" বৃটিশ গুপ্তচরের - TopicsExpress



          

" বৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বৃটিশ ভূমিকা (২১) " [শয়তান যে মানুষকে নেক সুরতে ধোকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রীষ্টানরা। মসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী খ্রীষ্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা যার মূলে থাকে খ্রষ্টীয় বৃটিশ সম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন বৃটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিসর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য। "Confession of British Spy and British enmity against Islam" গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। যা মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে তার অনুবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ। ২১তম পর্ব ১৫। সাইয়্যিদগণ নবী বংশের অধঃস্থন পুরুষ, এ বিশ্বাসের প্রতি লোকজনকে সন্দেহ প্রবণ করবে। যারা কালো ও সবুজ পাগড়ী পরিধান করেন এবং সাইয়্যিদ নন তাদের সঙ্গে সাইয়্যিদগণকে একাকার করে ফেলতে হবে। এতে লোকজন সাইয়্যিদগণ সম্পর্কে হতবুদ্ধি হয়ে পড়বে এবং পরিশেষে সাইয়্যিদগণের সম্পর্কে আস্থা হারাবে। সাইয়্যিদগণের ধর্মীয় কর্তৃত্ব নষ্ট করতে হবে এবং মাথা থেকে পাগড়ী খুলে ফেলার ব্যবস্থা করতেহবে। যাতে নুবুওয়াতি আখলাক্ব নষ্ট হয় এবং ধর্মীয় কর্তৃত্বের বিষয়গুলো কখনও সম্মান না পায়। বিখ্যাত আলিম সাইয়্যিদ আবদ-উল-হামিক আরওয়াসি রহমতুল্লাহি আলাইহি ইস্তাম্বুল থাকতে আসহাব-ই-কিরাম নামে যে কিতাব রচনা করেন তাতে লিখেছেন, হযরত ফাতিমা-তুজ-জোহরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা এবং তাঁর মুবারক আওলাদগণ দুনিয়ার শেষ দিন পর্যন্ত আহলে বাইয়াত হিসেবে বিবেচিত হবেন। উনাদের মুহব্বত করা সবার জন্য ফরয। আহলে বাইতকে ভালবাসা, অন্তর দিয়ে কিংবা দৈহিকভাবে এবং সম্পদের মাধ্যমে সাহায্য করা, ভক্তি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা এবং উনাদের অধিকারের প্রতি নজর রাখা হলে যে কেহ ঈমানের সাথে ইন্তকাল করতে পারবে। সিরিয়ার হামা শহরে সাইয়্যিদগণের জন্য আইনী আদালতের ব্যবস্থা ছিল। মিশরের আব্বাসীয়া খিলাফতের সময় হযরত ইমাম হাসান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর বংশধরগণকে শরীফ বলা হতো। তারা সাদা পোশাক পরিধান করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়। আর হযরত ইমাম হুসাইন রদ্বিযাল্লাহু তায়ালা আনহুর বংশধরগণকে বলা হতো সাইয়্যিদ। তাঁরা সবুজ পোশাক পরিধান করতেন। এ সম্মানিত দুই পরিবারের যে সকল শিশু জন্মগ্রহণ করতেন তাদেরকে দু’জন স্বাক্ষী এবং একজন বিচারকের সামনে নিবদ্ধনকৃত করা হত। কিন্তু সুলতান আব্দুল মজিদ খান রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর শাসন আমলে বৃটিশদের দালাল রশিদ পাশা তার বৃটিশপ্রভুদের ইঙ্গিতে এই আইনী আদালত বাতিল করে। ফতওয়া-ই-হামিসিয়ায় বলা হয়েছে, ইসলামের প্রথম যুগে আহলে বাইতের যে কোন বংশধরদের শরীফ নামে অভিহিত করা হতো। যেমন- শরীফই আব্বাসী, শরীফ-ই জয়নালী ইত্যাদি। ফাতেমী শাসকরা ছিল শিয়া। তারা হযরত ইমাম হুসাইন এবং হযরত ইমাম হাসান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমার বংশধরগণকে শরীফ নামে অভিহিত করতেন। মিশরের তুর্কী শাসকের একজন আশরাফ শাবান বিন হুসাইন নির্দেশ দেন সাইয়্যিদগণ সবুজ পোশাক পরিধান করবেন যাতে উনাদের শরীফদের থেকে আলাদাভাবে চেনা যায়। এ প্রথা ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করে, যদিও ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে এর কোন মূল্য নেই।) ১৬। শিয়া সম্প্রদায়ের লোকেরা যেখানে শোখ প্রকাশ করে সেসব ধ্বংস করে দিতে হবে। কারণ তা হচ্ছে বিদয়াত এবং পরিত্যাজ্য। সেখানে মানুষের যাতায়াত বন্ধ করে দিতে হবে এবং ধর্ম প্রচারকদের সংখ্যা কমিয়ে আনতে হবে। ধর্মপ্রচারক এবং শোক প্রকাশের স্থানগুলোর মালিকদের উপর কর আরোপ করতে হবে। ১৭। স্বাধীনতার কথা বলতে গিয়ে সকল মুসলামনগণকে বোঝাবে যে প্রত্যেক মানুষই স্বাধীন। সে যা খুশী তাই করতে পারে। আমর বিল মারুফ এবং নাহি আনিল মুনকার ইসলামী শরীয়া অনুযায়ী ফরয নয়। উপরন্তু, তাদের মধ্যে এই বিশ্বাস প্রবেশ করিয়ে দিবে যে, খ্রিষ্টানরা তাদের নিজেদের বিশ্বাস নিয়ে থাকবে, আর ইহুদীরা তাদের নিয়ম মেনে চলবে কেউ কারো হৃদয়ে আঘাত করবে না। আমর বিল মা’রুফ এবং নাহি আনিল মুনকার হচ্ছে খলীফাদের কাজ। ১৮। মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধের জন্য জন্ম নিয়ন্ত্রণ এবং বহু বিবাহ নিষিদ্ধ করতে হবে। বিয়ে শাদীও থাকবে নিয়ন্ত্রিত। বলতে হবে, একজন আরবী কোন ইরানী বিয়ে করতে পারে না, একজন ইরানী পারবে না আরবীকে বিয়ে করতে। একইভাবে একজন তুর্কী পারবে না ইরানীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে। ১৯। ইসলাম ধর্ম প্রচার এবং মানুষের ইসলাম কবুল করা বন্ধে সর্বাত্মক চেষ্টা নিবে। এ ব্যাপারে প্রচারণা চালাবে যে, ইসলাম শুধু আরব দেশে সীমাবদ্ধ থাকার মতই একটি বিশেষ ধর্ম। প্রমাণ হিসেবে কুরআন শরীফের এই আয়াত শরীফের উদ্ধৃতি দিবে, কেবলম তোমাদের এবং তোমাদের মত লোকজনের জন্যই শুধু যিকির।” ২০। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো কেবল রাষ্ট্রের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে যাতে কোন লোকজন ব্যক্তিগত উদ্যোগে কখনও মাদরাসা বা এ জাতীয় প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম না হয়। মুসলমানদের মনে কুরআন শরীফের সত্যতা নিয়ে সন্দেহের উদ্রেগ ঘটাবে। কুরআন শরীফের অতিরিক্ত, সংশোধিত এবং বিকৃত বক্তব্য সম্বলিত অনুবাদ প্রকাশের ব্যবস্থা নিবে, অতঃপর বলবে, “কুরআন শরীফ বিকৃত হয়ে গেছে।” (নাউযুবিল্লাহ) কুরআন শরীফের কপিগুলো বেমানান এবং বেখাপ্পা। এক আয়াত শরীফের সঙ্গে অন্য আয়াত শরীফের মিল নেই। যে সকল আয়াত শরীফে ইহুদী, খ্রিষ্টান এবং বিধর্মীদের ব্যাপারে অপমানজনক কথা রয়েছে সেগুলো বাদ দিয়ে দেবে এবং জিহাদ, সৎকাজের আদেশ, অসৎ কাজের নিষেধ সে বিষয়গুলো বাদ দিবে। তুরস্ক, ফারসী এবং ভারতের প্রচলিত ভাষা এবং অন্যান্য আরো ভাষায় কুরআন শরীফের ভাষান্তর করবে যাতে আরব দেশের বাইরে অন্য দেশগুলোতে আরবী শিক্ষা বাধাগ্রস্ত হয় এবং আযান, নামায, দুয়া ইত্যাদি আরব দেশ ভিন্ন অন্য দেশগুলোতে আরবীতে না পড়া হয়। তদ্রুপ মুসলমানগণকে হাদীছ শরীফের ব্যাপারে সন্দেহ প্রবণ করে তুলবে। কুরআন শরীফের ভাষান্নতর, সমালোচনা এবং বিকৃত করার ব্যাপারে যে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে হাদীছ শরীফের ক্ষেত্রে একই পরিকল্পনা প্রয়োগ করবে। (ব্রিটিশদের এই অপচেষ্টা, শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। কেননা স্বয়ং আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন এই কুরআন মজীদের যে কোন প্রকার পরিবর্তন, পরিবর্ধন, বিকৃতি থেকে হিফাজত করে আসছেন। এটা আল্লাহ পাক-এর কোন ওয়াদা । হযরত ঈসা আলাইহিস্ সালাম-এর উপর নাযিলকৃত ইনজিল শরীফ রক্ষার ব্যাপারে আল্লাহ পাক-এর কোন ওয়াদা ছিল না। সে কারণেই বাইবেল নামে একটা ভুল গ্রন্থ রচিত হয়েছিল। সময়ে, সেই ভুল গ্রন্থটি বিভিন্নভাবে বিকৃত হয়েছে। পল নামে একজন ইহুদী পুরোহিত প্রথম, বাইবেলের বিবৃতি ঘটায়। সবচেয়ে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয় ৩২৫ খ্রিস্টাব্দে নিসিয়ায় অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে। ইস্তাম্বুলের প্রথম রোম সম্রাট কনষ্টাইনের নির্দেশে তিনশত নিরানব্বই জন পুরোহিতকে নিয়ে গঠিত সম্মেলনে এ কাজটি করা হয়। (ইনশাআল্লাহ চলবে)
Posted on: Mon, 26 Aug 2013 04:21:48 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015