বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের - TopicsExpress



          

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা ফারুক ও রশীদের সঙ্গে পেছনে লুকিয়ে থাকা নাটের গুরু জিয়াউর রহমানের সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে প্রখ্যাত মার্কিন সাংবাদিক লরেন্স লিফসুলজের ‘এনাটমি অফ এ ক্যু’ প্রতিবেদনটির সত্যতা প্রমাণিত হয় যখন ফারুক এবং রশীদ উভয়েই ১৯৭৬ সালের আগস্ট মাসে সানডে টাইমসের সাংবাদিক এন্থনি মাসকারেনহাসকে ১৫ই আগস্ট প্রসঙ্গে সাক্ষাতকার দেয় । লেটেন্ট ওয়ার্ডস অব মুজিব কিলিং... কর্নেল ফারুক এবং কর্নেল রসিদ বলছে কেন তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ছিল। এন্থনিঃ তোমরা কি তোমাদের মতাদর্শে প্রত্যাবর্তনের কথা মুজিবকে বোঝানোর চেষ্টা করে ছিলে ? রশিদঃ না ! আমাদের লেভেলের জুনিয়ার অফিসারদের সেই সুযোগ ছিল না। এন্থনীঃ মুজিবকে হত্যা না করে তোমাদের লক্ষ্য অর্জন কি সম্ভব ছিল না ? রশিদঃ না, তাঁর ভেতর সাধারন গনমানুষকে আন্দোলিত করার আশ্চর্য এক ক্ষমতা ছিল। তাকে জীবিত রেখে কোন অভ্যুথান বা ক্যু ঘটাতে গেলে অনেক সমস্যা মোকাবেলা করতে হতো। অধিকন্তু তিনি ছিলেন খুবই অভিজ্ঞ একজন রাজনীতিবিদ তাই তার যে কোন তৎপরতায় আমরা পরাজিত হতাম এবং দেশটাই হারাতাম । এন্থনীঃ তো তোমরা বলছ মুজিব বেঁচে থাকলে সাধারন গনমানুষকে নিয়ে তোমাদের এই ক্যু ব্যর্থ করে দিত ? রশিদঃ হ্যাঁ তাই হতো। তাই তাকে হত্যাই ছিল আমাদের মতাদর্শ পুনপ্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ। এসাইনম্যান্ট চুড়ান্ত করে হত্যাকারী জুনিয়র কর্নেলের এ দলটির তাদের নেতৃত্ব দেয়ার জন্য একই মতাদর্শের সবচেয়ে যোগ্য একমাত্র ব্যক্তি হিসাবে যাকে বিবেচনা করলো তিনি ছিলেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। ফারুকঃ আমাদের লীড করার জন্য জেনারেল জিয়াই ছিল মতাদর্শগত ভাবে যোগ্যতম ও বিশ্বস্ত ব্যাক্তি। তার সাথে দেখা করলাম ২০ শে মার্চ ১৯৭৫, জেনারেল জিয়া বললেন একজন সিনিয়র অফিসার হিসাবে আমি তোমাদের এই টিমে সক্রীয় হতে পারি না, তোমরা জুনিয়র অফিসাররা এই অংশটা চালিয়ে যাও। ফারুকঃ এর পর লনে হাটতে হাটতে বললাম, স্যার ! আমরা প্রফেশনাল সোলজার। আমরা প্রফেশনাল কীলারের মত কোন একক ব্যক্তিকে সার্ভ করবো না। আমরা আপনার এবং আমাদের মতাদর্শের বিজয় দেখতে চাই। এ মিশনে আপনার সমর্থন ও নেতৃত্ব অনিবার্য। এন্থনীঃ রশিদ ! মুজিবকে হত্যার পর তুমি আর ফারুক মুশতাকের সাথে দেখা কর। তোমরা কি আগে তার সাথে প্ল্যান করেছিলে ? রশিদঃ হ্যাঁ! আগষ্টের প্রথম সপ্তাহে মুশতাকের সাথে আমাদের সংযোগ ঘটানো হয়। পরে প্রস্তুতি শেষে ১৪ আগষ্ঠ ১৯৭৫ দেখা করি । এন্থনীঃ মুজিবকে হত্যার পরিকল্পনা তার সাথে আলোচনা করেছিলে ? রশিদঃ না ! এভাবে সরাসরি বলিনি তবে ইসারায় বুঝিয়েছি আপনি এবং আমরাদের মতাদর্শ পুনপ্রতিষ্ঠার জন্য মুজিবকে হত্যার সব প্রস্তুতি সম্পূর্ন হয়েছে এবং আমাদের গোষ্ঠির সকলে প্রস্তুত আছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে – এসাইনমেন্ট চূড়ান্ত করে হত্যাকারী জুনিয়র কর্নেলের এ দলটি তাদেরকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য একই মতাদর্শের সবচেয়ে যোগ্য একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে যাকে বিবেচনা করলো তিনি ছিলেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান । লিফশুলজও একই কথা বলেন, তার সেই সোর্সের বরাতে তিনি জানান, মোশতাক নয়, ফারুক রশীদদের ই্চ্ছে ছিলো এই অভ্যুত্থানকে একটা পূর্ণাঙ্গ সামরিক রূপ দিতে। অর্থাৎ মুজিব হত্যার পর একটি মিলিটারি কাউন্সিল গঠন করে দেশ শাসন। আর এর নেতৃত্বে জিয়াই ছিলো তাদের একমাত্র এবং গ্রহনযোগ্য পছন্দ। লিফশুলজের Anatomy of a coup থেকে জানা যায় - General Zia, who was then Deputy Chief of the Army, expressed continuing interest in the proposed coup plan, but also expressed reluctance to take the lead in the required military action. The junior officers had already worked out a plan, Rashid told Zia, and they wanted his support and leadership. Zia temporised. According to the account given by Rashid to Mascarenhas and confirmed by my source, Zia told him that as a senior officer he could not be directly involved but if they junior officers were prepared, they should go ahead. According to my unusual source, the Majors hoped right up until the end that Zia would take the lead in the coup. Their view was that the best option would be not to bring in Mustaque with whom they were in constant, yet discreet, contact. The best option from the Majors perspective was to establish a Military Council as the commanding authority after the coup. In fact, it was largely Rashid who was in charge of defining the options for his group. It was their hope that Zia would lead such a council. While the junior officers might have preferred a senior officers’ coup with Zia at the head, they secured the next best option. With General Zia’s neutrality or even tacit support assured, the junior officers could move ahead without fear that Zia would throw his forces against them at the crucial moment. ফারুকের ভাষ্যমতে – সুস্পষ্টভাবেই প্রথম পছন্দ ছিলো জেনারেল জিয়া যে তাদের মতই মনেপ্রাণে একই মতাদর্শের ছিল । তার সঙ্গে ১৯৭৫ সালের ২০ শে মার্চ তারা দেখা করে এবং চরম কৌশলী জিয়াউর রহমান সরাসরি সামনে আসতে না চেয়ে বিষয়টির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বললো – আমি সিনিয়র অফিসার, তাই তোমাদের সঙ্গে এই টিমে আমি সরাসরি সক্রিয় হতে পারিনা, তবে তোমরা জুনিয়র অফিসারেরা যদি তাকে হত্যা করতে চাও, তবে গো এহেড অর্থাৎ জিয়া মনে মনে চাইছিলো, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হোক, কিন্তু এই হত্যাকাণ্ড সফল হবে কি হবেনা সেটি নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত জিয়াউর রহমান নিজেকে আড়ালে রাখারই সিদ্ধান্ত নেন । এন্থনি মাসকারেনহাসের এ লেগাসি অব ব্লাডে এই ঘটনাগুলো উল্লেখিত হয়েছে । পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী বিশ্বখ্যাত সাংবাদিক লরেঞ্জ লিফসুলজ এবছর ফেব্রুয়ারী মাসে বাংলাদেশ সফরে এসে বলেছেন - Ziaur Rahman was in the shadow of the whole episode of August 15, 1975 because he was very much one of the main players of the game. হাইকোর্টের এক প্রশ্নের জবাবে লিফশুলজ বলেন, Ziaur Rahman could have stopped the assassination of Sheikh Mujibur Rahman because he (Zia) knew the plot যেহেতু জিয়াউর রহমান হত্যা পরিকল্পনার বিষয়টি জানতেন, সেহেতু তিনি চাইলে মুজিব হত্যাকাণ্ডকে রুখতে পারতেন কিন্তু সেটি তিনি করেননি । ১৯৭১ সালে গা বাঁচিয়ে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করা ভীরু কাপুরুষ জিয়াউর রহমান এখানেও তার গা বাঁচানো নির্লজ্জ কাপুরুষতা অব্যাহত রাখে সরাসরি বিষয়টিতে জড়িত না থাকার মধ্য দিয়ে। জিয়াউর রহমান যদি ২০শে মার্চের পরে বঙ্গবন্ধুকে ঘটনার সবকিছু খুলে বলতো, তাহলে একটা কথা ছিলো, কিন্তু এই ঘটনা গোপন রেখে কার্যত সে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে ইন্ধন যুগিয়েছে এবং গো এহেড বলে তার সমর্থন প্রদান করেছে উপরন্তু ঘটনা গোপন রেখে একজন মানুষকে মেরে ফেলায় ভূমিকা রেখেছে, অর্থাৎ নিশ্চিতভাবেই বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়ার সংশ্লিষ্টতা ছিলো এবং সে ১৯৮১ সালে মারা না গেলে আজকে তারও বিচার করা যুক্তিযুক্ত ছিলো । তবে ফারুক ২০শে মার্চের কথা উল্লেখ করলেও লিফশুলজ বলেন – my source described how both Mustaque and General Ziaur Rahman had been in contact and discussions with the Majors for more than six months prior to the actual coup. This individual had personally attended numerous meetings that Major Rashid had held separately with Zia and Mustaque. In his television interview with Anthony Mascarenhas, Rashid described a meeting with General Zia on March 20, 1975, in which a coup was discussed in detail. This meeting took place five months before the coup. My source attended this meeting with General Zia but claimed it was not the first in which plans for a coup were discussed. অর্থাৎ, ২০শে মার্চের আগেও জিয়া – মোশতাক – ফারুক গংদের মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্র মোতাবেক লিফশুলজ খবর পেয়েছেন বলে দাবী করেছেন। ২০শে মার্চই হোক আর তার আগেই হোক, মাসকারেনহাস ইন্টারভিউ থেকে সুস্পষ্ট যে তাদের মধ্যে মুজিব হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতা ছিলো । জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। Md Nazim Uddin Nayan
Posted on: Fri, 01 Aug 2014 20:29:16 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015