বিএনপির প্রতিষ্ঠা ও - TopicsExpress



          

বিএনপির প্রতিষ্ঠা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের যাত্রা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ১ সেপ্টেম্বর ’১৪ তিন যুগ পার করেছে। বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, উন্নয়ন এবং সংগ্রামের পথ বেয়ে দলটি এগিয়ে চলছে। বিএনপির রাজনৈতিক পথচলা ও দেশগঠনের সার্বিক চিত্র নিয়ে শিগগিরই একটি নির্মোহ গবেষণা গ্রন্থ প্রকাশিত হবে। লেখক ও সাংবাদিক এম মাহাবুবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ পাঁচ বছর গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত নিয়ে প্রণীত গ্রন্থটি একটি উচ্চ পর্যায়ের গবেষণা বোর্ড কর্তৃক সম্পাদিত হয়ে এখন ছাপার কাজ চলছে। ৩৬ বছরের ঐতিহাসিক নানা অর্জন ও বন্ধুর পথের চুম্বকাংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো। (দ্বিতীয় পর্ব) বিএনপির প্রতিষ্ঠা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের যাত্রা • জিয়াউর রহমান জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত বাংলাদেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট • আ.লীগের পুনর্জন্ম দেন জিয়াউর রহমান • ১৯ দফার ভিত্তিতে বাংলাদেশের ভিত্তি গড়ে তোলেন জিয়া • ১ সেপ্টেম্বর ’৭৮ জিয়াউর রহমানকে আহ্বায়ক করে বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হয় • ১৮ ফেব্রুয়ারি ’৭৯ জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করে • ৩০ মে ’৮১ প্রেসিডেন্ট জিয়া শাহাদতবরণ করলে বিচারপতি আবদুস সাত্তার বিএনপির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান • ৩ জানুয়ারি ’৮২ বেগম খালেদা জিয়া বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ করে একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন • ৮ জানুয়ারি ’৮২ বেগম খালেদা জিয়া সংবাদপত্রে দীর্ঘ বিবৃতি দিয়ে রাজনীতিতে পা রাখেন জাতীয় দায়িত্ব প্রাপ্তির অল্প সময়ের মধ্যেই সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান নিজের আন্তরিকতা, কর্ম ও চেষ্টা দিয়ে দেশবাসীর হৃদয়ে জায়গা করে নেন। সামাজিক বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধে তিনি রাজনৈতিক নেতৃত্বকে দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে এক প্লাটফর্মে আনার উদ্যোগ নেন। দেশ পরিচালনায় তাদের পরামর্শকে প্রাধান্য দেয়া হয়। তাঁর এই ইতিবাচক উদ্যোগের বিরুদ্ধেও দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র অব্যাহত থাকে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তিনি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান। এই দায়িত্ব পেয়ে প্রথমেই তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নেন। গণমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেন। জনগণের প্রতিনিধির হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা দিতে তিনি প্রেসিডেন্ট পদে গণভোট এবং সাধারণ নির্বাচন দেন। গণতান্ত্রিক উপায়ে জাতির ব্যাপক সমর্থন পেয়ে জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনেন। ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি গঠিত বাকশালের মাধ্যমে হত্যা করা গণতন্ত্রকে পুনর্জীবন দেন জিয়াউর রহমান। এমনকি বাকশালের মাধ্যমে বিলুপ্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকেও পুনর্জন্ম দেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা জিয়াউর রহমান। সব রাজনৈতিক দলকে মুক্তভাবে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেন। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পাহারাদার হিসেবে নিজে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক আদর্শের এই দলের নেতৃত্বে তিনি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ভিত্তি রচনা করেন। সবাইকে নিয়ে তিনি একটি আত্মনির্ভরশীল সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে উদ্যোগী হন। তার এ কর্মপ্রচেষ্টা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হয়। রাষ্ট্রীয় দায়িত্বভার গ্রহণ ২১ এপ্রিল ১৯৭৭ প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম ভগ্নস্বাস্থ্যের কারণে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান এবং সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে প্রেসিডেন্ট পদে মনোনীত করেন। জিয়াউর রহমান বঙ্গভবনে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন। ২ মে এক ঘোষণায় প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ৩০ মে ’৭৭ গণভোট অনুষ্ঠানের জন্য একটি সামরিক আইন জারি করেন। এই গণভোট হয় তার ওপর ও তার নীতির ওপর এবং তার কর্মসূচির প্রতি ভোটারদের আস্থা আছে কি না সেজন্য। জাতীয়তাবোধে বাংলাদেশের মেগনাকার্টা ১৯ দফা ঘোষণা ১৯৭৭ সালের ২২ মে জিয়াউর রহমান আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে বাংলাদেশের মেগনাকার্টা বা মুক্তির সনদ ঘোষণা করেন, যা উন্নয়ন ও উত্পাদনের ১৯ দফা নামে খ্যাত। রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ঘোষিত ১৯ দফা কর্মসূচি হলো : ১. সর্বতোভাবে দেশের স্বাধীনতা, অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। ২. শাসনতন্ত্রের চারটি মূলনীতি অর্থাত্ সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি সর্বাত্মক বিশ্বাস ও আস্থা স্থাপন করা, গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায় বিচারের সমাজতন্ত্র জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে প্রতিফলিত করা। ৩. সর্ব উপায়ে নিজেদের একটি আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসেবে গড়ে তোলা। ৪. প্রশাসনের সর্বস্তরে উন্নয়ন কার্যক্রমে এবং আইনশৃংখলা রক্ষার ব্যাপারে জনসাধারণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। ৫. সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামীণ তথা জাতীয় অর্থনীতিকে জোরদার করা। ৬. দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা। ৭. দেশে কাপড়ের উত্পাদন বাড়িয়ে সবার জন্য অন্ত ত মোটা কাপড় সরবরাহ নিশ্চিত করা। ৮. কোনো নাগরিক যেন গৃহহীন না থাকে তার যথাসম্ভব ব্যবস্থা করা। ৯. দেশকে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করা। ১০. সকল দেশবাসীর জন্য ন্যূনতম চিকিত্সার বন্দোবস্ত করা। ১১. সমাজে নারীর যথাযোগ্য মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা এবং যুবক সমাজকে সুসংহত করে জাতিগঠনে উদ্বুদ্ধ করা। ১২. দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেসরকারি খাতে প্রয়োজনীয় উত্সাহ দান। ১৩. শ্রমিকদের অবস্থার উন্নয়ন সাধন এবং উত্পাদন বৃদ্ধির স্বার্থে সুস্থ শ্রমিক মালিক সম্পর্ক গড়ে তোলা। ১৪. সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে জনসেবা ও দেশ গঠনের মনোবৃত্তি উত্সাহিত করা এবং তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করা। ১৫. জনসংখ্যা বিস্ফোরণ রোধ করা। ১৬. সব বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে সমতার ভিত্তিতে বন্ধুত্ব গড়ে তোলা এবং মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক বিশেষ জোরদার করা। ১৭. প্রশাসন এবং উন্নয়ন ব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণ এবং স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করা। ১৮. দুর্নীতিমুক্ত ন্যায়নীতিভিত্তিক সমাজব্যবস্থা কায়েম করা। ১৯. ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে সব নাগরিকের অধিকার পূর্ণ সংরক্ষণ করা এবং জাতীয় ঐক্য ও সংহতি সুদৃঢ় করা। গণভোটে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতি জনগণের আস্থা ৩০ মে ’৭৭ অনুষ্ঠিত গণভোটে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং তার ১৯ দফা কর্মসূচি ও নীতির প্রতি দেশবাসী বিপুল আস্থা জ্ঞাপন করেন। ১২ হাজার ২৬৪টি কেন্দ্রের ভোটের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোট ভোটের সংখ্যা ১ কোটি ৯২ লাখ ৯ হাজার ৬০টি। এর মধ্যে ১ কোটি ৮৯ লাখ ৯৩ হাজার ৯২টি ‘হ্যাঁ’ সূচক ভোটের সংখ্যা। ‘না’ সূচক ভোটের সংখ্যা ২ লাখ ১৫ হাজার ৯৬৮টি। সকল ক্ষমতার উত্স জনগণ তাদের আস্থার রায় জানিয়েছেন স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর সৈনিক এবং নবীন প্রত্যাশায় উদ্দীপ্ত বাংলাদেশের স্বর্ণালি অভিজ্ঞতার নায়ক মেজর জেনারেল জিয়াকে, জনগণ তাদের রায় দিয়েছেন স্বাধীনভাবে। প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পাওয়ার পর জিয়াউর রহমান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হন। ল্যাংকাস্টার হাউসে কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের সম্মেলনে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জনগণের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবের জন্য তিনি ৫ দফা ফর্মুলা প্রস্তাব উত্থাপন করেন। ১৯৭৭ সালের ১০ জুন লন্ডনে কমনওয়েলথ সরকারপ্রধানদের সম্মেলনে জিয়াউর রহমান আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের সংগ্রামী জনসাধারণকে বর্ণবাদী সংখ্যালঘু সরকারের কাছ থেকে সংখ্যাগরিষ্ঠদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের লক্ষ্য অর্জনের সহায়তা করার জন্যে একটি সুুনির্দিষ্ট বাস্তব ও জরুরি কার্যক্রম গ্রহণের আহ্বান জানান। প্রতিবেশী বার্মার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৭৭ সালের ২১ জুলাই রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান চারদিনের সফরে সেদেশে যান। চারদিনের সফরে বাণিজ্য, সংস্কৃতি, সীমান্ত এবং সমুদ্রসীমাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তারা আলোচনা করেন। বিশেষ করে দু’দেশের মধ্যে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছেন। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ২৬ জুলাই তিন দিনের সফরে সৌদি আরব যান। বাদশা খালেদের সঙ্গে বৈঠক করে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে মুসলিম বিশ্বের উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করতে ঐক্যমত হন। ১৯৭৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান মিসরীয় প্রেসিডেন্টের এক ভোজসভায় যোগ দেন। সেখানে তিনি অধিকৃত আরব ভূখণ্ড থেকে ইসরাইলি সৈন্য সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং ফিলিস্তিনি জনগণের নিজস্ব আবাসভূমি প্রতিষ্ঠাসহ তাদের সব অধিকারের স্বীকৃতি প্রদানই মধ্যপ্রাচ্যে সুষ্ঠু ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ বলে উল্লেখ করেন। দেশের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রাখতে জিয়াউর রহমানের ভারত সফর ১৯ ডিসেম্বর ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান ফারাক্কা চুক্তি স্বাক্ষরকালীন সমঝোতা ও সহযোগিতার মনোভাব অক্ষুণ্ন রাখার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানান। ভারতে দু’দিনব্যাপী রাষ্ট্রীয় সফর উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সম্মানে ভারতীয় রাষ্ট্রপতি আয়োজিত ভোজসভায় তিনি এ আহ্বান জানান। ওই ভোজসভায় ভারতের রাষ্ট্রপতি সঞ্জীব রেড্ডি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে উদ্দেশ করে বলেন, “Your position is already assure in the annel of the history of your country as a brave freedom fighter who was the first declare the independence of Bangladesh.” (জিয়াউর রহমান একজন সাহসী মুক্তিযোদ্ধা এবং সর্বপ্রথম বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দানকারী হিসেবে আপনার মর্যাদা এরই মধ্যে সুপ্রতিষ্ঠিত।) [Bangladesh in Internation Politics, by M. Shamsul Haq, 1993, P-96.] এই সফরে ২০ ডিসেম্বর এক যুক্ত ইশতেহার ঘোষণা করা হয়। ইশতেহারে বাংলাদেশ-ভারত সমতা, সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা এবং একে অপরের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করার ভিত্তিতে উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন ও জোরদার করতে দৃঢ় সংকল্পের কথা উল্লেখ করা হয়। তোষামোদবিমুখ জিয়াউর রহমান প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছুটে গিয়ে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্টের কথা শুনতেন। তাদের কাছ থেকে সমাধানেরও পরামর্শ নিতেন। সরকার বা প্রেসিডেন্টের প্রশংসায় যারা ব্যস্ত থাকতেন, জিয়াউর রহমান তাদের পছন্দ করতেন না। এমনকি দেশের বিভিন্ন স্থানে মতবিনিময় কিংবা জনসভায় বক্তারা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে নিয়ে নানা রকম প্রশংসামূলক অভিধা দিয়ে তোষামোদ শুরু করলে তিনি তাদের বক্তৃতা বন্ধ করে দিতেন। তোষামোদী নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে মাইক কেড়ে নেয়ার মতো দৃষ্টান্তও স্থাপন করেন জাতীয়তাবাদী রাজনীতির এই প্রাণপুরুষ। ১৯৭৮ সালের ৮ জানুয়ারি তিনি সন্দ্বীপ থানার ডাকবাংলোতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সেখানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জিয়াউর রহমানকে নানা অভিধায় ভূষিত করে শুভেচ্ছা বক্তব্য দিতে থাকলে তিনি থামিয়ে দেন। জিয়া বলেন, ‘অলংকরণ ও অভিধা দিয়ে জনগণের পেট ভরবে না। তাই জনগণের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে হবে।’ কমনওয়েলথ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সামনে এগিয়ে নিতে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিশ্ব নেতৃত্বকে বারবার তাগাদা দিতেন। ১৪ ফ্রেব্রুয়ারি ১৯৭৮ কমনওয়েলথ সম্মেলনের মূল অধিবেশনে তিনি বলেন, ‘বৃহত্তর সক্রিয় সহযোগিতার মাধ্যমে নতুন ও ন্যায়সংগত এক বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এজন্য একক ও যৌথ স্বনির্ভরতা অর্জনে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্ষমতা বাড়াতে হবে।’ এ লক্ষ্যে তিনি আঞ্চলিক দেশগুলোকে ৬ দফা উদ্যোগ গ্রহণের প্রস্তাব দেন। জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) গঠন ১৯৭৮ সালের ২২ ফেবু্রয়ারি জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) সরকারি অনুমোদন পায়। রাজনৈতিক দলবিধি (পিপিআর) ১৯৭৮ মোতাবেক এ নয়া দলের অনুমোদনের কথা ঢাকা পৌরসভা চেয়ারম্যান আবুল হাসনাতকে চিঠির মাধ্যমে ২২ ফেবু্রয়ারি জানানো হয়। বিচারপতি আবদুস সাত্তারকে আহ্বায়ক করে জাগদলের ১৬ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ২২ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করা হয়। আহ্বায়ক কমিটির সদস্যরা ছিলেন— প্রফেসর সৈয়দ আলী আহসান, আবদুল মোমেন খান, শামসুল আলম চৌধুরী, ক্যাপ্টেন (অব.) নুরুল হক, এনায়েতউল্লাহ খান, মওদুদ আহমদ, জাকারিয়া চৌধুরী, ড. এম আর খান, সাইফুর রহমান, জামাল উদ্দিন আহমদ, আবুল হাসনাত, এম এ হক, ক্যাপ্টেন (অব.) সুজাত আলী, আলহাজ এম এ সরকার ও আবুল কাশেম। ২৭ মার্চ ১৯৭৮ জাগদল প্রথম তাদের ম্যানিফেস্টো ঘোষণা করে। পর্যায়ক্রমে সারাদেশে জাগদলের কমিটি গঠন করা হয়। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ২৯ মার্চ এক ভাষণে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘ডিসেম্বরে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’ ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের দ্বিবার্ষিক পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। ঘোষণার আগে তিনি বলেন, পরিকল্পনাটির সাফল্য প্রধানত নির্ভর করে কৃষি উন্নয়ন ও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ওপর। আর এজন্য জাতিকে রাজনৈতিক লক্ষ্য স্থির করে দেশের সমস্যা সমাধানে আত্মনিয়োগ করতে হবে। জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক দলে যোগদান ৯ এপ্রিল ১৯৭৮ জিয়াউর রহমান প্রথম আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন, তিনি রাজনৈতিক দলে যোগদান করবেন এবং ডিসেম্বরের নির্বাচনে প্রার্থী হবেন। ১৯৭৮ সালের ২ মে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে চেয়ারম্যান করে ৬টি দলের সমন্বয়ে ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট’ গঠন করা হয়। যে সব রাজনৈতিক দল ফ্রন্ট গঠন করে, সেগুলো হলো— জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী), ইউনাইটেড পিপলস পার্টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ লেবার পার্টি ও বাংলাদেশ তফসিলি জাতীয় ফেডারেশন। জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টের ৬টি অঙ্গ দলের এক বৈঠকে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে জিয়াউর রহমানকে মনোনয়ন দেয়া হয়। ১৯৭৮ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন দেশে গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনী অনুচ্ছেদ নং ১১৮ থেকে ১২৬ অনুযায়ী ১৯৭৮ সালের ৩ জুন প্রাপ্তবয়স্কদের প্রত্যক্ষ সার্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হয়। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ১৯৭৮ সালে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচন অতীব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সাক্ষ্য বহন করছে। এতে বহুদলীয় রাজনীতির ভিত্তিতেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং প্রায় সব রাজনৈতিক দলই এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। রাষ্ট্রপতি পদের জন্য মোট ১০ জন প্রার্থী পূর্ণপ্রস্তুতি নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তার মধ্যে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। অন্যদিকে তার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন গণতান্ত্রিক ঐক্যজোটের মনোনীত প্রার্থী জেনারেল (অব.) এম এ জি ওসমানী। আওয়ামী লীগ, জাতীয় জনতা পার্টি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (মোজাফ্ফর), পিপলস পার্টি, গণআজাদী লীগ ও নিষিদ্ধ কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের সমন্বয়ে গণতান্ত্রিক ঐক্যজোট গঠিত হয়েছিল। অন্যদের মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং নির্দলীয় প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট প্রার্থী জিয়াউর রহমান ১ কোটিরও বেশি ভোটের ব্যবধানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঐক্যজোট প্রার্থী জেনারেল (অব.) এম এ জি ওসমানীকে পরাজিত করে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। এ নির্বাচনে মোট ৫৩ দশমিক ৫৪ ভাগ ভোটার ভোট প্রদান করেন। এর মধ্যে ৭৩ দশমিক ৬৩ ভাগ ভোট পান জিয়াউর রহমান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এম এ জি ওসমানী পান ২১ দশমিক ৭০ ভাগ ভোট। ১৯৭৮ সালের ১২ জুন জিয়াউর রহমান বঙ্গভবনের দরবার হলে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। স্বাধীন বাংলাদেশে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত প্রথম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। এর আগের সব রাষ্ট্রপতি সময়ের প্রয়োজনে কিংবা জবরদস্তি করে রাষ্ট্রপতির পদে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। এজন্যই জনগণের ভোটে প্রথম নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান গণমানুষের হৃদয়ে নিজের স্থান করে নেন। ১৯৭৮ সালের ২৯ জুন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান উপদেষ্টা পরিষদ ভেঙে দিয়ে ২৮ সদস্যের একটি মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেন। বিচারপতি আবদুস সাত্তারকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব দেন। মন্ত্রিপরিষদের সিনিয়র মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন মশিউর রহমান যাদু মিয়া। মন্ত্রিপরিষদের অন্য সদস্যরা হলেন— ড. মির্জা নুরুল হুদা, শাহ আজিজুর রহমান, কাজী আনোয়ারুল হক, অধ্যাপক মোহাম্মদ শামসুল হক, আজিজুল হক, এসএম শফিউল আজম, আবদুল মোমেন খান, মেজর জেনারেল (অব.) মাজেদুল হক, ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল হালিম চৌধুরী, বি এম আব্বাস, লে. কর্নেল (অব.) আবু সালেহ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, রসরাজ মণ্ডল, মোহাম্মদ সাইফুর রহমান, জামাল উদ্দিন আহমেদ, ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কাজী জাফর আহমদ, শামসুল হুদা চৌধুরী, ক্যাপ্টেন (অব.) নুরুল হক, এ জেড এম এনায়েতউল্লাহ খান, মওদুদ আহমদ, এস এ বারী এটি, ড. মিসেস আমিনা রহমান, মির্জা গোলাম হাফিজ, কে এম ওবায়দুর রহমান, আবদুল আলীম, হাবিবুল্লাহ খান ও আবদুর রহমান। প্রতিমন্ত্রী হন দু’জন ডা. ফসিউদ্দীন মাহতাব ও ডা. এম এ মতিন। এই মন্ত্রিপরিষদেও প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারণা বাস্তবায়ন করেন। মন্ত্রিপরিষদে ২৮ জন মন্ত্রীর মধ্যে ১৮ জন ছিলেন জাগদলের, ৪ জন ন্যাপ ভাসানীর, ২ জন ইউপিপির ও ১ জন তফসিলি ফেডারেশনের। বিশেষত ৪ জন ছিলেন সাবেক সামরিক অফিসার, ৮ জন বেসামরিক অফিসার, ১ জন সাংবাদিক ও বাকিরা হলেন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। ৯ আগস্ট প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯ দফা বাস্তবায়নে সারাদেশে ১৮টি কমিটি গঠন করেন। প্রতিটি কমিটির প্রধান হিসেবে একজন মন্ত্রীকে দায়িত্ব দেয়া হয়। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি প্রতিষ্ঠা জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টের শরিক দলগুলোর সমন্বয়ে ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল’ নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ নেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। এ পরিস্থিতিতে ২৮ আগস্ট বিচারপতি আবদুস সাত্তার এক জরুরি আদেশে জাগদল ও এর সব অঙ্গদলকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়দাবাদী দল (বিএনপি) নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল ঘোষণা করেন। ঢাকার রমনা গ্রিনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলনে জিয়াউর রহমান ঘোষিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ঘোষণাপত্রে বলা হয় : বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে ইস্পাতকঠিন গণঐক্য, জনগণভিত্তিক গণতন্ত্র ও রাজনীতি প্রতিষ্ঠা, ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত জনগণের অক্লান্ত প্রয়াসের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনৈতিক মুক্তি, আত্মনির্ভরশীলতা ও প্রগতি অর্জন এবং সাম্রাজ্যবাদ, সম্প্রসারণবাদ, নয়া উপনিবেশবাদ ও আধিপত্যবাদের বিভীষিকা থেকে মুক্তি নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল’ গঠিত হয়েছে। এই চারটি লক্ষ্যকে ‘জনগণের মৌলিক দাবি’ বলে ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে জাতীয় মিলন ও ঐক্যের দল হিসেবে উল্লেখ করে দলের ঘোষণাপত্রে বলা হয়, এই দলের বৈপ্লবিক উদারতা ও বিশালতা সব দেশপ্রেমিক মানুষকে এক অটল ঐক্যবাদী কাতারে শামিল করতে সক্ষম হবে। সক্ষম হবে জাতীয় পর্যায়ে স্থিতিশীলতা, সার্বিক উন্নতি ও প্রগতি আনয়ন করতে। ঘোষণাপত্রে স্থিতিশীল গণতন্ত্রের রূপরেখায় প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির সরকার নির্বাচিত ও সার্বভৌম পার্লামেন্টের প্রতি দলের আস্থা জ্ঞাপন করা হয়। এতে দেশের শতকরা ৯০ জন অধিবাসী মধ্যবিত্ত গ্রামের সার্বিক উন্নয়নের প্রতি সকল পর্যায়ে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। ভূমি ব্যবস্থা ও প্রশাসনকে ন্যায়বিচারভিত্তিক, আধুনিক ও সুবিন্যস্ত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়। গণমুখী কৃষিনীতি ও কার্যক্রম প্রণয়ন, সমবায়ের ভিত্তিতে জাতীয় উন্নয়ন, সৃজনশীল উত্পাদনমুখী ও গণতান্ত্রিক শ্রমনীতি প্রণয়ন, গণমুখী জীবননির্ভর কার্যক্রম প্রণয়ন, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতাকে সুনিশ্চিত করতে দেশরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার, মুক্তিযোদ্ধাদের সৃজনশীল, গঠনমূলক ও উত্পাদনমূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, বাংলাভাষা ও সাহিত্যের সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও প্রসার, শাসনতন্ত্রের জীবননির্ভর ও বাস্তবমুখী রূপ সংরক্ষণ ও স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি নিশ্চিতকরণ, সামাজিক ও বৈষম্য দূরীকরণ, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার সুদৃঢ় অঙ্গীকার করা হয় ঘোষণাপত্রে। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে আহ্বায়ক করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ৭৬ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে যারা ছিলেন : আহ্বায়ক : মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। সদস্য : ১. বিচারপতি আবদুস সাত্তার, ২. মশিউর রহমান যাদু মিয়া, ৩. মোহাম্মদ উল্লাহ, ৪. শাহ আজিজুর রহমান, ৫. ক্যাপ্টেন (অব.) হালিম চৌধুরী, ৬. রসরাজ মণ্ডল, ৭. আবদুল মোমেন খান, ৮. জামাল উদ্দিন খান, ৯. ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, ১০. মির্জা গোলাম হাফিজ, ১১. ক্যাপ্টেন (অব.) নুরুল হক, ১২. সাইফুর রহমান, ১৩. কে এম ওবায়দুর রহমান, ১৪. মওদুদ আহমদ, ১৫. শামসুল হুদা চৌধুরী, ১৬. এ জেড এম এনায়েতুল্লাহ খান, ১৭. এস এ বারী এটি, ১৮. ড. আমিনা রহমান, ১৯. আবদুর রহমান, ২০. ডা. এম এ মতিন, ২১. আবদুল হালিম, ২২. ব্যারিস্টার আবুল হাসনাত, ২৩. আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, ২৪. নূর মোহাম্মদ খান, ২৫. আবদুল করিম, ২৬. শামসুল বারী, ২৭. মজিবুর রহমান, ২৮. ডা. ফরিদুল হুদা, ২৯. শেখ আলী আশরাফ, ৩০. আবদুর রহমান বিশ্বাস, ৩১. ব্যারিস্টার আবদুল হক, ৩২. ইমরান আলী সরকার, ৩৩. দেওয়ান সিরাজুল হক, ৩৪. এমদাদুর রহমান, ৩৫. অ্যাডভোকেট আফসার উদ্দীন, ৩৬. কবির চৌধুরী, ৩৭. ডা. এম আর খান, ৩৮. ক্যাপ্টেন (অব.) সুজাত আলী, ৩৯. তুষার কান্তি বাড়ৈ, ৪০. সুনীল গুপ্ত, ৪১. রেজাউল বারী ডিনা, ৪২. আনিসুর রহমান, ৪৩. আবুল কাসেম, ৪৪. মনসুর আলী সরকার, ৪৫. আবদুল হামিদ চৌধুরী, ৪৬. মানসুর আলী, ৪৭. শামসুল হক, ৪৮. খন্দকার আবদুল হামিদ, ৪৯. জুলমাত আলী খান, ৫০. অ্যাডভোকেট নাজমুল হুদা, ৫১. মাহবুব আহমেদ, ৫২. আবু সাঈদ খান, ৫৩. মোহাম্মদ ইসমাইল, ৫৪. সিরাজুল হক মন্টু, ৫৫. শাহ বদরুল হক, ৫৬. আবদুর রউফ, ৫৭. মোরাদুজ্জামান, ৫৮. জহির উদ্দিন খান, ৫৯. সুলতান আহমেদ চৌধুরী, ৬০. শামসুল হুদা, ৬১. সালেহ আহমেদ চৌধুরী, ৬২. আফসার আহমেদ চৌধুরী, ৬৩. তরিকুল ইসলাম, ৬৪. আনোয়ারুল হক চৌধুরী, ৬৫. মঈন উদ্দিন খান, ৬৬. এম এ সাত্তার, ৬৭. হাজী জালাল, ৬৮. আহমেদ আলী মণ্ডল, ৬৯. শাহেদ আলী, ৭০. আবদুল ওয়াদুদ, ৭১. শাহ আবদুল হালিম, ৭২. ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকার, ৭৩. আতা উদ্দীন খান, ৭৪. আবদুর রাজ্জাক চৌধুরী ও ৭৫. আহমেদ আলী। ১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচন ও বিএনপির সরকার গঠন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সর্বতোভাবে চেষ্টা করেছিলেন দেশে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সরকার প্রতিষ্ঠার। ১৯৭৮ সালের ৩০ নভেম্বর এক ঘোষণায় প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ১৯৭৯ সালের ২৭ জানুয়ারি তারিখ নির্ধারণ করেন। এ নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নেয় এবং তাদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া ও শর্ত পূরণের জন্য নির্বাচন দু’দফায় পেছানো হয়। ১৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে ৩০০টি আসনের মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ২০৭টি আসন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। ৩৯টি আসন পেয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (মালেক) প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পায়। এছাড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (মিজান) ২টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ৮টি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (মোজাফ্ফর) ১টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ও ইসলামী ডেমোক্রেটিক দল ২০টি, গণফ্রন্ট ২টি, বাংলাদেশ জাতীয় লীগ ২টি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলন ১টি, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল (তোয়াহা) ১টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১৬টি আসন পায়।
Posted on: Tue, 02 Sep 2014 15:25:02 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015