পর্ব ৩ আম-লিচুতে - TopicsExpress



          

পর্ব ৩ আম-লিচুতে প্রাণনাশী মাত্রায় ফরমালিনঃএকটি বৈজ্ঞানিক অবাস্তবতা ফরমালডিহাইডের গ্রহণযোগ্য মাত্রা কতঃপ্রথম আলোর এক রিপোর্ট থেকে দেখা যায় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ফরমালডিহাইডের নিরাপদ গ্রহণযোগ্য মাত্রা নির্ধারণ করা নেই।ফলে দেশের বিভিন্ন সংস্থা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত গ্রহনযোগ্য মাত্রার রেফারেন্স ব্যবহার করেন। পত্রপত্রিকা থেকে জানা যায় বাতাসে ফরমালডিহাইডের সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রা ১.৫-২.০পিপিএম ধরে খাদ্যে ফরমালিন বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।মার্কিন ATSDR (Agency for Toxic Substances & Disease Registry),CDC ও OSHA ফরমালিনের উপর বিভিন্ন পাবলিক হেলথ স্টেটমেন্ট যে গ্রহণযোগ্য মাত্রা নির্ধারণ করেছেন তা নীচের টেবিলে দেওয়া হলোঃ পিপিএম নিয়ে ভুল বুঝাবুঝি কেনঃব্যবসায়ীদের একটা কমন অভিযোগ ভ্রাম্যমান আদালত যে ফলমূলে মাত্রাতিরিক্ত ফরমালডিহাইড পাচ্ছেন তা সরকার স্বীকৃত বিএসটিআই বা সায়েন্স ল্যাবরেটরী কিংবা বুয়েটে নিয়ে পরীক্ষা করালে তাতে সেই মাত্রায় ফরমালিন পাওয়া যাচ্ছে না।আসলে যারা ভ্রাম্যমান টিম নিয়ে ফলমূলে(প্রকৃতপক্ষে ফলমূলের চারপাশের বাতাসে) ফরমালডিহাইড মেপে বেড়াচ্ছেন এবং অনেক অনেকগুণ পিপিএম পাওয়া গেছে বলে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন তারা যে অনেকক্ষেত্রেই তা অজ্ঞতাবশত। সেটা বোঝানোর জন্য নীচের দুটো উদাহরণই যথেষ্টঃ ১)ফলের ওজন/সংখ্যা বিবেচনা না করাঃ একজন ব্যক্তি লিচুতে মিটার লাগিয়ে ফরমালডিহাইড মাপছেন।ধরা যাক তিনি মিটারে ৩০পিপিএম পেলেন(এটাই এই মিটারের সর্বোচ্চ রিডিং দেবার ক্ষমতা) যা গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে অনেক অনেকগুণ বেশী নিঃসন্দেহে।কিন্তু খেয়াল করে দেখুন তিনি কিন্তু ১০০টি লিচুতে তা মাপছেন। সে হিসাবে প্রতিটি লিচুতে রয়েছে ০.৩পিপিএম ফরমালডিহাইড যা একেবারে গ্রহণযোগ্য। ২)পলিব্যাগ পদ্ধতিঃ এক ব্যক্তি পলিব্যাগের মধ্যে দুটো ফল ঢুকিয়ে কী নিদারুণ চেষ্টায় ফরমালডিহাইডের মাত্রা নির্ণয় করছেন।ধরা যাক তাতে তিনি ৩০পিপিএম পেলেন।আমি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলতে পারি তিনি যদি এই দুটো ফলকে এর চেয়ে ডাবল সাইজের পলিব্যাগে ভরে পরিমাপ করেন তাহলে তাতে ১৫পিপিএম পাবেন।যে পদ্ধতিতে একই ফলের ফরমালডিহাইডের ভিন্ন ভিন্ন মাত্রা পাওয়া যায় তা কখনোই বাস্তবসম্মত,বৈজ্ঞানিক ও গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি হতে পারে না। এজন্যই বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও গবেষণা পরিষদের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন পরীক্ষাগার ছাড়া মৌসুমি ফলে তাৎক্ষণিকভাবে ফরমালিন পরীক্ষার নির্ভরযোগ্য কোনো যন্ত্র নেই এবং মৌসুমী ফলে ফরমালিনের অস্তিত্ব পরীক্ষার জন্য পুলিশের ব্যবহার করা যন্ত্রটি উপযুক্ত নয়। (সূত্রঃদি ইনডিপেডেন্ট,অনলাইন,২৫শে জুন ২০১৪ independent24.tv/?p=160841 ) জেড-৩০০ মিটারঃ এই যন্ত্র দিয়েই বিভিন্ন সংস্থার লোকজন ফলমূলে ফরমালিন মাপেন।অথচ এই যন্ত্রটি তৈরী করা হয়েছে বাতাসে ফরমালডিহাইডের পরিমাণ মাপার জন্য;ফলমূল বা মাছের ফরমালিন মাপার জন্য নয়।এ যন্ত্রের নানা সীমাবদ্ধতাও রয়েছে।এ মিটারটির সীমাবদ্ধতাগুলো হলোঃ ১)এই যন্ত্রটির ফরমালডিহাইড মাপার সক্ষমতা .০১-৩০পিপিএম পর্যন্ত।যেহেতু প্রাকৃতিক কারণেই বাতাসে ফরমালডিহাইডের মাত্রা খুব বেশী বাড়তে পারে না তাই এই যন্ত্রের সর্বোচ্চ সীমা ৩০পিপিএম।কিন্তু কোন খাদ্যে যদি মাত্র ১মিলি ফরমালিন থাকে তাহলে এই মেশিন কোন কাজেই আসবে না কেননা ১মিলি ফরমালিনে ৩৭০পিপিএম ফরমালডিহাইড থাকে। ২)ফরমালিনের মধ্যে ফরমালডিহাইড ৯৯.৯% মিথাইলিন গ্লাইকল আকারে থাকে এবং ০.১% এরও কম ফ্রী ফরমালডিহাইড আকারে থাকে।এই মিটারটি কেবল ফ্রী ফরমালডিহাইড মাপতে পারে।অর্থাৎ খাদ্যে উপস্থিত থাকার পরও এ যন্ত্রটি ৯৯.৯% ফরমালডিহাইডকে সনাক্ত করতে বা মাপতে পারে না। ৩)পাকা ফলের অন্যন্য প্রাকৃতিক উপাদান যেমন ইথিলিন,এসিটোন ইত্যাদিকেও এই মিটার ফরমালডিহাইড হিসাবে গণ্য করে। এমনকি ফিল্টার ব্যবহার করার পরও এসিটোন ও ডাই ইথাইল কিটোনকে ফরমালডিহাইড হিসাবে রিড করে। কাজেই এই যন্ত্রটি কোন বিচারেই ফলমূল বা খাদ্যে সঠিক পরিমাণ ফরমালডিহাইড মাপতে সক্ষম নয়। (চলবে)....
Posted on: Tue, 22 Jul 2014 19:55:37 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015