কোন ভার্সিটিতে সিএসই পড়ব - TopicsExpress



          

কোন ভার্সিটিতে সিএসই পড়ব ? সিএসই পড়ব, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিগুলোর মধ্যে কোনটা ভালো হবে এই প্রশ্ন আমার ইনবক্সে, বইয়ের ফেসবুক পেজে, বিভিন্ন গ্রুপে দেখতে দেখতে আমি হয়রান। উত্তরটা লিখে দেই এখানে। উত্তর পছন্দ হলে কেউ এই প্রশ্নটা করলে তাকে উত্তরটা দিয়ে দিবেন। লক্ষ রাখতে হবে, আমার বক্তব্য কেবল সিএসই বা অনুরূপ বিষয়ের জন্য প্রযোজ্য, আর এগুলো আমার ব্যক্তিগত মতামত। বাংলাদেশে কম্পিউটার সায়েন্স পড়ার দুইটা উদ্দেশ্য থাকতে পারে, এক কম্পিউটার বিজ্ঞানী হওয়া, দুই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়া। আরেকটা অবশ্য আছে, সার্টিফিকেট পাওয়া, তবে তারা আমার আলোচনার বিষয়বস্তু না। যারা কম্পিউটার বিজ্ঞানী হবে, তারা যেকোনো একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লেই হয়, কারণ আমাদের দেশের কোনো প্রাইভেট ভার্সিটিই বিদেশে খুব পরিচিত নয়। তাই এখানে কোনো অতিরিক্ত সুবিধা পাবে না। যেখান থেকেই পড়, জিপিএ ভালো থাকলে এবং জিআরই- টোফেলে ভালো স্কোর থাকলে তোমার সুযোগ থাকবে। এবার আসি যারা সফটওয়্যার তৈরির কাজ করতে চাও। ভালো সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরির সুযোগ অনেক (দেশে এবং বিদেশে) আর বেতনও ভালো। আমি যদ্দূর জানি, এই কারণেই পোলাপান সিএসই পড়তে চায়। ধরা যাক, বাংলাদেশে ৮০টা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি আছে, এবং সেগুলোর একটা ranking করা হলো। এখন সমান মেধার দুই বন্ধুর একজন ১ নম্বর ভার্সিটিতে পড়ল, আরেকজন পড়ল ৮০ নম্বর ভার্সিটিতে। ৮০ নম্বরেরটায় যে পড়বে, সে যদি ঠিকমতো প্রোগ্রামিং শেখে, চর্চা করে, সফটওয়্যার তৈরির কলাকৌশল সম্পর্কে খোঁজখবর রাখে, আর ১ নম্বর ভার্সিটিতে পড়ুয়া বন্ধু যদি কেবল গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায়, তাহলে ক্যারিয়ারের শুরুতে প্রথম জন, যে ৮০ নম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে, সে অনেক সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে। কারণ সফটওয়্যার প্রকৌশলবিদ্যায় ভালো করতে হলে কাজ জানা প্রয়োজন এবং পরিশ্রমীরাই এখানে ভালো করে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে খোঁজ নিতে গেলে প্রথমেই জানতে হবে, শিক্ষকরা কেমন। কথা হচ্ছে, কম্পিউটার সায়েন্স কিন্তু অন্য বিষয়ের মতো নয়, যে অমুক ভার্সিটিতে ভালো পড়ায়, তাই সেখানের শিক্ষার্থীরা ভালো। বেশিরভাগই নিজে নিজে শিখতে হয়, শিক্ষক কেবল অনুপ্রেরণা দেন। এখানে একজন তরুণ শিক্ষকও অনেক অনুপ্রেরণা দিতে পারেন, আবার পিএচইডি করা শিক্ষকও শিক্ষার্থীদের কাছে বিষয়বস্তু বোরিং করে তুলতে পারেন। তাই ডিগ্রীর দিকে না তাকিয়ে খোঁজ নিতে হবে, কোন ভার্সিটিতে এমন শিক্ষক বেশি যারা মনমানসিকতায় তরুন, শিক্ষার্থীদের সাথে বন্ধুর মতো ব্যবহার করেন – অনেকটা Dead Poets Society-এর মিস্টার কিটিংসের মতো। শিক্ষকরাই পারেন অন্যরকম একটি কালচার তৈরি করতে। এছাড়া যেসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে : খরচ : শুধু টিউশন ফি ছাড়াও ভার্সিটিতে আরো অনেক খরচ থাকে। তাই খুব ভালো করে খোঁজ নিতে হবে। যাতায়াত : বাসা থেকে দূরত্বের ব্যাপারটিও হিসাবে আনতে হবে। ভার্সিটিতে যাতায়াত করতে প্রতিদিন রাস্তার তিনঘণ্টা সময় ব্যায় করা কোনো সৃজনশীল ছাত্রের কাজ হতে পারে না। ব্যপারটি অস্বাস্থ্যকরও বটে। বন্ধু : তোমার ভালো বন্ধুরা কোথায় পড়বে, সেটাও একটা বিবেচ্য বিষয় হতে পারে। আর ভর্তি হওয়ার পরে ক্লাস শুরুর আগ পর্যন্ত যে সময়টা পাওয়া যায়, সেসময়ে একটা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ শিখে ফেললে সবচেয়ে ভালো হয়। তাহলে ক্লাস শুরু হলে কোনো চাপ পরে না, নইলে প্রোগ্রামিং নিয়ে হিমশিম খেতে হয়। আর এই বিষয়গুলো শিক্ষক ক্লাসে পড়ান আর নাই পড়ান, নিজে নিজে পড়ে বা বন্ধুদের সাহায্য নিয়ে আয়ত্বে আনতে হবে। এগুলো না শিখলে রেজাল্ট ভালো হলেও বিপদে পড়বে। স্ট্রাকচার্ড প্রোগ্রামিং, অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং, ডিসক্রিট ম্যাথমেটিকস, ডাটা স্ট্রাকচার, অ্যালগরিদম, ডাটাবেজ, কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স, ওয়েব প্রোগ্রামিং, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, সফটওয়্যার অ্যানালাইসিস ও ডিজাইন। মোটামুটি সব ভার্সিটিতেই এগুলো পড়ায়। এসব বিষয়ে ওস্তাদ হয়ে যেতে হবে। তোমাদের জীবন সুন্দর হোক, ভালো প্রোগ্রামার হও, পাশ করে ভালো চাকরি পাও, অনেক টেকাটুকা কামাও, এই দোয়া রইল
Posted on: Sun, 17 Aug 2014 05:23:49 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015