পুনরাবৃত্তি আশরাফুল - TopicsExpress



          

পুনরাবৃত্তি আশরাফুল সুমন #fiction প্রচণ্ড বেগে সবকিছু সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। ছোট হয়ে আসছে ধীরে ধীরে। এক বিন্দুতে এসে সবকিছু একসাথে মিলে যাওয়া পর্যন্ত সঙ্কোচন ধাপ থামবে না। আরও একটা ফেইজ শেষ হলো। আগের বারেরটার চেয়ে এই ফেইজটা আরও অনেক বেশি অদ্ভুত ছিলো, আরও অনেক বেশি মজার ছিলো। প্রত্যেকটা ফেইজই একটা আরেকটার চেয়ে অনেক অনেক আলাদা। বিন্যাস এবং সমাবেশ নামক জিনিসটা আসলেই খুবই কাজের। প্রত্যেকটা ফেইজে ইলিমেন্টগুলোর বিন্যাস হয় একেকবার একেক রকমভাবে। ফলে একটা ফেইজের সাথে আরেকটা ফেইজ কখনই মিলবে না। কখনোই না। আর মজাটা...এইখানেই... একাকী থাকাটা কোন সুখের ব্যাপার নয়। বিশেষ করে যদি তুমি হও সবার চেয়ে আলাদা। অন্যদের চেয়ে একদমই......একদমই...আলাদা......ভেরি মাচ ডিফারেন্ট, একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে উনি ভাবছিলেন আনমনে। মনটা একদম ভালো নেই তাঁর। প্রতিটা ফেইজ শেষ হয় আর এক ধরনের শূণ্যতা অনুভব করেন উনি। এত দীর্ঘকাল অপেক্ষা করতে তাঁর ভালো লাগে না। কিন্তু কিচ্ছু করবার নেই। কারণ......ব্যাপারটা চট করে করে ফেলারও কোন উপায় নেই। প্রচুর সময় লাগে একেকটা সিস্টেম স্ট্যাবল হতে। আর এই সময়টা হলো খুবই বিরক্তিকর। চুপ চাপ বসে থাকা ছাড়া কিছুই করার থাকে না। কিন্তু একবার যখন পুরো সিস্টেমটা দাঁড়িয়ে যায় তখন পুরো ব্যাপারটায় বেশ মজা পাওয়া যায়। নিত্য নতুন মোড় নেয় সিস্টেমের ইভেন্টগুলো। তবে সবচেয়ে মজা লাগে তখন যখন সেই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রাণীগুলো জন্মায়। ওদের বেড়ে উঠা, ওদের সংগ্রাম, ওদের বিবর্তন, এইসব খুবই আনপ্রেডিক্টেবল। এই কারণেই তিনি অপেক্ষা করে থাকেন এদের জন্যে। কবে এরা জন্মাবে ঐসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পিণ্ডগুলোর উপর। তবে ওদের কিছু কিছু কর্মকাণ্ডে খারাপও লাগে। রাগ হয় ভীষণ। ওরা সামান্য বিষয় নিয়ে তর্কে লিপ্ত হয়, মারামারি করে। সবচেয়ে খারাপ লাগে তখন, যখন দেখেন যে ওরা নিজেরাই নিজেদের পিণ্ডটাকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। নিজেরা যার উপর গড়ে উঠে তাকেই ধ্বংস করতে ওদের একটুও খারাপ লাগে না। অসম্ভব বুদ্ধিমান এই প্রাণীগুলো একইসাথে অসম্ভব নির্বোধও বটে!! কিন্তু এরপরও, প্রতিটা ফেইজ শুরু হওয়ার পর থেকেই, বিভিন্ন গোলক পিণ্ডের উপর গড়ে উঠা এই মাইক্রোস্কোপিক প্রাণীগুলোর জন্যেই তিনি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকেন। এদের কলকাকলি দেখেন, আর হাসেন। তাঁর একাকীত্ব দূর হয়ে যায়। এই ফেইজ ব্যাপারটা তিনি যখন প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন, তখন থেকেই সেটা অটোমেটেড সিস্টেম করে দিয়েছিলেন। ফলে এরপর থেকে যা যা হয়, সব ঐ আগের সিস্টেম অনুযায়ীই হয়। তাঁকে নতুন করে আর কিছুই করতে হয় না। সেই প্রথমবারই তিনি ঠিক করেছিলেন যে এই সিস্টেমকে উনি নিজের মত করে চলতে দেবেন। শুধু দেখে যাবেন। কোনরূপ ইন্টারফেয়ার করবেন না। কিন্তু সেটা আর পারলেন কই!! ঐ ক্ষুদ্র প্রাণীগুলো তাঁকে বাধ্য করলো। মাঝে মাঝে এরা এমন ছেলেমানুষি করে ফেলে যে আর সহ্য হয় না। ধৈর্যেরও তো একটা সীমা থাকে নাকি!! তাই মাঝে মাঝে বাধ্য হন ইন্টারফেয়ার করতে। কিন্তু সেটা একদমই না পারতে করেন। খুবই রেয়ার কেইস। ভাবতে ভাবতে বিশাল ধুম্র পিণ্ডটার দিকে নজর গেলো তাঁর। সঙ্কোচন ধাপের সমাপ্তি হয়েছে। বস্তুগুলো সব একসাথে আবার জোড়া লেগে গেছে। যেন বিশাল এক বেলুন, যেটা চুপসে গেছে। খানিকক্ষণ অপলক তাকিয়ে থাকলেন সেই মেঘ এর দিকে। সময় হয়ে এসেছে। আর বেশি দেরি নেই। মনে মনে গুনলেন, ৩, ২, ১............ প্রচণ্ড এক বিস্ফোরণ হলো। সাথে সাথে ধুম্রপিন্ডটা বিলিয়ন বিলিয়ন টুকরোয় ভাগ হয়ে খুব দ্রুত বেগে চারদিকে ছড়িয়ে পড়লো। আবারও নতুন এক ফেইজ এর শুরু হয়েছে। এবার চলছে প্রসারণ ধাপ। এবারের সবকিছু কি অনেকটা আগের বারের মতই হবে? নাকি অনেক অনেক ডিফারেন্ট হবে? ইজনট ইট ঠু মাচ ইন্টারেস্টিং টু ফাইন্ড আউট? দেখা যাক কি হয়...ভিতরে ভিতরে বেশ এক্সাইটেড হয়ে উঠলেন তিনি। ৪৭তম বারের মত আবারও সৃষ্টি হলো মহাবিশ্ব।
Posted on: Thu, 18 Dec 2014 11:49:00 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015