ঘাড় ব্যথার অন্যতম - TopicsExpress



          

ঘাড় ব্যথার অন্যতম প্রধান কারণ এবং এর চিকিৎসা ------------------------------------------------- ☞ ঘাড় ব্যাথার অন্যতম প্রধান কারণ ----------------------------------- ✬ সার্ভিক্যাল স্পন্ডাইলোসিস কিঃ ঘাড় ব্যাথার অন্যতম প্রধান কারণ হল সার্ভিকাল স্পনডাইলোসিস। ব্যাপার টা একটু খুলে বলি। মেরুদন্ডের ক্ষয় (degenerative condition) রোগ হল স্পন্ডাইলোসিস আর মেরুদন্ডের ঘাড়ের অংশের ক্ষয়ে যাওয়া হল সার্ভিকাল স্পনডাইলোসিস। আমাদের মেরুদন্ড হল হাড়, মাংশপেশী, গিঠ ইত্যাদি নিয়ে। কশেরুকা বা ভারটিব্রা গূলো একটার উপর আরেকটা ইন্টারভারটিব্রাল ডিস্ক এবং অনান্য গিঠ দিয়ে জুড়ে তৈরি হল মেরুদন্ড। দুটো হাড়ের মাঝখানের ডিস্ক, অনান্য গিঠ, লিগামেন্ট সব কিছুই বয়স বাড়ার সাথে সাথে ক্ষয় হতে থাকে। মেরুদন্ডের হাড় ঘিরে রাখে একটা নালি বা ক্যানাল, ( ভারটিব্রাল ক্যানাল) যার ভিতর দিয়ে মস্তিস্ক থেকে নেমে আসে স্পাইনাল কর্ড এবং তা থেকে গাছের শিকড়ের মত নার্ভ গূলো বেরিয়ে এসে ছড়িয়ে পড়ে সারা শরীরে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে মেরুদন্ডের হাড়ে পরিবর্তন হতে থাকে। ভারটিব্রা বা কশেরুকার মধ্যকার ডিস্কে পানি কমে গিয়ে ভঙ্গুর হয়, উচ্চতা কমে চিপ্টে যায় এবং তা অনেক সময় পিছনে সরে গিয়ে নার্ভের উপর চাপ দিয়ে ব্যাথার সৃষ্টি করে। যাকে বলে ডিস্ক প্রোলাপ্স। এই ডিস্ক এর উচ্চতা কমার সাথে সাথে তৈরী হয় ছোটো ছোটো হাড়ের টুকরো বা অস্টিওফাইট। যা এই টুকরো গুলোও নার্ভের উপর চাপ দিয়ে ব্যাথার সৃষ্টি করতে পারে। ✬ সার্ভিক্যাল স্পন্ডাইলোসিসের কারনঃ ☞ বয়সঃ বৃদ্ধ বয়সের রোগ এটি। স্পন্ডাইলোসিসের পরিবর্তন শুরু হয় ৪০ বৎসর বয়সের পর থেকে কোনো কোনো ক্ষেত্রে আগে থেকেও। আনুপাতিক হার পুরুষ বা মহিলা রোগীদের মধ্যে প্রায় সমান সমান। ☞ পেশাঃ- ঘাড় সামনে ঝুকিয়ে কাজ করতে হয় এমন সব পেশাতে রোগটি বেশী দেখা যায়। যেমন চেয়ার টেবিলে বসে কাজ, কমপিউটারে কাজ, টাইপ রাইটার ইত্যাদি। ঘাড়ের ঝাকুনি হয় এমন পেশা যেমন নর্তকী, সাইকেলে চলাচল করতে হয় এমন পেশা ইত্যাদি।। ঘাড়ে আঘাত এর ইতিহাস থাকে অনেক ক্ষেত্রে। ☞ উপসর্গঃ প্রধান উপসর্গ হল ঘাড়ে ব্যাথা আর চল্লিশোর্ধ বয়সে ঘাড়ে ব্যাথার প্রধান কারণ ও এটি। ঘাড়ের ব্যাথা অনেক সময় কাঁধ থেকে উপরের পিঠে, বুকে , মাথার পিছনে বা বাহু হয়ে হাত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। ঘাড়ের থেকে হাতে নেমে আসা নার্ভের উপর চাপ পড়লে পুরো হাতেই ব্যাথা হতে পারে। সার্ভিক্যাল স্পন্ডোলাইসিসের সবচেয়ে মারাত্মক দিক হল যখন স্পাইনাল কর্ডের উপর চাপ পড়ে। এটা থেকে চার হাত পায়ে দুর্বলতা, হাটতে অসুবিধা, প্রস্রাব- পায়খানা বন্ধ হয়ে যাওয়া, ব্যথা ইত্যাদি হতে পারে । এটি হল সার্ভিক্যাল স্পন্ডাইলোটিক মাইলোপ্যাথি (Crevical spondylotic myelopathy)। ঘাড় নাড়াতে গেলে ব্যাথা লাগে। একিউট ক্ষেত্রে ডাইনে, বায়ে ঘাড় ঘোরান মুস্কিল হয়। ঘাড়ে জ্যাম মেরে ধরে থাকে। ব্যাথার সাথে হতে পারে হাতে, বাহুতে ঝিন ঝি্ন, সির সির, অবশ ভাব, সূচ ফোটানোর অনুভুতি সাথে হাত দিয়ে কাজ করতে অসুবিধা। লক্ষনঃ ------- ঘাড় উপরের পিঠ এবং বাহুতে চাপ দিলে ব্যাথা অনূভুত হয়। ঘাড়ের স্বাভাবিক নড়াচড়া ব্যাহত হয়। ঘাড়ে ব্যথার লক্ষনসমূহঃ ১. বিনা কারণে হঠাৎ প্রস্রাব-পায়খানা বন্ধ হয়ে গেলে বা নিয়ন্ত্রণ করতে অসুবিধা। ২. হাত বা পায়ে অস্বাভাবিক দুর্বলতা ৩. জ্বর থাকে ৪. ওজন কমতে থাকে এবং ৫. ৬ সপ্তাহের বেশী ব্যাথা থাকে অনান্য নার্ভের সমস্যা যেমন, কথা বলতে অসুবিধা, মাথা ঘোরা, চোখে দেখতে অসুবিধা। রাতে ঘুমাতে অসুবিধা। পরীক্ষাঃ -------- সার্ভিকাল স্পনডাইলোসিস ডায়াগনোসিসের জন্য ঘাড়ের এক্স-রে প্রধান পরীক্ষা। ৩০ উর্ধ বয়সে শতকরা ৫ থেকে ১৫ ভাগ এবং ৭০ উর্ধ বয়সের ৭০ থেকে ১০০% ভাগ লোকের এক্স- রে তে স্পন্ডোলাইসিসের লক্ষন ধরা পড়ে । এক্স রে’র সাথে রোগীর লক্ষনের মিল কম। এক্স- রে তে স্পন্ডাইলোসিসের পরিবর্তন ধরা পড়লেও মাত্র ৫% লোক ঘাড় ব্যাথা তে ভোগেন অর্থাৎ অধিকাংশ লোকেরই ব্যাথা হয় না। অনেকের দেখা যায় এক্সরেতে ক্ষয় অনেক কিন্তু সেই তুলনায় ব্যথা কম আবার সামান্য ক্ষয়ে প্রচুর ব্যাথা হয়ে থাকে অনেকের। ☞ অন্যান্য পরীক্ষাঃ- রক্তের গ্লুকোজ, প্রস্রাবের রুটিন পরীক্ষা। ☞ বিশেষ পরীক্ষাঃ-ঘাড়ের এম আর আই (MRI), ইলেক্ট্রোমায়োগ্রাফি (Electromyography nerve conduction study)। চিকিৎসাঃ --------- ☞ ঔষধঃ- ব্যাথার ঔষধ (Analgesics), মাংশপেশী শিথিল করার ঔষধ (Muscle relaxants), দুশ্চিন্তা কমানোর ঔষধ (Anxiolytics)। ফিজিওথেরাপীঃ- ঘাড়ে টানা বা সার্ভিক্যাল ট্রাকশান (Cervical Traction), শর্ট ওয়েভ ডায়াথার্মি (Short Wave Diathermy), ম্যাসাজ (Massage), ☞ উপদেশঃ শক্ত সমান বিছানায় এক বালিশে চিৎ হয়ে ঘুমাবেন। ঘাড় যাতে বালিশ দিয়ে সাপোর্ট দেয় সে ব্যাপারে খেয়াল রাখবেন। প্রয়োজন মনে করলে বালিশ নিচে টেনে নামিয়ে নেবেন বা কম উচ্চতার বালিশ ব্যবহার করবেন। ঘাড় সামনে ঝুকিয়ে বেশিক্ষণ কাজ করবেন না। কাজের জায়গায় চেয়ার টেবিল এমন ভাবে রাখবেন যাতে ঘাড় সামনে না ঝুকিয়ে কাজ করতে পারেন। ঘাড়ে গরম সেক দিতে পারেন, মাঝে মাঝে ঘাড়ের ব্যায়াম করে নেবেন। শেয়ার করে আপনার অন্য বন্ধুকে জানার সুযোগ করে দিন। ------ অভি
Posted on: Sun, 24 Aug 2014 09:39:18 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015