এই কান্ড ঘটে আমেরিকার এক - TopicsExpress



          

এই কান্ড ঘটে আমেরিকার এক ইউনিভার্সিটিতে I সেমিসটারের প্রথম দিন, introductory কোয়ান্টাম ফিজিক্স এর প্রথম ক্লাস I সুপ্রভাত, প্রফেসর বোস শুরু করলেন, আমি তোমাদের শেখাবো কোয়ান্টাম তত্ত্ব I এই বলে তিনি তাঁর গায়ের জামা কাপড় প্যান্ট সব খোলা শুরু করলেন, প্রায় দিগম্বর দশা I ছাত্রছাত্রীরা কিংকর্তব্যবিমূঢ় এই পাগল অধ্যাপকের কান্ড দেখে, কেউ কেউ দুহাতে ঢেকে ফেলেছে চোখ I প্রফেসর আবার কাপড় জামা পরে ফেললেন I জন্ম থেকে আজ পর্যন্ত তোমাদের পাঁচ ইন্দ্রিয় যা শিখিয়েছে তা সব ভুলে যেতে হবে, প্রফেসর শুরু করলেন তাঁর ভাষণ, কোয়ান্টাম জগতের দরজার পাশে ফেলে দাও তোমাদের এত দিনের সাধারণ জ্ঞান আর অভিজ্ঞতার পোশাক, ফিরে যাও জন্ম দিনের সাজে I এই কান্ডের পর কান্ডজ্ঞানহীন প্রফেসর বোসের চাকরি প্রায় যায় যায় I Common sense is nothing but prejudices deposited on your mind by the time you reach seventeen, এই বলে আইনস্টাইন কান্ডজ্ঞানের পিন্ডি চটকেছেন I ধরা যাক একটি শিশু কেবল হাঁটা শিখেছে, টলমল পদভরে সে চারদিকে ঘুরছে, টক্কর খাচ্ছে টেবিলের সাথে, দেওয়ালের সাথে, কিছুদিনের মধ্যে সে বুঝে গেল যে দেওয়ালের ভেদ করে ঘরের বাইরে যাওয়া অসম্ভব, তার কান্ডজ্ঞান জন্মালো I কিন্তু কোয়ান্টাম জগতে দেয়াল ভেদ করে বাইরে বেরিয়ে পড়া একটা স্বাভাবিক ঘটনা I কারার ওই লৌহ কপাট সহজেই লোপাট করা যায়, কোয়ান্টাম গর্তের ফুটো দিয়ে চলে আসা যায় বাইরে; দেয়াল ভেদ করে বাইরে আসাকে পদার্থবিদ্যায় বলে quantum tunneling I আমি মনের মত পাগল পেলাম না, তাইতো পাগল হলেম না, এমন দুঃখ ঘোচাতে ঢুকে পড়ুন কোয়ান্টাম জগতে, হরেক রকম পাগল আর পাগলামি দেখে চোখ সার্থক হবে I কোয়ান্টামের জগৎ হলো ইলেক্ট্রন, প্রোটন, নিউট্রন, অ্যাটম জাতীয় অতি ক্ষুদ্র অনু পরমানুদের জগৎ, তবে দৃশ্যমান জগতের সব কিছু তো অ্যাটম দিয়েই তৈরী; তাই কোনো কিছুই ঠিক কোয়ান্টাম জগতের বাইরে পড়ে না I ছোট ছোট অনু পরমানুদের জন্ম রহস্য বিজ্ঞানীদের বেশ ভালো ভাবেই জানা, তবে এরা সব কেমন করে জোড় বেঁধে আমাদের মতো জীবন সৃষ্টি করলো তা আজো অস্পষ্ট I সবচেয়ে অদ্ভুত মানুষের চেতনা (consciousness) I কেমন করে জড় পদার্থ থেকে চেতনার জন্ম হলো ? অনেকের ধারণা কোয়ান্টাম জগতের কাছে এর উত্তর মিলতে পারে I এখন টাকা আর সময় নিয়ে কোয়ান্টাম মুল্লুকের এক ভুতুড়ে আইনের সাথে পরিচয় করা যাক I আবার আমরা ফিরে আসি আমাদের গল্পের নায়ক ডালিম কুমারের কাছে I আশা করি মনে আছে পাতালপুরীর রাজকন্যার শাড়ি বিষয়ক জটিলতার কথা I এবার ডালিম কুমার গেছেন কোয়ান্টাম জগতের ব্যাঙ্কগুলি কেমন করে টাকা লেনদেন করে তা জানতে I সেখানেই দেখা হলো কোয়ান্টাম জগতের এক ভবঘুরে যুবক বাবলুর সাথে I পকেটে নেই কানা কড়ি, নেই কোনো সম্পতি বা ঠিকানা, তবু বাবলু টাকা ধার করতে গেছে ব্যাঙ্ক অফ কোয়ান্টামল্যান্ডে I সেই দেশে টাকাকে বলে এনার্জি (energy), যার পকেটে একটিও টাকা নাই, তাকে সেই দেশে বলা হয় ভৌতিক ব্যাক্তি; এদেরকে চোখে দেখা যায় না, তবে সবাই জানে এরা সর্বত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে I পদার্থবিদরা এদেরকে বলে virtual particles I কিছু টাকা হাতে আসলেই অদৃশ্য ভৌতিক ব্যাক্তিরা দৃশ্যমান হয়ে উঠে, তখন ওদের আচরণ হয় আর দশ জনের মতই, কোনো পার্থক্য থাকেনা I বাবলু, তোমার মতো নামঠিকানাহীন ভবঘুরের কাছে ব্যাঙ্ক টাকা ধার দিবে কোন ভরসায়, আর কতই বা হবে সুদের হার ? তুমি যদি টাকা নিয়ে স্রেফ ভেগে পড় ? কোয়ান্টাম ব্যাঙ্ক কোনো সুদ নেয় না, আর কোথায় বা পালাবে, কোয়ান্টাম জগতের আইন না মেনে উপায় নেই I তুমি কতো টাকা ধার করতে পারো এবং কোন মেয়াদে ? সেটা নির্ভর করছে কতো টাকা ধার করবে আর কতদিনের জন্য ধার করবে, এদের গুনফল হতে হবে ৩০; অংকের ভাষায় (টাকা ধারের পরিমান) x ( টাকা ধারের মেয়াদ) = ৩০ I যদি ১ টাকা ধার করো তবে শোধ দিতে হবে ৩০ দিনে, যদি ৩০ টাকা ধার করো তবে শোধ দিতে হবে ১ দিনে, আর যদি ১ লক্ষ টাকা ধার করো তবে টাকা শোধ সময় পাবে মাত্র ২৬ সেকেন্ড I ঠিক তাই; ডালিম কুমার অবাক হয়ে দেখলেন হরেক রকমের লেনদেন I কিছু অদৃশ্য লোক টাকা ধার নিয়ে স্বাভাবিক আকার ধারণ করলো আবার কেউ বা টাকা ফেরত দিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেল I যারা কম টাকা ধার করছে তারা টাকা নিয়ে বাইরে চলে যাচ্ছে আর যে লক্ষ টাকা ধার নিচ্ছে সে টাকা গুনে নিয়ে প্রায় সাথে সাথেই আবার টাকাটা ফেরত দিচ্ছে I শ্যাম রাখি না কুল রাখি, হলো রাধার আকুলতা, টাকা না সময়, হলো কোয়ান্টাম বাঙ্কের গ্রাহকদের উদ্বেগ I এ ধরনের সমস্যা হাইসেনবার্গের অনিশ্চয়েতা তত্ত্ব (Heisenbergs theory of uncertainty) বলে কোয়ান্টাম জগতে পরিচিত I এই তত্ত্ব মতে মানুষের জানার একটা সীমা নির্ধারণ করা আছ I একটি বস্তুর স্থান ও গতিবেগ বা এনার্জি ও সময় একই সাথে সঠিক ভাবে জানা সম্ভব নয় I একটা উত্তেজিত অ্যাটমের কথা ধরা যাক I অ্যাটমটি উত্তেজিত কারণ ও কিছু বাড়তি এনার্জি পেয়েছে I বাড়তি টাকা পেলে তা উড়িয়ে দেওয়ার জন্য একজন খরুচে মানুষের মন যেমন চঞ্চল হয়ে পড়ে, এই উত্তেজিত অ্যাটমটিও তার বাড়তি এনার্জি ছড়িযে দিতে চায় আলো জ্বালিয়ে I অনিশ্চয়তা তত্ত্ব অনুসারে এই অ্যাটমটিতে কতটা এনার্জি আছে, এবং কখন ও বাড়তি এনার্জি খরচ করে ফেলবে, এই দুটি খবর একসাথে সঠিক ভাবে জানা সম্ভব নয় I অংকের ভাষায় (এনার্জি মাপের অনিশ্চয়তা) x (সময় মাপের অনিশ্চয়তা) < প্লাঙ্ক ধ্রুবক (Plank constant) I কোয়ান্টাম বাঙ্কের লেনদেনের জন্য ৩০ ধ্রুবকটি আমার মনগড়া, কিন্তু প্লাঙ্ক ধ্রুবকটি প্রকিতি দত্ত্ব এবং এই বিশ্ব তৈরীর মূলে রয়েছে এরকম আরো কয়েকটি ধ্রুবক, ইশ্বরে বিশ্বাসী হলে বলতে পারেন এগুলি ইশ্বর দত্ত্ব, এই সব ধ্রুবতে সামান্যতম রদবদল হলে পৃথিবী, সূর্য, মানুষ, প্রজাপতি, কিছুই তৈরী হত না I youtu.be/PArfFSFrSpE
Posted on: Wed, 07 Jan 2015 17:31:03 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015