চীনের মহাপ্রাচীর - THE GREAT WALL - TopicsExpress



          

চীনের মহাপ্রাচীর - THE GREAT WALL OF CHINA : বা চীনা ভাষায়: ছাং ছং অর্থাৎ দীর্ঘ প্রাচীর ========================================================== চীনের প্রাচীর বা গ্রেট ওয়াল অব চায়নার নাম শুনেছি আমরা সবাই। সে কারণে প্রাচীর টি দেখার ইচ্ছা সব সময় ছিল। একবার সরকারী কাজে যাওয়ার সুবাদে প্রাচীর টি স্ব শরীরে দেখার সুযোগ হল। এই মহা প্রাচীরের কিছু তথ্য ও ছবি আপনাদের সাথে শেয়ার করছিঃ চীনের মহাপ্রাচীর মানুষের হাতে তৈরি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্থাপত্য। পৃথিবীর এই দীর্ঘতম আশ্চর্য প্রাচীর, দৈর্ঘ্যে প্রায় ২৬৯৫ কিলোমিটার বা প্রায় ১৬৮৪ মাইল। উচ্চতা ৪.৫৭ থেকে ৯.২ মিটার বা প্রায় ১৫ থেকে ৩০ ফুট। এটি শুরু হয়েছে সাংহাই পাস থেকে এবং শেষ হয়েছে লোপনুর নামক স্থানে। পাথর ও মাটি দিয়ে তৈরি দীর্ঘ প্রাচীর সারি। এগুলি খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতক থেকে খ্রিস্টীয় ১৬শ শতক পর্যন্ত চীনের উত্তর সীমান্ত রক্ষা করার জন্য তৈরি ও রক্ষাণাবেক্ষণ করা হয়। চীনের প্রাচীর তৈরি করা শুরু হয়েছিল ২২১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আর শেষ হতে লেগেছিল প্রায় ১৫ বছর। খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতক থেকে খ্রিস্টীয় ১৬শ শতক পর্যন্ত চীনের উত্তর সীমান্ত রক্ষা করার জন্য তৈরি ও রক্ষাণাবেক্ষণ করা হয়। এ রকম অনেকগুলো প্রাচীর তৈরি করা হয়েছিল, তবে ২২০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে চীনের প্রথম সম্রাট কিন শি হুয়াঙের অধীনে নির্মিত প্রাচীরটিই সবচেয়ে বিখ্যাত। এটি বর্তমান প্রাচীরের অনেক উত্তরে অবস্থিত এবং এর খুব সামান্যই অবশিষ্ট আছে। বর্তমান প্রাচীরটি মিং রাজবংশের শাসনামলে নির্মিত হয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এ রকম একটা বিকট আকৃতির প্রাচীর তৈরি করার প্রয়োজন কেন হয়েছিল? মাঞ্চুরিয়া আর মঙ্গোলিয়ার যাযাবর দস্যুদের হাত থেকে চীনকে রক্ষা করার জন্য এই গ্রেট ওয়াল অব চায়না তৈরি করা হয়েছিল। ২৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে চীন বিভক্ত ছিল খণ্ড খণ্ড রাজ্যে আর প্রদেশে। এদের মধ্যে একজন রাজা যার নাম ছিল ষি হুয়াং-টি, তিনি অন্যান্য রাজাদের সংঘবদ্ধ করে নিজে সম্রাট হন। চীনের উত্তরে গোবি মরুভূমির পূর্বে দুর্ধর্ষ মঙ্গলদের বাস, যাদের কাজই হলো লুটতরাজ করা। এদের হাত থেকে দেশকে বাঁচানোর জন্য সম্রাটের আদেশে চীনের প্রাচীর তৈরির কাজ আরম্ভ হয়। প্রাচীর তৈরি হয়েছিল চিহলি-পুরোনো নাম পোহাই উপসাগরের কূলে শানসীকুয়ান থেকে কানসু প্রদেশের চিয়াকুমান পর্যন্ত। সম্রাটের উদ্দেশ্য কি সিদ্ধ হয়েছিল? এই প্রশ্ন থেকেই যায়। অনেক জায়গা প্রায়ই ভেঙে পড়ত অথবা মঙ্গোল দস্যুরা ভেঙে ফেলে চীনের মূল ভূখণ্ডে লুটপাট করার জন্য ঢুকে পড়ত। বর্তমানে প্রাচীর ঐতিহ্য বলে রক্ষার ব্যবস্থা করা হলেও প্রাচীরের অনেক জায়গা এখনও কিছু কিছু ভাঙা রয়েছে। এর মূল অংশের নির্মাণ শুরু হয়েছিল প্রায় খ্রিস্টপূর্ব ২০৮ সালের দিকে। নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলেন চৈনিক বা চাইনিজরা কিং সাম্রাজ্যের সময়। চীনের প্রথম সম্রাট কিং সি হুয়াং এটি প্রথম ব্যবহার করেছিলেন এবং শত্রুর হাত থেকে নিজের সাম্রাজ্যকে রক্ষার জন্য দীর্ঘ করে নির্মাণ করেছিলেন। এটি চীনের প্রাকৃতিক বাঁধাগুলো ছাড়া অন্যান্য অঞ্চল পাহারা দেওয়ার কাজে এবং উত্তর চীনের উপজাতি সুইং নু বিরুদ্ধে প্রথম স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। হান, সুই, নরদান এবং জিং সাম্রাজ্যের সময়ের ইতিহাসেও যে কারণে তারা এটি তৈরি করেছিলেন ঠিক একই কারণে চীনের প্রাচীরের পরিবর্ধন, পরিবর্তন, সম্প্রসারণ, পুনঃনির্মাণের উল্লেখ আছে। বেইজিংয়ের উত্তরে এবং পর্যটন কেন্দ্রের কিছু অংশ সংরক্ষণ এমনকি পুনঃনির্মাণ করা হলেও দেয়ালের বেশ কিছু অংশ ধ্বংসের সম্মুখীন হয়েছে। বর্তমানে উন্নত পর্যটন এলাকার কাছে মেরামতকৃত অংশ পর্যটন পণ্যের বিক্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। দেয়ালটিতে নিয়মিত বিরতিতে পর্যবেক্ষণ চৌকি আছে, যা অস্ত্র সংরক্ষণ, সেনাবাহিনীর আবাসন এবং স্মোক সংকেত প্রদানে কাজে লাগত। সেনাঘাঁটি এবং প্রশাসনিক কেন্দ্রসমূহ দীর্ঘ বিরতিতে অবস্থিত। গ্রেট ওয়ালের সীমানার মধ্যে সেনা ইউনিটগুলোর যোগাযোগ যেমন—দলকে শক্তিশালী করা এবং শত্রুদের আন্দোলন সম্পর্কে সাবধান থাকা ছিল উল্লেখযোগ্য। দেখার সুবিধার জন্য পাহাড়সহ অন্যান্য উঁচুস্থানে সংকেত টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছিল।
Posted on: Mon, 29 Dec 2014 08:20:34 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015