মেজর খানের নির্দেশে পুরো - TopicsExpress



          

মেজর খানের নির্দেশে পুরো হলকে ঘিরে ফেলা হল। মাইক হাতে মেজর সকল মেয়েদের সারেন্ডার করে ট্রাকে উঠার নির্দেশ দিতেই ছাদ থেকে ভেসে আসলো এক দৃপ্ত নারীকণ্ঠ - “মেজর, অপেক্ষা করো -আসছি” ইতিহাস বিভাগের এম.এ শেষ বর্ষের ছাত্রী রওশন আরা। উপর থেকে নেমে বীরদর্পে মেজরের সামনে এগিয়ে গেলো সে। পরনে ছিল সাদা শাড়ি, কপালে লাল টিপ। লাল টিপটা যেন ধ্রুবতারার মতো জ্বল জ্বল করছিলো। স্পষ্ট করে মেজরকে দৃঢ় কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করলো- “Where is your tank?” মেজর আঙ্গুল উঁচিয়ে দেখিয়ে দিলো ট্যাংকটা। রওশন কাউকে কিছু না বলে আচমকা ঝাপিয়ে পরলেন ট্যাংকটার উপর।কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই বিকট শব্দে ধ্বংস হয়ে গেলো ট্যাংকটা। মেজর এবং ৫০০ সেনার সামনে রওশন মাটিতে মিলিয়ে দিল তাঁদের ট্যাংক। তাঁর কাপড়ের নিচে শরীরের সাথে বাঁধা মাইন দিয়ে। সেই সাথে নিজেও দেশের জন্য প্রাণ দিল বীরের বেশে। ট্যাংক ধ্বংসের শব্দ শুনে উপরে থাকা মেয়েরা গোলা বারুদ ছুড়তে থাকলো পাকিদের উপর । কিন্তু পাকিদের সরবরাহকৃত বারুদের তুলনায় তা ছিল খুবই অপ্রতুল । তাতে কি ! কিছুতেই হার মানেনি বাংলার মেয়েরা, ধরা দেয়নি হায়নাদের হাতে । যখন বারুদের মজুদ ফুরিয়ে এল ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়লো তাঁরা । বীর মায়েদের রক্তে রঞ্জিত হয় বাংলার মাটি । আমরা ছোটবেলা থেকে জেনে এসেছি আমাদের মা বোনেরা শুধু নির্যাতিত হয়েছিলো পাকি হায়নাগুলোর হাতে । কিন্তু বার বারই চেপে যাওয়া হয়েছে তাঁদের বীরত্বের কথা । এরকম একজন দুজন নয় হাজার হাজার রওশন আরার বীরত্বের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা । কিন্তু ৪৩ বছর পরে একটা বিষয় দেখে অবাক হয়ে যাই, ৪৩ বছর আগে যে বাঙালি মেয়েরা বন্দুক কিংবা বারুদ হাতে কুকুরের মতো মেরেছিল পাকিদের । আজ ৪৩ বছর পরে সেই বাঙালি মেয়েরাই আবার পাকি বংশোদ্ভূত মারখোর প্রজাতিকে “ম্যারি মি আফ্রিদি” প্ল্যাকার্ড হাতে চুম্বন ছুড়ে দেয় । ৪৩ বছর আগে যেই পাকিরা খামচে চিড়ে খুলে নিয়েছিলো সারে ৪ লাখ বাঙালি নারীর পোশাক, আজ ৪৩ বছর পরে সেই বাঙালি মেয়েদের আধুনিক পোশাক হয়ে উঠেছে পাকিস্তানি লন !! বড় অদ্ভুত প্রজন্ম আমরা । আধুনিক হবার বাসনায় শুকরের সাথে সহবাসের ফতোয়াকেও নির্বিঘ্নে মেনে নেই আমরা । সমস্যা কি ! “৭১” সে- তো অনেক পুরনো ঘটনা । - ফাতেমা জোহরা
Posted on: Sun, 19 Oct 2014 18:07:49 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015