বিজয়ী ভালোবাসা Written By: - TopicsExpress



          

বিজয়ী ভালোবাসা Written By: বালকের অভিমান আজ হঠাৎ সাইফুল ভাইয়ের সাথে দেখা। আমাদের বাসার পাশেই থাকে।মেসে।এখন অবশ্য মেস বলা যায় না। নতুন বিয়ে করেছেন। আজ দুপুরে তাদের বাসায় খাওয়ার জন্যে বললেন।অনেক বলার পর রাজি হলাম। ভাইয়ের সাথে তাদের মেসে…স্যরি তাদের ছোট্ট সাজানো ফ্যামেলী বাসায় গেলাম।ভাবী দরজা খুলেই সালাম দিলেন।ভাবী মোটামুটি আমার মতই লম্বা।5.7 যা বর্তমানে বিরল।এখন অবশ্য খাটো মেয়েদের সংখ্যাই বেশী।দেখতে সুন্দরী। একটা মাত্রই রুম।আর একটা মাত্রই খাট।একটা টেবিল,পাখা।সাথে রান্নাঘর আর বাথরুমও আছে।টেবিল থেকে চেয়ার এনে বসতে দিলেন।দুপুর যেহেতু ভাবী রান্না করছেন।সাইফুল ভাই পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পরই তিনি রান্না করতে রান্নাঘরে চলে গেলেন। সাইফুল ভাই খাটে বসে আছেন। তুই বস। আমি তোর ভাবীকে রান্নাঘরে একটু সাহার্য্য করে আসি। —হাহাহা।ঠিকাছে ভাই যান।মানুষ ব্যাচেলর থেকে মুক্তি পেতে বিয়ে করে আর আপনি ব্যাচেলরই রয়ে গেলেন। —হাহাহা।নারে ভাই।ভালোবাসাটা একটু বেশীই তো তাই। সাইফুল ভাইও চলে গেলেন। রুমে বসে বসে একা একা তাদের রুমটা দেখছি। দেওয়ালে আগের মত রং নেই।কলম,মার্কার,আর পেন্সিল দিয়ে পুরো ঘরে আঁকা ভালোবাসার বানী লেখা।হায়রে ভালোবাসা!!! সাইফুল ভাই বিয়ে করেছেন শুনে মনে করেছিলাম ব্যাচেলর জীবন থেকে মুক্তি পেতেই বিয়ে করেছেন।কিন্তুুএখন দেখি পুরোই উল্টো। বরং আরেকজনকে কাঁধে বইয়ে বেড়াচেছন। টেবিলের উপর দুজনের বইয়ে একাকার। বেঁচে গেছি। সাইফুল ভাই এসে খাটে বসলেন। —কেমনে ভাই? —আর বলিস না।আজ রান্না করতে হেল্প করতে চাইলাম।করতে দিলো না।বললো নিজে রান্না করবে।তাই তোর সাথে গল্প করতে পাঠিয়ে দিলো। —ভালোই হলো।ভাবীর হাতের রান্না খেতে পারবো। ভাবী রান্না করতে পারে না? —না এখনো পুরোপুরিভাবে পারে না।আমিই শিখিয়ে দেই।ব্যাচেলর লাইফ থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতা। —পুরোপুরি ভাবে পারে না মানে আগেও পারতো না? —না। —ভাবী কোন যুগের মেয়ে? —এ যুগেরই তবে অতিরিক্ত ধনীর মেয়ে হওয়ায় শিখেনি।বাবা মা হয়তো ভেবেছিল বিয়ের পর মেয়েকে কাজের বুয়া রান্না করে খাওয়াবে।কে জানতো আমার পাল্লায় পড়বে ও? —ভালোই হলো।প্রেমটা কেমনে হলো? —প্রেমটা…আমারা একই ভার্সিটিতে একই সাবজেক্ট নিয়ে পড়ি। অনার্স ১ম বর্ষে থাকতেই পরিচয়।এর পর ভালোবাসা। ৩ বছরের প্রেমের. শেষ দিকেই মানে ৩য় বর্ষের শেষদিকে ওর বিয়ে ঠিক হয়ে যায় আমেরিকায় অবস্থানরত একটা ছেলের সাথে। ও আমাকে খুবই ভালোবাসতো তাই ছেড়ে যেতে বা ছেলেটির সাথে বিয়ে মেনে নিতে পারেনি। এর পর পালিয়ে বিয়ে।আর এখন এই অবস্থা। —ভালোইতো।সফল ভালোবাসা।আর গ্রুপ স্টাডিতো আছেই। —হাহাহা ।তাতো অবশ্যই। গ্রুপ স্টাডি করারমতো মানুষ পেলাম। —চলে কি ভাবে আপনাদের সংসার? —আমরা দুজনইতো।আমার তিনটা টিউশনি করাই আর তোর ভাবী একটা স্কুলে নাচের ক্লাস নেয়।এতেই হয়ে যায়।পড়ালেখাতো প্রায়ই শেষ।চাকুরীও পেয়ে যাবো হয়তো। —ভালোইতো।সাইফুল ভাই…… উফপপপ ওপাশ থেকে আওয়াজ আসতেই ছুটে রান্নাঘরে চলে গেল সাইফুল ভাই। আমিও ছুটে গেলাম। ভাবী মাছ ভাজি করবেন কিন্তুু পেঁয়াজ সব পুঁড়ে গেছে। ধোঁয়া উড়ছে। কি হয়েছে তোমার? —হাতে তেলের ছিটা পড়েছে। হাতের দিকে এগিয়ে গেল সাইফুল ভাই! —তোমাকে কতবার বলেছিলাম একটু সাবধান হও।শুনলে নাতো?কতবার বলেছি রান্না করা আর যুদ্ধ জয় করা একই।অন্তত আমাদের জন্যে। বেশি লাগেনিতো? এক নাগাড়ে সাইফুল ভাই কথাগুলো বলেই গেলেন।ভাবী হয়তো খানিকটা লজ্জা পেয়েছেন। তবে ভাবীর হাতে তেমন কিছুই হয়নি।একটু ভয়ই পেয়েছিলেন হয়তো। না তোমাকে আর রান্না করতে হবে না।আমিই রান্না করছি।হাতটা ঠান্ডা পানিতে ডুবিয়ে রাখো। —না আমার কিছুই হয়নি।তুমি যাও।আজ আমিই রান্না করবো। —তুমি পারবেনা একা একা। —ঠিকাছে তবে সাবধানে। তাদের ভালোবাসার গভীরতা দেখে অনেক অবাক হলাম। যা ই হোক।শেষে ভাবী রান্না করে আনলেন। মাছ ভাজি,মুরগি আর ভাত। ভাবীর রান্নার গুনগান না গেয়ে পারলাম না। সবই ঠিক আছে তবে ভাতটা নরম হয়েছে আর মুরগির মাংসের ঝালের কারনে দুইদিন কিছু মুখেই দিতে পারিনি। রান্না নয়,কান্না নয় হাসি খুশির মাধ্যমেই বেঁচে থাক তাদের ভালোবাসা।
Posted on: Sun, 28 Sep 2014 08:19:44 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015