মেডিকেলে - TopicsExpress



          

মেডিকেলে হিটলারের অবদানঃ অমানবিকতা ও মানব কল্যাণ হিটলারের গঠন করা নাৎসি বাহিনীর দ্বারা ইহুদি ধবংস করার অংশ হিসেবে তখনকার হিটলারের শুভাকাঙ্ক্ষী ডাক্তাররা মানুষের উপর কিছু ভয়ংকর ও অবিশ্বাস্য এক্সপেরিমেন্ট চালিয়েছিলো। ইতিহাসের পাতায় যাকে “নাৎসি হিউম্যান এক্সপেরিমেন্ট” বলে । সেই সব লোমহর্ষক কাহিনী শুনলে বর্তমান মনুষ্য জগত লজ্জায় মুখ লুকানোর জায়গা পাবে না। মানুষ যখন মানুষকে গিনিপিগের মত পিষে মরে, সে মরার আগে মানব জাতিকে কিছু দিয়ে যাক, সেই উদ্দেশ্যেই করা হয়েছিল এই সব অমানবিক কিন্তু মানব কল্যাণকর এক্সপেরিমেন্ট গুলো। হিটলার নিজেই এই সব মেডিকেল উদ্ভাবনের পৃষ্ঠ্যপোষক ছিলেন । ডাক্তার দলে ছিলেন- এডওয়ার্ড উইরথ, আরিবার্ট হেইম, কার্ল ব্রান্ডোট, জোসেফ মেনগেল প্রমুখ। এক্সপেরিমেন্টের সাবিজেক্ট ছিল ইউরোপে বসবাসকারী ইহুদী রা । সাথে কিছু সোভিয়েত ইউনিয়নের আটকা পরা রাজবন্দী ও জার্মানীর বেশী বয়স্ক মৃত্যু পথযাত্রী রোগীরা। পরীক্ষার জায়গা – জার্মানীর বার্লিন, মিউনিখ, ফ্রাঙ্কফুট প্রভৃতি শহর গুলো । সময় কাল- ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৪ সাল । কি কি বিষয়ে এক্সপেরিমেন্ট করে সফলতা পাওয়া গেছে , তার থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তুলে ধরা হলোঃ ১। হেড ইঞ্জুরি ও ব্রেইন ফাংশনাল এরিয়া ড্যামেজ (জীবিত মানুষের মাথার বিভিন্ন অংশ আঘাত করে অথবা ব্রেইন পার্ট রিমুভ করে হেড ইঞ্জুরির সাইন সিম্পটম আবিষ্কার । এতে করে ব্রেইন ইঞ্জুরি ও ব্রেইনের ব্রডম্যানস এরিয়া গুলো সহজে ব্যাখ্যা করা গেছে ) । ২) টুইন বেবীদের এক্সটার্নাল ও ইন্টার্নাল অঙ্গ সমতা ও বিষমটার কারন ( মনোজাইগোট ও ডাইজাইগোট এক্সপেরিমেন্ট)। ৩ ) নার্ভ, মাসল এন্ড বোন ট্রান্সপ্লান্টেশন এক্সপেরিমেন্ট ( এক মানুষের শরীরের এসব কেটে আরেক জন মানুষের শরীরে লাগানো হতো , রিজেকশন দেখার জন্য)। ৪) ফ্রিজিং এক্সপেরিমেন্ট ( মানুষের হাইপোথার্মিয়ার লিমিট ও ট্রিটমেন্ট জানার জন্য এই এক্সপেরিমেন্ট চালানো হয় । ৩০০ জন ভিকটিম কে বরফের পানির মধ্যে ৫ ঘন্টা রেখে শারীরিক পরিবর্তন ও হাইপোথার্মিয়া তে মৃত্যুর কারন বের করা হয়েছিলো । ১০০% পরীক্ষাধীন মানুষ মারা গিয়েছিলো । দ্বিতীয় বিশবযুদ্ধের পরে প্রকাশ হওয়া “মেডিকেল প্রব্লেমস এরাইজিং ফ্রম সি এন্ড উইন্টার” বইটি এক্সপেরিমেন্টেরই ফল ) । ৫) ম্যালেরিয়া এক্সপেরিমেন্ট ( প্রায় ১০০০ মানুষের উপর চালানো হয় এই গবেষণা । এদের সবাই কে ল্যাবে মশার কামড় খাইয়ে ম্যালেরিয়া বানিয়ে তাদের শরীরে ম্যালেরিয়ার সংক্রমন ও সেরেব্রাল ম্যালেরিয়া হওয়ার পাথওয়ে ও ট্রিটমেন্ট পদ্ধতি বের করা হয়। এতে প্রায় ৭০০ জনের মত ভিকটিম মারা গিয়েছিল) । ৬) ভ্যাক্সিন এক্সপেরিমেন্ট ( বিসিজি, হেয়াটাইটিস, টাইফাস, টাইফয়েড এর ভ্যাক্সিন, এন্টিসিরাম শরীরের উপর কি ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া করে , তা দেখার জন্য করা হয় এই এক্সপেরিমেন্ট) । ৭) সালফোনামাইড এক্সপেরিমেন্ট ( ক্লস্ট্রিডীয়াম পারফ্রিনিজেন্স, স্ট্রেপ্টোকক্কাস দিয়ে যে সব গ্যাংগ্রিন হয় , সেই গুলো তে সালফোনামাইড কতটুকু কার্যকর তা দেখার জন্যই এই গবেষণা চালানো হয় । আর্টিফিশিয়াল Wound করে সেখানে ব্যাক্টেরিয়া কালচার করা হতো । সাথে সালফোনামাইডের ডোজ ও ব্লাড কন্সেন্ট্রেশন measure করা হতো, এভাবেই পেনিসিলিনের পরেই সালফোনামাইড এন্টিবায়োটিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় )। ৮) সাগরের পানি পরীক্ষা ( প্রায় ৯০ জন ভিকটিম কে এক ক্যাম্পে আটকে রেখে শুধু সাগরের লবনাক্ত পানি দেয়া হয়েছিল। ঐ পানি খেয়ে সেলুলার ডিহাইড্রেশন ও সেল ডেথের মেকানিজম আবিষ্কার করা হয় । সাথে ভাইটাল অর্গান ফেইলুর ও সি ওয়াটার ড্রাউনিং এ মৃত্যুর মেকানিজম খুঁজে পাওয়া যায়) । ৯) বিষক্রিয়ার ডোজ আবিষ্কার ( বিভিন্ন প্রকার বিষ বিভিন্ন ডোজে খাওয়ানো হতো । আস্তে আস্তে ডোজ বাড়ানো হতো । মানুষের শরীরে বিভিন্ন বিষের লিথাল ডোজ বের করার জন্য এই পরীক্ষা করা হয় । সব ভিকটিমরাই মারা যায় । পরে পোস্ট মর্টেমও করা হয় । বিভিন্ন বিষের জন্য কোন কোন অরগানে ইফেক্ট পড়েছে সেটা দেখার জন্য) । ১০) স্টেরাইল এক্সপেরিমেন্ট ( যাদের জেনেটিক প্রব্লেম আছে অর্থাৎ কনজেনিটাল এনোমালি নিয়ে জন্মেছে তাদের সবাই কে বিভিন্ন ড্রাগ অথবা সার্জারী করে স্টেরাইল করে দেয়া হয়েছে। ৪ বছরের মধ্যে সাড়ে তিন লাখ মানুষ কে স্টেরাইল করে দেয়া হয়েছে প্রজন্ম রক্ষার সার্থে । মজার ফ্যাক্ট হলো- ৩,৫০,০০০ জনসংখ্যা তখন জার্মানীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ২% ছিলো) । পুনশ্চঃ যেকোনো মেডিকেল এক্সপেরিমেন্টের আগে সাবজেক্টের কাছে থেকে “ইনফরমড রিটেন কনসেন্ট” নিতে হয় । এটা “১৯৪৭ নুরেমবার্গ কোড অফ ইথিকস” দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু হিটলারের দ্বারা পরিচালিত নাৎসি হিউম্যান এক্সপেরিমেন্ট এ কোনো কনসেন্ট নেয়া হয় নাই। আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই সব কে “ ডক্টরস ট্রায়াল” বলে চালিয়ে দেয়া হয়েছে । আম্রিকার হ্যারি ট্রুম্যান ও জার্মানী চ্যান্সেলর এর অনুমতি সাপেক্ষে কার্ল ব্রান্ডোট ও অন্যান্য ২২ জন ডাক্তারের সাজা মওকুফ করা হয় , ৯ ডিসেম্বর ১৯৪৬ সালে। তারই রেশ ধরে গড়ে উঠে “রোগী সুরক্ষা কবচ” হিসেবে খ্যাত “নুরেমবার্গ কোড” #Imdadul Haque Himu
Posted on: Tue, 07 Oct 2014 05:02:20 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015