ইসলাম, কোরআন ও বিজ্ঞান - TopicsExpress



          

ইসলাম, কোরআন ও বিজ্ঞান (লাইক ও শেয়ার করে পাশেই থাকুন) ইসলাম হলো একটি পূর্ণঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। মানব জীবনের এমন কোন দিক নেই যার কোন সমাধান ইসলামে নেই। মানব জীবনের প্রতিটি দিক সম্পর্কে তথ্যের প্রধাণ উৎস হচ্ছে ইসলাম। আর ইসলামের মূল ভিত্তি হচ্ছে পবিত্র কোরআন মজীদ এবং হযরত রসূল করিম (সঃ)-এর সুন্নাহ। বিশ্বব্রহ্মান্ডের প্রতিটি সৃষ্টিরাশির অনু-পরমানুতে খোদার অস্তিত্ব যে বিদ্যমান আছে, এ সত্যটি প্রচার করাই হচ্ছে ইসলামের মূল লক্ষ্য। সুতরাং যে মুহূর্তে এ বিশ্বব্রহ্মান্ড সৃষ্টি হয়েছে , সে মুহূর্ত থেকেই ইসলামের সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং ইসলাম শাশ্বত এবং চিরন্তন। ইসলাম কোন মানবগড়া মতবাদ নয়। উহা স্রষ্টা প্রদত্ত মতবাদ। এ মতবাদের কোন তুলনাই নেই। এ মতবাদের তুলনা এ মতবাদ নিজেই। সৃষ্টির আদি থেকেই ইসলাম এ ধরাধামে বিদ্যমান রয়েছে যার মূল কথা হচ্ছে মহান স্রষ্টার একত্ববাদ ঘোষণা। হযরত রসূলে করিম (সঃ)-এ মাধ্যমে ইসলামের বিকাশ ঘটেছে এবং এর পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন ঘটেছে। তাই হযরত রাসূলে করিম (সঃ) হচ্ছেন পরিপূর্ণ ইসলামের বাস্তবায়ক এবং মহান স্রষ্টা হচ্ছেন , ইসলামরূপ একমাত্র আদর্শ জীবন ব্যবস্থার উদ্ভাবক, প্রতিষ্ঠাতা এবং পরিপূর্ণতা দানকারী। মহান আল্লাহতালা তাই বলেন, “আলইয়াওমা আকমালতু লাকুম দিইনাকুম ওয়াতমামতু আলাইকুম নেমাতীই ওয়ারজীতু লাকুমুল ইসলামা দীনা”। অর্থাৎ “আমি আমি তোমাদের জন তোমাদের ধর্ম পরিপূর্ণ করলাম এবং তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান হিসেবে মনোনীত করে দিলাম”। (সুরা মায়েদা, ৫:৩) । ((সৌজন্যেঃ powerful-word.blogspot/ অনলাইনে ইসলামিক ভিডিও পেতে ভিজিট করুনঃ youtube/user/IslamicStorage)) যেহেতু ইসলাম একটি সামগ্রিক জীবন ব্যবস্থা, সেহেতু জীবন বা জ্ঞানের এমন কোন দিক নেই যে বিষয়ে ইসলামের মহাগ্রন্থ কুরআনুল করিম-এ আলোচিত হয়নি। কারণ ইসলামের মূল লক্ষ্য হল মানবের কল্যাণ সাধন এবং মানুষকে সকল প্রকার পাপাচার, অত্যাচার, অবিচার, অনাচার, লাঞ্ছনা ও শোষণ থেকে মুক্তি প্রদান। তাই মানব জীবনের কল্যাণ ও মুক্তির সাথে জড়িত প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে ইসলামে সুস্পষ্ট নীতিমালা ও দিক নির্দেশনা রয়েছে। এ ইসলামরূপ বৃক্ষের বিজ্ঞান একটি শাখা মাত্র। সুতরাং ইসলামের ব্যাপ্তি বিজ্ঞান থেকে অনেক বেশী ব্যাপক এবং গভীরতর। বিজ্ঞান অর্থ হচ্ছে বিশেষ জ্ঞান। আর একটু ব্যাখ্যা করলে বলা যায়, বিজ্ঞান হচ্ছে এমন একটি বিশেষ জ্ঞান যে জ্ঞান সুশৃঙ্খলভাবে প্রয়োগের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে উপনীত হওয়া যায়। অর্থাৎ “Science means systematizing things to reach a goal within a definite period of time.” এ বিশেষ জ্ঞান বা বিজ্ঞান খোদা প্রদ্ত্ত। মানুষ এর ব্যবহারকারী মাত্র। কতগুলো অনুমানের উপর ভিত্তি করে খোদা প্রদত্ত দ্রব্য বা বস্তু সম্পর্কে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর পর বৈজ্ঞানিক যে সিদ্ধান্ত বা ফলাফল লাভ করেন তা হচ্ছে গবেষণালব্ধ ফল বা আবিষ্কার এবং যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ ফল বা আবিষ্কার অর্জন করা হয় তা হচ্ছে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির মাধ্যমে অর্জিত ফলাফল চূড়ান্ত ব সর্বশেষ নয়। উদাহরণ স্বরূপ, মানুষ এ পর্যন্ত ১১টি গ্রহ আবিস্কার করেছে। এর অর্থ এ নয় যে, এ বিশ্বব্রহ্মান্ডের গ্রহের সংখ্যা মাত্র ১১টি। আরও গ্রহ থাকতে পারে যা এখনও মানুষের অজানা। তাই মানব কর্তৃক পরিচালিত বিজ্ঞানের ফলাফলে ভুলভ্রান্তি থাকটা অস্বাভাবিক নয়। তাই বিজ্ঞানের কোন ফলাফল বা উপসংহার আপাতঃ দৃষ্টিতে ইসলামের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ হলে এটা বলা ঠিক হবে না যে, বিজ্ঞান ইসলামের বিরোধী। আসল জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে বিজ্ঞানের কোন কোন ফলাফল ইসলামের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ মনে হয়। কিন্তু পরিপূর্ণ জ্ঞান দ্বারা পরিচালিত চূড়ান্ত ফলাফল কখনও ইসলামের বিরূদ্ধে যেতে পারে না। কারণ ইসলাম থেকে বিজ্ঞান এসেছে। ইসলাম খোদার সৃষ্টি এবং বিজ্ঞানলব্ধ ফলাফল মানুষের সৃষ্টি, যে মানুষকে সৃষ্টি করেছেন মহান আল্লাহতালা। খোদার সৃষ্টি এবং খোদা কর্তৃক সৃষ্ট মানুষের সৃষ্টি কোনদিন তুলনীয় হতে পারে না। মানুষের সৃষ্টিতে ভুলভ্রান্তি থাকা স্বাভাবিক। সত্যিকার অর্থে ইসলাম এবং বিজ্ঞান এক অপরের বিরোধী নয়, বরং ইসলামই হচ্ছে বিজ্ঞানের মূল শেকড় বা উৎস। ইসলামের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্বের সমগ্র মানব জাতির কল্যাণ এবং প্রকৃত বিজ্ঞানের লক্ষ্যও তাই। সুতরাং উভয়ের লক্ষ্য এক এবং অভিন্ন। পূর্বেই বলেছি ইসলামের পরিধি হচ্ছে ব্যাপক এবং বিজ্ঞানের পরিধি হচ্ছে সীমিত। এমন কতগুলো বিষয় আছে যেগুলোর ব্যাপারে বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা করার কোন ক্ষমতা নেই কিংবা বিজ্ঞানের নিয়ন্ত্রন করার ক্ষমতা নেই। উদাহরণ স্বরূপ, বিজ্ঞান মানুষের মৃত্যুকে ঠেকাতে পারে না, হয়তো কিছুটা বিলম্বিত করতে পারে। “কেন?” প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে আমরা এমন একটি পর্যায়ে পৌচাই যার পরে বিজ্ঞান আর কোন “কেন” প্রম্নের উত্তর দিতে সক্ষম হয় না। আবার এমন কতগুলো ঘটনা আছে যেগুলো বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে ঘটেছে বলে মনে হয় না, কিন্তু আসলে ঘটনাগুলো ঘটেছে। সুতরাং এমন একটি জগৎ আছে যে জগৎ বিজ্ঞানেরও আওতার বাইরে। কিন্তু এরূপ অজানা জগৎ কিংবা বিষয় সম্পর্কে ইসলামের মূল ভিত্তি কুরআনুল করিমকে বিশ্লেষণ করলে উত্তর মিলবে। এ প্রসঙ্গে আমি বিশ্বলোক সৃষ্টির বিষয়টি সম্পর্কে বিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্লেষণ করে ইসলামের যথার্থ শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার চেষ্টা করব। বিশ্বলোক সৃষ্টি সম্পর্কে তিনিটি ব্যাখ্যা বিজ্ঞান আমাদেরকে প্রদান করেছে। এ তিনটি ব্যাখ্যা যথাক্রমে “লাপ্লাসের নীহারিকাবাদ”, “জীনসের আকস্মিক নৈকট্যবাদ” এবং “কার্যকরণ মতবাদ” নামে পরিচিত। “লাপ্লাসের নীহারিকা মতবাদ” অনুযায়ী আজ থেকে ২লক্ষ কোটি বছর আগে সূক্ষ্ম বিন্দু ‘অনু’র একটি পূঞ্জীভূত মেঘমালা ছিল। এ মেঘমালায় একটা কম্পন সৃষ্টির ফলে মেঘমালা (উষ্ণ গ্যাসীয় বস্তুপুঞ্জ) ক্রমাশঃ সঙ্কুচিত হয় এবং ঘণীভূত হয়ে গ্রহ, নক্ষত্র, নীহারিকা (Nebula) ইত্যাদির সৃষ্টি হয়। এ নীহারিকা ক্রমশঃ পাক খেতে থাকে এবং ক্রমান্বয়ে ঘনপিন্ডে রূপান্তরিত হয় যাকে আমরা সূর্য বলি। সূর্যের চারপাশের অবস্থিত বস্তুপুঞ্জ ক্রমশঃ ঠান্ড হয়ে আকারে ছোট হয়ে আসে। ফলে এ সকল বস্তুপুঞ্জের পাক খাওয়ার গতি বেড়ে যায় এবং ক্রমাশঃ পৃথম হয়ে জমাট বাঁধতে থাকে। ফলশ্রুতিতে গ্রহ ও উপগ্রহের সৃষ্টি হয়। “জীনসের আকস্মিক নৈকট্যবাদ” অনুসারে একটি বিশাল নক্ষত্র সূর্যের নিকট দিয়ে ছুটে যাওয়ার সময় উহার আকর্ষণে সূর্যের বুক থেকে গ্যাসীয় বস্তুপুঞ্জ পটলের মত টুকরা টুকরা হয়ে যায় এবং এ টুকরাগুলো সূর্যের চারপাশে চাকার মত ঘুরতে ঘুরতে বিভিন্ন গ্রহ-উপগ্রহে পরিণত হয়। অনলাইনে ইসলামিক ভিডিও পেতে ভিজিট করুনঃ youtube/user/IslamicStorage “কার্য-কারণ” মতবাদ অনুযায়ী শীতল কনিকাপুঞ্জের নিরন্তর গতিশীলতার ফলে অসংখ্য ছোট-বড় পাকের সৃষ্টি হয়। অপেক্ষাকৃত বড় একটি বস্তুকণা ঘনীভূত হয়ে সূর্যের কেন্দ্রবস্তু সৃষ্টি হয়। এর চারপাশে বস্তুকণার সমন্বয়ে বিভিন্ন আকারের গ্রহ, কণিক, পিন্ড সৃষ্টি করে। ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন সংঘাত ও তেজষ্ক্রিয় বিকিরণের ফলে সূর্যতাপের সৃষ্টি হয় এবং সূর্যের প্রচন্ড তাপে পরবর্তীকালে ধুমকেতু, উল্কা প্রভৃতির সৃষ্টি হয় এবং সূর্যের প্রচন্ড তাপে পরবর্তিকালে ধুমকেতু, উল্কা প্রভৃতির সৃষ্টি হয় এবং বিশ্বলোকের উদ্ভব ঘটে। এ প্রক্রিয়ার প্রাথমিক স্তর হচ্ছে (Series Accident) এবং দ্বিতীয় স্তর হচ্ছে কার্যকারণ বিধি (Law of Causation)। প্রাথমিক স্তরে দুর্ঘটনাবশতঃ কম্পনের সৃষ্টি হয় এবং দ্বিতীয় স্তরে কার্যকারণ বিধি (অর্থাৎ প্রত্যেক কারণের ফলাফল আছে) অনুসারে স্বাভাবিক নিয়মে অন্যান্য বিবর্তন সংঘটিত হয়। এখন প্রশ্ন হল, বস্তুপুঞ্জ পাক খেতে খেতে জমে উঠলো কেন? ঘন পিন্ড হলে কেন? সূর্যের সাথে সৌরজগতের আকর্ষণে সৌরজগৎ সৃষ্টি না হয়ে অন্য কিছু সৃষ্টি হল না কেন? বিশাল নক্ষত্রটি সূর্যের দিকে ছুটে গেল না কেন? আকর্ষনে গ্যাসীয় বস্তুপুঞ্জ ছিটকে পড়ল এন? ধুমকেতু বা উল্কার সৃষ্টি না হয়ে অন্য কিছু সৃষ্টি হলনা কেন? নিয়মশৃঙ্খলা মাফিক চলছে কেন? বৈজ্ঞানিকেরা বলতে চান কারণের সাথেই ফলাফলের সৃষ্টি হয়েছে। এ ‘কারণ-ফলাফল’ (Law of Causation) এর দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই যান্ত্রিক দর্শন বা (mechanical philosophy)-এর সৃষ্টি হয়েছে যে দর্শন অনুযায়ী নিউটন, বাখ (Bach) এবং মাইকেল এঙ্গলো (Michael Anglo) –এর মত বৈজ্ঞানিকও একটি ‘সুক্ষ্ম মস্তিষ্ক মূদ্রণ যন্ত্র’ ছাড়া আর কিছুই নয়। কিন্তু বিজ্ঞানের আধুনিক আবিষ্কার এ ‘কার্য-কারণ’ তত্ত্ব পরিত্যঅগ করেছে এবং আপেক্ষিকতা তত্ত্বের (Theory Of Relativity) জন্ম দিয়েছে। ‘কার্য-কারণ’ তত্ত্ব দ্বারা মধ্যাকর্ষন বিধি ও আলোর বিধি এখন আর ব্যাখ্যা করা যাচ্ছে না। কারণ নিউটনের সামনে আপেলটি নীচে পড়ে গেলেও সবার সামনে ওভাবে কিন্তু আপেল গাছ থেকে আপেল সর্বদা পড়ে না। নিউটনের আগেও গাছ থেকে আপেল পড়ত, কিন্তু সেটা যে মধ্যাকর্ষন শক্তির ফল এটা কেউ বলেনি। সুতরাং উপরোক্ত সব ‘কেন’ যে আল্লাহতালার আদেশেই হয়েছে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই সাম্প্রতিককালে অযান্ত্রিক বাস্তবতা তত্ত্বের (Theory of non mechanical reality) উদ্ভব হয়েছে যাতে স্রষ্টার চুড়ান্ত ক্ষমতাকে স্বীকার করে নেয়া হয়েছে। খোদার অস্তিত্বকে দু’টো কারণে অবশ্যই স্বীকার করতে হবেঃ ১) আল্লাহ সব সৃষ্টি আশ্চর্যজনক এবং মানুষের সাধারণ জ্ঞানের বাইরে। আল্লাহর এ মহান ক্ষমতার জন্য তাঁর প্রতি অবশ্যই কৃতজ্ঞতা জানাতে হবে। ২) মানুষ সত্যি বড় অসহায় এবং সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী একমাত্র আল্লাহর কাছেই মিলবে চূড়ান্ত আশ্রয়। অনলাইনে ইসলামিক ভিডিও পেতে ভিজিট করুনঃ youtube/user/IslamicStorage
Posted on: Tue, 28 Oct 2014 17:09:59 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015