঁর বাসায় নৈশভোজের টেবিলে নুরউদ্দিন সাহেবকে খাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে শ্রী ধরবাবু রুহুল কুদ্দুস সাহেবকে পাশের অন্য একটি বড় কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে প্রবেশ করে প্রায় ২০/২২ জন ব্যক্তিকে তিনি বড় টেবিলের চারপাশে বসা দেখতে পান। শ্রী ধরবাবু তাঁদের সবাইকে ঢাকার অবস্থা, বাংলাদেশের অবস্থা এবং ঢাকার রাজনৈতিক ও সামরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে ব্রিফ করার অনুরোধ করেন। সব শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর কাছে বঙ্গবন্ধুর কী বার্তা তা পড়ে শোনাতে বলেন। পরিকল্পনামন্ত্রীর (বাঙালি) স্ত্রী ডি পি ধরের উপস্থিতিতে রুহুল কুদ্দুস সাহেব রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অর্থাৎ আড়াই ঘণ্টা পিন পতন নীরবতার মধ্যে তাঁদের ব্রিফ করেন এবং সব শেষে বঙ্গবন্ধুর বার্তা, যা তিনি সংকেতে লিখে নিয়ে গিয়েছিলেন, তা তাঁদের পড়ে শোনান। সেখানে উপস্থিত অন্য কারো সঙ্গে রুহুল কুদ্দুস সাহেবের কোনো পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়নি অথবা রুহুল কুদ্দস সাহেবের নামও তাঁদের বলা হয়নি। তবে সেখানে উপস্থিতদের মধ্যে সাউথ ব্লকের ঝানু ঝানু সচিব ও সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তারা ও জেনারেলরা সিভিল ড্রেসে ছিলেন বলে তিনি অনুমান করে নিয়েছিলেন। ব্রিফিং শেষে রুহুল কুদ্দুস সাহেব ও নুরউদ্দিন সাহেবকে সেই রাতে তাঁদের ডিফেন্স কলোনির একটি বাসায় রাখা হয়। ডিফেন্স কলোনির বাসায় ভোর সাড়ে ৬টায় একজন সেনা অফিসার এসে জনাব রুহুল কুদ্দুস সাহেবকে ডেকে তোলেন এবং এত ভোরে ঘুম থেকে তোলার জন্য আন্তরিকভাবে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে বলেন যে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সামরিক ভ্যানে একজন ভিআইপি অপেক্ষা করছেন। রুহুল কুদ্দুস সাহেব চোখেমুখে পানি ছিটিয়ে প্রায় ছুটে গেলেন। অফিসারটি তাঁকে সামরিক ভ্যান পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে সরে গেলেন। সেই ভ্যানে বঙ্গবন্ধুর দূত রুহুল কুদ্দুস সাহেবের সঙ্গে অতি ভোরে শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর বার্তা পৌঁছে দিতে আসেন তাঁর মুখ্য সচিব পি এন হাকসার (৭১ সালে যাঁর সঙ্গে প্রবাসী সরকারের মুখ্য সচিব হিসেবে কুদ্দুস সাহেবের নিয়মিত বৈঠক হয়েছে)। সামরিক ভ্যানের ভেতরে বসে বঙ্গবন্ধুর কাছে ইন্দিরা গান্ধীর অতি গোপনীয় সংক্ষিপ্ত ইংরেজি বার্তাটি দিয়ে হ্যান্ডশেক করে Good luck to you বলে মি. পি এন হাকসার চলে যান। বঙ্গবন্ধুর কাছে শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর সংক্ষিপ্ত ইংরেজি এক বাক্যের বার্তাটি ছিল : We wish and assure doctors will take care of your health and that of your A. L. family. (বাংলা ও বাঙালির ইতিহাস, পৃ. ২৮০, বাংলা একাডেমি)। ওই দিন ১৬ মার্চ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় কলকাতাগামী একটি বিমানে তাঁদের নিজস্ব ব্যবস্থায় তুলে দেওয়া হয়। কলকাতার দমদম বিমানবন্দরে নামলে ভারতীয় বিশেষ সংস্থার দুই কর্মকর্তা তাঁদেরকে তাঁদের গাড়িতে করে ভোমরা বর্ডার পর্যন্ত পৌঁছে দেন। সেখান থেকে বিএসএফের বিশেষ সহায়তায় ভোমরা বর্ডার পার হয়ে সাতক্ষীরা হয়ে খুলনায় জনাব এম মহসীন সাহেবের (১৯৭৩ সালে নির্বাচিত এমপি) বাড়িতে এসে ওঠেন। পরদিন ১৭ মার্চ বুধবার সকাল পর্যন্ত নুরউদ্দিন সাহেবের শরীর খারাপ ছিল। সে জন্য খুলনা থেকে তাঁরা দুপুরে যাত্রা করে গাড়িতে ধীরে ধীরে ঢাকা অভিমুখে আসেন। রাত ১২টায় তাঁরা ঢাকা পৌঁছে সরাসরি ৩২ নম্বর গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বঙ্গবন্ধু তাঁদের দুজনকে পেয়েই জড়িয়ে ধরেন। তারপর তাঁদের দুজনকে নিয়ে ছাদে উঠে যান। ছাদের আলো-আঁধারিতে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু তাঁদের মুখ থেকে শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর বার্তাটি শোনেন। শোনার সঙ্গে সঙ্গে রুহুল কুদ্দুস সাহেবকে ডান বুকে ও নুরউদ্দিন সাহেবকে বাঁ বুকে জড়িয়ে ধরে আকাশের দিকে তাকিয়ে বঙ্গবন্ধু জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে বলে ওঠেন : আলহামদুলিল্লাহ। আলহামদুলিল্লাহ। আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহু আকবার। আল্লাহু আকবার। আল্লাহু আকবার। এরপর তিনি ছাদে পানি আনালেন এবং তিনটি জায়নামাজ আনালেন। তিনি নিজে ওজু করলেন ও তাঁদের দুজনকে ওজু করতে বললেন। তিনজন দুই রাকাত করে নফল নামাজ আদায় করলেন। (বাংলা ও বাঙালির ইতিহাস, চতুর্থ খণ্ড, দ্বিতীয় পর্ব, পৃষ্ঠা : ২৭৮-২৭১, বাংলা একাডেমি)। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সম্ভাব্য আক্রমণ প্রতিরোধের ও বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে সর্বাত্মক সাহায্যের বিষয় নিশ্চিত করেই বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ও তাঁদের গণহত্যা পরিকল্পনাকারী জেনারেলদের কঠিন-কঠোরভাবে মোকাবিলা করছিলেন। সে জন্য প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ও তাঁর মদ্যপ জেনারেলরা আলোচনাকালে বঙ্গবন্ধুর অনমনীয় দৃঢ়তা দেখে প্রায় মূর্ছা যাচ্ছিলেন। যে মুহূর্তে ২৫ মার্চের রাতে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালি জাতির ওপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে... সেই মুহূর্তে অর্থাৎ ২৬ মার্চ রাত ১টায় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। স্বাধীনতা ঘোষণার জন্য বঙ্গবন্ধু চারটি পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ করে রেখেছিলেন। যাতে একটি ব্যর্থ হলে আরেকটি বাস্তবায়িত হয়। কিন্তু সৌভাগ্যবশত তাঁর চারটি কার্যক্রমের সব কটি বাস্তবায়িত হয় ও সফল হয়। প্রথমত, পিলখানার ইপিআর অয়্যারলেস থেকে; দ্বিতীয়ত, মগবাজার অয়্যারলেস থেকে; তৃতীয়ত, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের দ্বারা বলধা গার্ডেনের গাছের চূড়ায় রেডিও ট্রান্সমিটার থেকে এবং চতুর্থত, চট্টগ্রামের বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা জহুর আহমদ চৌধুরীর মাধ্যমে চট্টগ্রাম পোর্টে অবস্থিত জাহাজের অয়্যারলেস থেকে তিনি তাঁর স্বাধীনতার বার্তা ২৫ মার্চ রাত ১টা থেকে অব্যাহতভাবে প্রচার করে দেন। (ওই, পৃষ্ঠা : ২৮১) ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার সত্যতা সম্পর্কে অভিমত দিয়েছেন, ১৯৭১ সালে গ্রেট ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন স্যার এডওয়ার্ড হিথ। তিনি ১৯ জুন, ১৯৭০ থেকে ৪ মার্চ, ১৯৭৪ পর্যন্ত গ্রেট ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি ১৯৯৬ সালের এপ্রিল মাসে আমার সঙ্গে এক বিরল সাক্ষাতে লিখিতভাবে এই মর্মে বিবৃতি দিয়েছেন যে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং স্বাধীন সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ নামে নতুন দেশের নাম ঘোষণা করেন। শেখ মুজিবের সেই ঐতিহাসিক স্বাধীনতা ঘোষণা সম্পর্কে স্যার এডওয়ার্ড হিথ ১৯৯৬ সালের এপ্রিল মাসে লিখিতভাবে তাঁর স্বাক্ষরসহ তাঁর বক্তব্য দিয়েছেন, আমার লেখা Bangladesh Wins Freedom বইতে তাঁর সাক্ষাৎকারসহ ছাপা হয়েছে (চিত্রসহ তাঁর স্বাক্ষরিত পত্র দ্রষ্টব্য)। ওই লিখিত দলিলে তিনি উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ ছিল একটি ন্যায়সংগত যুদ্ধ এবং গণতান্ত্রিক যুদ্ধ। বলধা গার্ডেনে স্থাপিত Low frequency radio transmitter-এর থেকে প্রচারিত বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা। ওই রেডিও থেকে প্রচারিত স্বাধীনতার ঘোষণা ঢাকাসহ ঢাকার আশপাশের ডিসি ও এসপিরাও ২৬ মার্চ রাতে শুনতে পেয়েছিলেন এবং স্বাধীনতাযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। সেই ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘকালীন ঘনিষ্ঠ ও পরীক্ষিত সহচর আলহাজ মোহাম্মদ গোলাম মোরশেদ এবং পিএসসির সাবেক পরিচালক জনাব তবিবুর রহমান। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে হাজী মোরশেদকে তিনি তাঁর অবৈতনিক সহকারী নিয়োগ করেছিলেন। ১৯৯০ সালের দৈনিক দেশ পত্রিকার স্বাধীনতা দিবস সংখ্যায় হাজী গোলাম মোরশেদ সাহেব এক স্মৃতিচারণা করে সেই ঐতিহাসিক ঘটনার ওপর আলোকপাত করে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তারের সময় ৩২ নম্বরের বাসভবনে বেগম মুজিব, রাসেল, গৃহপরিচারিকা বুড়ি, কাজের ছেলে রহমান ও আমি ছিলাম। শেখ হাসিনা, জামাল ও রেহানাকে অন্য কোনো বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু রাজারবাগ ও যশোর পুলিশ লাইনসের অস্ত্রশস্ত্র ডিস্ট্রিবিউট করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি ২৫ মার্চ রাতে বলধা গার্ডেন থেকে ওয়্যারলেসযোগে মেসেজ প্রেরণ করেন বলেও জনাব মোরশেদ উল্লেখ করেন। একাত্তরের পঁচিশ মার্চ রাতের স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সারা দিন খুব ব্যস্ত ছিলেন। সন্ধ্যার আগে তাঁর নির্দেশে আনসার বিভাগের ডিরেক্টর আওয়াল সাহেব ও আমি পুলিশের এসপি জনাব ই এ চৌধুরীর বাসায় গিয়ে তাঁকে জানালাম, রাজারবাগ পুলিশলাইনসের অস্ত্রশস্ত্র বণ্টন করে দেওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু বলেছেন। জনাব চৌধুরী জলবসন্তে তখন আক্রান্ত ছিলেন। অতঃপর ই এ চৌধুরীর বাসা থেকে বেরিয়ে ৩২ নম্বরে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে রিপোর্ট করলাম। এ সময় যশোর পুলিশ লাইনসের অস্ত্রশস্ত্র ডিস্ট্রিবিউট করে দেওয়ার জন্য আবার আমাকে বলা হলো। আমি নিজ বাসায় গিয়ে টেলিফোনে যশোরে মশিহুর রহমানকে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশের কথা জানালাম। বাসা থেকে আবার ৩২ নম্বর অভিমুখে রওনা হয়ে শাহবাগ মোড়ে গিয়ে দেখলাম ব্যারিকেড। তাই গাড়ি ঘুরিয়ে গ্রিন রোড হয়ে ধানমণ্ডি অভিমুখে চললাম। কলাবাগান পৌঁছে দেখি রাশেদ মোশাররফের নেতৃত্বে ব্যারিকেড। আমি কোনোমতে ৩২ নম্বর পৌঁছে রাস্তার পাশে গাড়ি রেখে ভেতরে ঢুকলাম। আমি বঙ্গবন্ধুর সামনে পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে তিনি বললেন, আমরা স্বাধীন হয়ে গেলাম। They are comming to take me or kill me. I have decided to stay. ১৯৮৮ সালে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত সার্ক রাষ্ট্রপ্রধানদের শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে বাংলাদেশের এক সাংবাদিক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে লাহোর, করাচি হয়ে আমি তখন ইসলামাবাদে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পাঞ্জাবের গভর্নর হিসেবে জেনারেল টিক্কা খানও ছিলেন। বাংলাদেশের গণহত্যার নায়ক জেনারেল টিক্কা খানকে চোখের সামনে দেখে অজান্তে চোখের পাতা ভারী হয়ে এলো। সাংবাদিক দলের অন্য সদস্য সাপ্তাহিক এখনই সময় পত্রিকার সাংবাদিক এবং আইন আদালতখ্যাত অ্যাডভোকেট রেজাউর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে টিক্কা খানের কাছে একটা ইন্টারভিউ চাইলাম। প্রস্তাব শুনে দুবার না, না করে শেষ পর্যন্ত রাজি হয়ে গেলেন। ৩১ ডিসেম্বর আমরা দুজনে সন্ধ্যায় তাঁর পাঞ্জাবের সরকারি গভর্নর হাউসের দোতলায় তাঁর সাক্ষাৎকার নিই। দীর্ঘ দুই ঘণ্টা ধরে আমাদের নেওয়া তাঁর ইন্টারভিউ থেকে এখানে প্রাসঙ্গিক কিছু অংশ তুলে ধরছি মাত্র। আমি ইংরেজিতে প্রশ্ন করছিলাম এবং তিনি উর্দুতে উত্তর দিচ্ছিলেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, ২৫ মার্চ রাতে কোনো গণহত্যা হয়নি। তখন আমি জানতে চাইলাম, তাহলে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে কেন গ্রেপ্তার করলেন? জবাবে তিনি উর্দুতে যা বলেন, তা হলো : আমার কো-অর্ডিনেশন অফিসার একটি থ্রি ব্যান্ড রেডিও এনে বলল- স্যার শুনুন, শেখ সাহেব স্বাধীনতা ঘোষণা করছেন। আমি নিজে রেডিওতে শেখ সাহেবকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে শুনলাম, কারণ শেখ সাহেবের কণ্ঠস্বর আমি ভালো করেই চিনতাম। যে ঘোষণা তখন দেশদ্রোহিতার শামিল ছিল। সে ক্ষেত্রে শেখ সাহেবকে গ্রেপ্তার করা ছাড়া আমার কোনো বিকল্প ছিল না। ওই সাক্ষাৎকার ইংরেজি ও বাংলায় দেশ-বিদেশের বহু পত্রপত্রিকায় ১৯৮৮ সাল থেকে বহুবার বহু বছর ধরে ছাপা হয়েছে। ১৯৯৫ সালে আমার লেখা মুক্তিযুদ্ধ হৃদয় মম এবং ২০০০ সালে Bangladesh Wins Freedom (বাংলা একাডেমি) এবং ২০০০ সালে বাংলায় বাংলাদেশ উইনস ফ্রিডম বইতে বিস্তারিত ছাপা হয়েছে। ২০০৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আমার ইংরেজি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এয়ার ভাইস মার্শাল খন্দকার স্যার প্রধান অতিথি ছিলেন। তখন তিনি আমার বইয়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বিশেষ করে স্বাধীনতা ঘোষণার ঐতিহাসিক ছবি ও দলিলগুলো যেভাবে আমি সংগ্রহ করেছি ও গ্রন্থিত করেছি, সেগুলোর জন্য তিনি আমার সর্বোচ্চ প্রশংসা করেন। খন্দকার স্যার লিখেছেন, এই যুদ্ধ শুরু হয়েছিল কোনো প্রকার রাজনৈতিক নির্দেশ ছাড়াই। যদি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে যুদ্ধ শুরু হতো, তাহলে এই যুদ্ধের ফলাফল ভিন্ন হতো। পরম বিনম্রচিত্তে খন্দকার স্যারের ভ্রান্তি নিরসনের জন্য উল্লেখ করা আবশ্যক যে বঙ্গবন্ধুর পূর্বাপর রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত সুগ্রথিত ও সুবিন্যস্ত, সুনির্দিষ্ট ও সুনিশ্চিত ছিল বলেই মাত্র ৯ মাসে বাংলাদেশ তার মনজিলে মকসুদে পৌঁছে যায় এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হয়।তদস্থলে বঙ্গবন্ধু যা দিয়ে গেছেন, সে জন্য তাঁর প্রতি ক্ষণে ক্ষণে লাখো কোটি শোকরানা আদায় করলেও কম করা হয়। সৌজন্যঃ মুসা সাদিক, সাবেক সচিব। সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৪। দৈনিক কালের কন্ঠ
Posted on: Mon, 29 Dec 2014 17:13:53 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015