গতকাল গাজীপুরে - TopicsExpress



          

গতকাল গাজীপুরে কোনাবাড়িতে স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ এর একটা ফ্যাক্টরি পড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এই নিউজ টা মিডিয়া গুলো ঠিক মত প্রচার করেনি। কারন তাদের বোঝার ক্ষমতা নাই। এই ফ্যাক্টরিটা পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনাটা কত মারাত্মক একটা ঘটনা যা আমাদের পুরো গারমেন্ট ইন্ডাস্ট্রি এবং দেশ কে কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে । কিছু বছর আগে, আমি এই কোম্পানিতে সিনিয়র মারচেন্ডাইজিং ম্যানেজার চাকরি করার সময় এই ফ্যাক্টরিতে বিদেশি বায়ার নিয়ে বা অর্ডার এর এর প্রগ্রেস দেখতে কয় এক বার গিয়েছি। কোনাবাড়ির এই ফ্যাক্টরি টা বাংলাদেশের গারমেন্ট ইন্ডাস্ট্রির একটা গর্ব। এর একদিক থেকে আরে দিক দেখা যায় না। প্রতিটা ফ্লোর ৬০ হাজার বর্গফুট এবং মোট ৩ লাখ স্কয়ার ফুট। অনেক বায়ার এর টাস্কি লেগে যেত ফ্যাক্টরিটাতে গেলে। এইটা ছিল একটা কমপ্লায়েনট ফ্যাক্টরি। এই খানে, ওয়ার্কাররা অন্যে ফ্যক্টরি থেকে বেশি বেতন পেত এবং কোনাবাড়ির ফ্যাক্টরিতে শ্রমিক অসন্তোষ এর কথা ইতিপূর্বে কখনো আসেনি। স্ট্যান্ডার্ড এর মালিক বেশি বেতন দিত তার নিজের আগ্রহেই। কারন এই খানে জটিল কাজ গুলো হত। শ্রমিকরা ছিল দক্ষ এবং বায়ার কাটিং মেকিং এর চার্জ ও বেশি দিত । এই খানে ১৮০০০ লোক চাকরি করত একটা ফ্যাক্টরিতে। এই ১৮০০০ শ্রমিক গতকাল চাকরি হারিয়েছে। আমাদের আই হেট পলিটিক্স এবং চাকরি যারা করে তারা জি,কিউ(গার্মেন্টস কোয়ালিটি) - এই রকম চিন্তা করা শিল্প এবং উদ্যোক্তা বিমুখ মধ্যবিত্ত কে টার্গেট করা মিডিয়া বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রির এত বড় একটা ঘটনাকে ইগনর করে গ্যাছে বা প্রয়োজনীয় গুরুত্ব দেয় নি। এই ফ্যাক্টরিতে কাজ দিত, আমেরিকান ঈগল, গ্যাপ মার্ক্স অ্যান্ড স্পেন্সার এর মত বায়ার রে। তারা ইতি মধ্যে বলছে তারা নেক্সট সিজন এর কাজ দিবে কিনা চিন্তা করে দেখবে। কারন, এই কোম্পানি গুলোর কাছে স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ একটা আইকন। কোনাবাড়ির ফ্যাক্টরি একটা আদর্শ ফ্যাক্টরি। সেই খানে কাজ দিয়ে তারা যখন অর্ডার তুলতে পারবেনা, তাদের স্টোরে ঠিক টাইমে প্রডাক্ট উঠবে না - সে কেন শুধু শুধু বাংলাদেশে অর্ডার দিবে। পোশাক শ্রমিকদের উপর মালিক দের যে অন্যায় তার সমালোচনা আমরা যৌক্তিক ভাবেই করি। কিন্তু আমরা যে বলি, সবাই খারাপ না কেউ কেউ ভাল। স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ তাদের মধ্যে অগ্রগামী। স্ট্যান্ডার্ড এর মালিক এমডি মোশারফ সাহেব এর সাথে আমি চাকরি করেছি। আজ থেকে প্রায় ১০ বছর আগে তাকে দেখেছি। তখনই দেখেছিলাম ৬০ এর উপর বয়স । কিন্তু, উনার এনার্জি, ডিসিশন মেকিং , প্রজ্ঞা , পরিশ্রম করার ক্ষমতা, ফরসাইটেডনেস দেখে এমনিতেই রেস্পেক্ট চলে আসতো। সেই রকম একটা জিনিস। বাংলাদেশের পোশাক শিল্প টাকে তিলে তিলে সাধনা অধ্যবসায় দিয়ে যারা গড়েছেন তাদের মধ্যে ১০ জন এর মধ্যে উনি একজন হবেন। পেপারে পড়লাম উনি ফ্যাক্টরিতে গিয়ে আগুনে পোড়া বিল্ডিং দেখে অসুস্থ হয়ে হসপিটালে এডমিট হয়েছেন। বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প কে ধ্বসাতে একটা পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র করতে ভারত, পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ ইন্টারেস্ট আছে। তাদের অনেক দাসানুদাস বাংলাদেশে বসে আছে। বাংলাদেশের সব চেয়ে বড় ফ্যাক্টরি যা এশিয়ার অন্যতম একটা বড় ফ্যাক্টরি যেই খানে গ্যাপ, মার্ক্স এন স্পেন্সার বা আমেরিকান ঈগল এর মত বায়ার কাজ চলতে সেইটা এই ভাবে আক্রমণ করে পুড়িয়ে দেয়াতে একটা বিদেশি ষড়যন্ত্র আপনি কোন মতেই উড়িয়ে দিতে পারবেন না কারন এই ফ্যাক্টরিটা একটা কমপ্লায়েনট ফ্যাক্টরি। শ্রমিকদের বেতন হতে শুরু করে, সব দিকেই এই ফ্যাক্টরি ছিল একটা একটা আদর্শ। সত্যি বলতে কি মোশারফ সাহেব এর গায়ে ক্ষতি লাগবেনা। এই ফ্যাক্টরিতে যত ক্ষতি হবে, তার পসিব্লি ১০ গুন বেশি টাকা উনার আছে। কিন্তু , বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রির যে কি ক্ষতি হল, ১৮০০০ মানুষ এবং তাদের পরিবার এর কি যে ক্ষতি হোল তা মাপার নয়।
Posted on: Sat, 30 Nov 2013 16:59:40 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015