মহানবী স সম্পর্কে - TopicsExpress



          

মহানবী স সম্পর্কে মওদূদীর ওপর মিথ্যা অভিযোগঃ মহানবী স সম্পর্কে মওদূদীর ওপর মিথ্যা অভিযোগ। আমাদের প্রিয়নবী (স) এর ওপর ঈমানের মানদণ্ড এবং তার সুন্নাতের মর্যাদা নিয়ে গোটা হাদিস অস্বিকার কারীদের সাথে মাওলানা মওদূদীর যে তুমূল লেখালেখি চলতো, সেই লেখাগুলো যাদের পড়ার সৌভাগ্য হয়েছে তাদের কাছে হাদিস অস্বিকারকারীরা শিশুতুল্য মনে হবে। তার লেখা সুন্নাতে রাসুলের আইনগত মর্যাদা বইটি তার নবী প্রেমের অপুর্ব নমুনা। অথচ তার বিরুদ্ধে বলা হয় তিনি হাদিস অস্বিকার করেছেন। সোবহানাল্লাহ ! মিথ্যার একটি সীমা থাকা উচিত। কাদিয়ানীদের বিরুদ্ধে খতমে নবুয়াতের পক্ষে লিখিত কাদিয়ানী সমষ্যা বইটির জন্য ততকালিন নবী প্রেমী (??) সরকার তাকে ফাসিঁর আদেশ দেয়। বহুদিন জেলে কাটিয়েছেন এই বই লেখার অপরাধে। কিছু কিছু আলেম যদিও মুচকি হেসেছিলেন কিন্তু গোটা দুনিয়ার আলেম সমাজ প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। বায়তুল হারামে খোতবায় মওদূদীর মুক্তির জন্য দোয়া করা হয়, সৌদি আরব সহ আরব বিশ্বেস সকল ওলামারা এক বাক্যে মওদূদীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করতে থাকেন। ও আই সি সহ সকল দেশের ইসলামী আন্দোলনের নেতারা যৌথভাবে তার মুক্তি দাবি করেন। কেবল মাত্র কিছু কংগ্রেস পন্থী আলেম ছাড়া। মওদূদীর এই জনপ্রিয়তা কিছু আলেমের কাছে ইর্ষণীয় ছিল। উপায় না দেখে সরকার তাকে ক্ষমা প্রার্থনা করার প্রস্তাব করে। তাদের প্রস্তাব শুনে মওদূদী এক বাক্যে বলে দেন যে, আল্লাহর রাসুল শেষ নবী, তার পরে যে ব্যক্তি নবী দাবি করবে সে কাজ্জাব, এই কথা বলা বা লেখা যদি অপরাধ হয় তাহলে আমি এরকম অপরাধ প্রতিদিনে হাজার বার করতে রাজি আছি। কেউ ইচ্ছে করলেই কারো মৃত্যুর পরোয়ানা লিখতে পারেনা, মৃত্যুর ফয়সালা আসমানে হয়, জমিনে নয়। তিনি আরো ঘোষনা করেন যে, আমি কোন অপরাধ করিনি, তাই আমার পক্ষ থেকে আমার পরিবার বা জামায়াতের কেউ যেন কোন প্রকাশ ক্ষমা প্রার্থনা না করে। ইতিহাস স্বাক্ষী দেয় আল্লাহ তার হেফাজত করেছেন। বাতিলরা তাকে কষ্ট দিয়েছে ঠিকই কিন্তু হত্যা করতে পারেনি। এভাবে জেলে থাকা অবস্থায়ই তার মুত্রনালীতে পাথর হয়ে প্রেসাব আটকে যায়। তাকে ডাক্তারের কাছে নিতে চাইলে তিনি অস্বিকার করে বলেন যে, কোন তাগুতের দেয়া চিকিৎসা তিনি নেবেন না। তার সাথে জেলে থাকা একজন স্বাক্ষ্য দান করেন যে, রাতে তায়াজ্জুতে আমি তাকে এই কথা বলতে শুনেছি , তিনি বলছিলেন যে, হে আল্লাহ আমি আমরা অক্ষমতা তোমার কাছেই পেশ করা পছন্দ করি, তুমি আমাকে শেফা দান করো। তার দোয়ার বদৌলতে সেদিন মুত্রনালী থেকে পাথর সরে যায়। বিষয়টি মাওলানা নিজেও দোয়ার উপকারীতা হিসেবে তাফহিমুল কোরআনের এক জায়গায় উল্লেখ্য করেছেণ। মওদূদীর কিছু প্রশংসা হয়ে গেল বলে দুঃখিত। কথা গুলো এ কারনে বলতে হচ্ছে যে, হুজুর (স) যে চব্বিশ ঘন্টাই অহির নিয়ন্ত্রনে থাকতেন এই প্রমান করার বিতর্কে সম্ভবত কয়েক শত প্রবন্ধ লিখেছেন মাওলানা মওদূদী। অথচ তার বিরদ্ধে স¤পূর্ণ অন্যায় ভাবে রটানো হয়েছে তিনি নবী করিম স কে গোনাহগার বলেছেন। তাকে নিষ্পাপ মনে করেন না। কেউ যদি যেনে বুঝে সত্যকে গোপন করার চেষ্টা করে তাহলে আল্লাহও তাকে পথ দেখান না। এরা তাদের রচিত মওদূদী বিরোধী ফতোয়া ও কিতাব গুলোতে বার বার এই দাবি করে এসেছেন যে, মওদূদী আল্লাহর রাসুল (স) কে মাসুম বা নিস্পাপ মনে করেন না। যুক্তি হিসেবে তারা কত গুলো বাক্য জোড়া দিয়েছেন, আর সাথে সাথে নিজেদের কিছু কথাও ডুকিয়ে দিয়েছে এবং সেগুলো তাদের ফতোয়া এবং মওদূদী বিরোধী বইতে ডুকিয়ে তাদের শাগরেদ দের হাতে তুলে দিয়েছেন। অমনি শাগরেদরাও ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার মতো কিছু না বুঝেই লাফা লাফি শুরু করে দিয়ে মওদূদীকে কাফের ফতোয়া দিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ সব কারনে হুজুর স কে নিয়ে মওদূদীর প্রতি যতগুলো মিথ্যে অভিযোগ আনা হয়েছে এবং তার বই থেকে যে সকল বাক্যকে আগে পিছে কেটে অর্থের পরিবর্তন করানো হয়েছে, তার কিছু নমুনা আমি দেখাবো। এতে পাঠক অন্যান্য বিষয়গুলো সম্পর্কে আন্দাজ করে নিতে পারবেন, কেননা জ্ঞানীর জন্য ইশারাই যথেষ্ট। যে সকল বিষয়গুলো কে অতি গুরুত্বের সাথে প্রচার করা হয়েছে সেগুলোর জন্য আমরা ধারা বাহিক ভাবে একটি একটি করে জবাব দেবো। যে সমস্ত মিথ্যাচারের কিছু গুরুত্ব্য রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো সুরা নসরের ব্যাখ্যা। এ অভিযোগের বিরুদ্ধে আমরা কোন তাহকিকি আলোচনায় যাওয়ার দরকার মনে করছি না। কারন এই একই তাফসির বহু কিতাবে রয়েছে। আমরা কেবল প্রমান করে দেবো যে, তারা কিভাবে মিথ্যাচার করে মওদূদীর তাফসিরকে বিকৃত করে নিজেদের ঘৃন্য মতলব হাসিল করার চেষ্টা করেছেন। প্রথম তারা সুরা নসরের শেষ আয়াতের ব্যাখ্যা কে দলিল বানিয়েছেন। আমাদের ফেসবুকের এক পন্ডিত তার ওয়েব সাইডে এবং এক মোনফিক তার সম্প্রতিক একটি পোষ্টের ছবিতে এই মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে নিজেদের কে খুব ভাগ্যবান মনে করছেণ। সুরা নসরের শেষ আয়াতের ব্যাখ্যাকে এ সকল জালিমরা কিভাবে বিকৃত করেছে তার নমুনা দেখুন। তারা লিখেছে মওদূদী বলেছেন- নবী করিম (স) ভূল ত্রুটি করেছেন তাই তাকে ক্ষমা চাইতে হবে। (সুরা নসরের তাফসির-তাফহিমূল কোরআন।) “আরেকজন লিখেছেন-মওদূদী বলেছেন, আল্লাহর রাসুলকে বলা হলো যা কিছু ভুল ত্রুটি করেছ, এবং দ্বীনের কাজে যা কিছু অপূর্ণতা রয়ে গিয়েছে তার জন্য আল্লাহর কাছে তওবা করো- অর্থ্যাৎ আল্লাহর নবী দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিতে পারেন নি, তিনি গোনাহ করেছিলেন।” প্রথমেই খেয়াল করুন যে, তারা তাফসিরের হাওলা দিয়ে সামান্য একটি বাক্য উল্লেখ্য করেছে, অতপর নিজেদের ব্যাখ্যা প্রকাশ করে নিজেদের পক্ষ থেকে কিছু শব্দ যোগ করে দিয়ে প্রমান করতে চাচ্ছে যে, মওদূদী কি নিয়তে তাফসির লিখেছেন। কারো নিয়তের ওপর এভাবে নগ্ন হামলা মনে হয় শয়তানও করতে পারে না। যদি মওদূদীর তাফসির তাদের কাছে এতই আপত্তিকর মনে হয়েছিল, তাহলে তারা পুরো কথাটি পাঠকের সামনে রাখার সাহস কেনো করলো না ? অবাক করা বিষয় হচ্ছে তারা জেনে শুনে সত্যকে গোপন করেছে এবং এমন ভাবে কথাটিকে উপস্থাপন করেছে যাতে মওদুদী সম্পর্কে সবার ধারণা খারাপ হয়ে যায়। অথচ মওদূদীর তাফসির যে কারো হাতে আছে তিনি খুলে দেখতে পারেন। এ রকম ডাহা মিথ্যা কথা মওদূদীর বিরুদ্ধে কেবল ইয়াহুদীরাই রটাতে পারে, কোন আল্লাহ ভীরু মুসলমানের কাছে এরকম মিথ্যাচার আশা করা যেতে পারেনা। প্রথমে জানা দরকার যে, সুরা নসরের তাফসিরে সাহাবায়ে কেরাম এবং উম্মাতে আলেমরা কি বলেছেন। প্রত্যেকটি সহিহ তাফসিরের রায় হচ্ছে সুরা নসর হচ্ছে হুজুর (স) এর জন্য সংকেত যে, তার নবুওয়াতীর দায়িত্ব্য পালনের সময় শেষ হয়ে গেছে। দ্বীন যখন বিজয়ী হবে তখন তার দুনিয়ায় থাকার সময়ও শেষ হয়ে যাবে। বিষয়টি নিয়ে সাহাবাদের মজলিশে হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) কে জিজ্ঞেস করেন যে, এ সুরার তাফসির কি ? হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস বলেন যে, এ সুরায় হুজুর স এর তিরোধানের ইংগিত রয়েছে। এ কারনে সুরা শেষ কয়টি আয়াত পরিস্কার করে দিচ্ছে হুজুর (স) এর মাধ্যমে উম্মাত কে বিজয় পরবর্তি সময় করনীয় কিছু আমল শিক্ষা দেয়া প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। তাদের দ্বারা বিরাট কোন খেদমত হয়ে গেলে তারা কি ধরনে ভুমিকা নেবে তাও শিক্ষা দেয়া হয়েছে। এ সুরা অন্তনিহীত শিক্ষা বর্ননা করতে গিয়ে উম্মাতের বড় বড় ওলামাদের মতো মাওলানা মওদূদীও স্বাধীন রায় দিয়েছেন। মাওলানা মওদূদী সুরা নসরের যে তাফসির পেশ করেছেন, ঠিক হুবুহ তাফসির রযেছে বিখ্যাত তাফসির গ্রন্থ্য তাফসিরে জালালাইনে। সুরা নসরের শেয় আয়াতের যে ব্যাখ্যা মওদূদী লিখেছেন সেই হাওলা তিনি তাফসিরে জালালাইন থেকে কোড করেছেন। যাদের হাতে তাফসিরে জালালাইন আছে তারা খুলে দেখুন। কওমী প্রত্যেকটি মাদ্রাসায় তাফসিরে জালালাইন পড়ানো হয়। সেখানে কি তাফসির করা হয়েছে তার কিছু হাওলা দেখে নিয়ে তারপরে মওদূদীর বিরুদ্দে অভিযোগ আনলে পরে তার কিছুটা সততা থাকতো। কিন্তু যেই তাফসির তারা তাদের ছাত্রদের কে দারস দেয়, সেই একই তাফসির লেখার অপরাধে মওদূদীর ওপর নবীর সমালোচনার অভিযোগ আনে। অবাক করা তাদের তাকওয়ার মূলনীতি। মওদূদী বিরোধীদের কাছে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, তাদের দারসের তালিকায় যেই তাফসিরটি এক নাম্বারে আছে, সেই তাফসিরের লেখকের হাওলা কোড করে কোন তাফসির করার কারনে যদি মাওলান মওদূদী কাফের বা গোমরাহ হয়ে যান, তাহলে তাফসিরে জালালাইনের লেখক কিভাবে ঈমানদার থাকেন এবং সেই তাফসির কিভাবে কওমী মাদ্রাসায় পড়ানো হয়। এ সকল ফতোয়া দেওয়ার আগে আপনাদের একবারও কি ভাবার সুযোগ হয়নি যে, কুফরি ফতোয়ার বান ঘুরে ফিরে আপনাদের ঘারে ফিরে আসার সম্ভবনাও থেকে যায়। বলে রাখা দরকার যে, তাফসিরের জালালাইন একটি বিশুদ্ধতম তাফসির হিসেবে উম্মাতের বড় বড় ওলামারা গ্রহণ করেছেন। এই বিষয়ে মাওলানা মওদূদীকে একজন প্রশ্ন করেন যে, তাফসিরের ক্ষেত্রে আপনি কি নীতিমালা মেনে চলেন। তাফসির লিখতে পূর্ববর্তি কোন তাফসিরের সাহায্য নেন কিনা ? ( উত্তরটি দেখার জন্য রাসায়েলে মাসায়েল ২য় খন্ড দেখতে পারেন) তিনি বললেন তাফসির লিখতে বসলে আমি আয়াতটি কে নিজের মতো করে কয়েক বার পাঠ করি, তারপ দেখার চেষ্টা করি কোরআন থেকে কোন দলিল খুজে পাওয়া যায় কিনা, সম্ভব না হলে আমি হাদিসের দিকে প্রত্যাবর্তন করি। এ ছাড়াও পূর্ববতি কয়েক জন মনীষির তাফসির আমার সামনে খোলা থাকে। তাফসির গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তাফসিরে জালালাইন, তাফসিরে ইবনে কাসির, তাসফিরে আহকামুল কোরআন, তাফসিরে রুহুল মায়ানী এবং আল্লামা ফখরুদ্দীন রাজির তাফসির কবির। কেউ একজন তাকে প্রশ্ন করেন যে, তাফসিরে রুহুল মায়ানী এবং তাফসিরে কাসির থেকে বেশি বেশি হাওলা দেয়ার মানে কি ? তিনি বলেন- “এই তাফসির গুলোতে সহিহ হাদিসের হাওলা বেশি। তারা জয়িফ হাদিসের ওপর ভিত্তি করে কোন তাফসির করা পছন্দ করেননি। যদিও তাদের তাফসিরে দু চারটি জয়িফ হাদিস পাওয়া অসম্ভব কিছু নয়।” আমরা তার কথার সততা খুজে পাই তার রচিত তাফহিমুল কোরআন খুলে দেখলে। অসংখ্য আয়াত এমন রয়েছে যেখানে তিনি অসংখ্য মোফাস্সিরের রায় নকল করেছেন, তারপর স্বাধীন ভাবে যে কোন রায়ের পক্ষ বা বিপক্ষ নিয়েছেন। হাদিসের উপস্থিতিতে কোন নিজস্ব তাফসির করতে অস্বিকার বলেন- নীতিগত ভাবে একথা হক পরস্ত যে, হাদিসের উপস্থিতিতে অন্য কোন তাফসির করা বৈধ নয়। (তাফসিরের তাফহিমুল কোরআন-সুরা সাদের তাফসির দেখুন) অথচ জালিমরা প্রচার করে তিনি মনগড়া তাফসির করেছেন। কারণ তিনি তাফসিরের উপসংহার লিখতে গিয়ে বলেন- আমি যেভাবে কোরআন বুঝতে পেরেছি ঠিক সেভাবে লিখার চেষ্টা করেছি।- এই শব্দ কয়টি থেকে তারা দলিল পেয়ে গেল যে, মওদূদী নিজের মতো বুঝে তাফসির লিখেছেন। শুরু করে দিল হাঙ্গামা। অথচ লেখক নিজেই পরিস্কার করে দিয়েছেন যে তিনি কোরআন কিভাবে বুঝেছে। তারা হয়তো বলতে চাচ্ছেন যে, মওদূদী যা বুঝেছেন তার বিপরিত কথা লিখলেই বুঝি তাফসিরটি শুদ্ধ হয়ে যেত। তিনি যা বুঝেছেন তা না লিখলে তিনি লিখবেন কি, যেটা বুঝেন নি সেটা, তাহলেই তো সেটা মনগড়া তাফসির হতো। কোন মুফাস্সির যা বুঝেন তাই লিখেন। এই আহাম্মকরা মওদূদী বিরোধীতায় এতটা অন্ধ যে, সামান্য একটি সহজ কথা বুঝার জ্ঞান হাড়িয়ে ফেলেছে। প্রশ্ন হতে পারে তিনি কোরআন কিভাবে বুঝলেন ? সেটাতো তিনি তরজমানুল কোরআনের এক প্রশ্নের জবাবে দিয়েছে যা আমরা একটু আগে উল্লেখ করেছি। মানুষ যখন কোন বই লেখে তখন সে তার মনের মতো করেই ভাব প্রকাশ করে। অতএব মওদূদী যখন তাফসির লিখবেন তখন তার মনের মতো করেই তো পাঠককে বুঝাবেন এতে দোষের কি হলো তা আমি বুঝতে পারছি না। কোন লেখক যদি তাফসির লিখতে বসে কেবল হাওলা লিখেই দায়িত্ব্য শেষ করলেন, তাহলে তার তাফসির না লিখে বলা উচিত অমুক তাফসির খন্ডটি পড়ে দেখুন। অযথা সময় নষ্ট করে কি লাভ। সুরা নসরের যে তাফসির তিনি জালালাইন থেকে কোড করলেন তা কিন্তু আমাদের কওমী মাদ্রাসার পাঠ্য সুচির তালিকা ভুক্ত। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে পূর্ব বর্তি কোন বিশেষঞ্জ মোফাস্সিরের মত অনুসরন করার কারনে যদি মওদূদী গোমরাহ হয়ে যায় তাহলে তো দোষ জালালাইন কিতাবের যা এখনো দেওবন্দের মুরব্বিদের প্রিয় কিতাব। দেওবন্দ সহ সকর কওমী মাদ্রাসা গুলোতে এবং আমার জানা মতে আলীয়া মাদ্রাসাতেও তাফসিরে জালালাইন পড়ানো হয়। তাহলে কি তারা বুঝাতে চাচ্ছেন যে, দেওবন্দের আলেমরা গোমরাহ, বাতিল, অশুদ্ধ মনগড়া তাফসিরের কিতাবের মাধ্যমে তাফসিরের সবক দিচ্ছেন ? কে দেবে এই উত্তর ? এবার আমরা দেখবো যে, জালালাইন শরীফে যে তাফসির করা হয়েছে তা কি ভাবে বলা হয়েছে এবং মওদূদী তা কিভাবে নিজের ভাষায় বর্ননা করেছেন। সুরা নসরের শেষ আয়াতের শিক্ষা বা তাৎপর্য বুঝাতে গিয়ে মাওলানা মওদূদী লিখছেন-- “ অর্থাৎ তোমার রবের কাছে দোয়া করো। তিনি তোমাকে যে কাজ করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন তা করতে গিয়ে তোমার যে ভুল - ত্রুটি হয়েছে তা যেন তিনি মাফ করে দেন। ইসলাম বান্দাকে এ আদব শিষ্টাচার শিখিয়েছে। কোন মানুষের দ্বারা আল্লাহর দীনের যতবড় খিদমতই সম্পন্ন হোক না কেন , তাঁর পথে সে যতই ত্যাগ স্বীকার করুক না এবং তাঁর ইবাদাত ও বন্দেগী করার ব্যাপারে যতই প্রচেষ্টা ও সাধনা চালাক না কেন , তার মনে কখনো এ ধরনের চিন্তার উদয় হওয়া উচিত নয় যে , তার ওপর তার রবের যে হক ছিল তা সে পুরোপুরি আদায় করে দিয়েছে। বরং সব সময় তার মনে করা উচিত যে, তার হক আদায় করার ব্যাপারে যেসব দোষ - ত্রুটি সে করেছে তা মাফ করে দিয়ে যেন তিনি তার এ নগণ্য খেদমত কবুল করে নেন। এ আদব ও শিষ্টাচার শেখানো হয়েছে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে । অথচ তাঁর চেয়ে বেশী আল্লাহর পথে প্রচেষ্টা ও সাধনাকারী আর কোন মানুষের কথা কল্পনাই করা যেতে পারে না। তাহলে এ ক্ষেত্রে অন্য কোন মানুষের পক্ষে তার নিজের আমলকে বড় মনে করার অবকাশ কোথায় ৷ আল্লাহর যে অধিকার তার ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল তা সে আদায় করে দিয়েছে এ অহংকার মত্ত হওয়ার কোন সুযোগই কি তার থাকে ৷ কোন সৃষ্টি আল্লাহর হক আদায় করতে সক্ষম হবে , এ ক্ষমতাই তার নেই। ” এই হচ্ছে মাওলানা মওদূদীর কৃত তাফসির যা তিনি তাফসিরে জালালাইন থেকে কোড করেছেন। একই তাফসির রয়েছে রুহুল মায়ানী সহ বিখ্যাত তাফসির সমুহে। কিন্তু অবাক করা বিষয় হচ্ছে এই তাফসির করে কেবল মাত্র মওদূদী গোমরাহ হয়ে গেছেন, অন্যরা ঈমানদার বুজুর্গ হয়ে আছেন। তাছাড়া লক্ষ করুন যে, মওদূদীর তাফসিরের কোথাও বলা হয়নি যে, নবীকে বলা হচ্ছে তুমি ভূল করেছো তাই তোমাকে ক্ষমা চাইতে হবে। বেচারা মিথ্যাচার করতে গিয়ে কৌশল খাটানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। মহান আল্লাহর এ ফরমান মুসলমানদের এ শিক্ষা দিয়ে আসছে যে , নিজের কোন ইবাদাত , আধ্যাত্মিক সাধনা ও দীনি খেদমতকে বড় জিনিস মনে না করে নিজের সমগ্র প্রাণশক্তি আল্লাহর পথে নিয়োজিত ও ব্যয় করার পরও আল্লাহর হক আদায় হয়নি বলে মনে করা উচিত । এভাবে যখনই তারা কোন বিজয় লাভে সমর্থ হবে তখনই এ বিজয়কে নিজেদের কোন কৃতিত্বের নয় বরং মহান আল্লাহর অনুগ্রহের ফল মনে করবে। এ জন্য গর্ব ও অহংকারে মত্ত না হয়ে নিজেদের রবের সামনে দীনতার সাথে মাথা নত করে হামদ , সানা ও তাসবীহ পড়বে এবং তাওবা ও ইসতিগফার করতে থাকবে। এভাবে তার মনের মধ্যে এই ধারণা রাখতে হবে যে, তার দ্বারা খেদমতটি পরিপূর্ন ভাবে করা সম্ভব হয়নি, হয়তো কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকতে পারে। মুসলমানদের জন্য এই শিক্ষনীয় বিষয়টিকে তার রাসুলের (স) কর্মের মাধ্যমে শিখানো হলো। কারণ উম্মাতের জন্য নিজে আমল করে শিখানোই রাসুলদের দায়িত্ব্য। এ ব্যাপারটিকে টানা হেচরা করে প্রমান করার চেষ্টা করা হয়েছে যে, মওদূদীর মতে মহানবী (স) কতৃক ভুল ত্রুটি হয়েছিল, তিনি দ্বীন কে পরিপূর্ণ করতে পারেন নি। মিথ্যা বলার একটি সীমা থাকা উচিত, কিন্তু এসকল হযরতগন তাদের সেই সীমা পর্যন্ত পাড় হয়ে গেছেন। ব্যাপারটি ঠিক তেমন যেমন আমরা আমাদের কোন মেহমান কে বিদায় দেয়ার কালে বিনীত ভাবে বলি যে, আপনাদের খেদমতে কোন প্রকার ত্রুটি বিচ্যূতি হয়ে থাকলে বা খেদমতে কোন প্রকার অপূর্ণতা থেকে থাকলে দয়া করে ক্ষমা করে দিন, আমরা আপনাদের খেদমত পরিপূর্ন ভাবে করতে পারিনি। এসব কাকুতি যখন কোন মানুষের সাথে করা হয় তখন কোন পাগলে এ কথা বলতে পারবে না যে, এগুলো অপরাধের স্বিকৃতি দেযা হয়েছে। এখানে ভুল ত্রুটি স্বিকার করা হচ্ছে না, বরং “হয়তো” শব্দটি দিয়ে আশংকা ব্যক্ত করা হয়েছে। যদিও দেখা যায় যে, আমরা না খেয়ে তাদেরকে খাইয়েছি, নিজেদের বিছানার চাদর তাদের জন্য দিয়েছি, তাদের খেদমতে কোন রূপ ত্রুটি আমরা করিনি, তারপরেও আমরা এমন বলি। আর এরূপ বলাতে মেহমানের কাছে আমাদের সম্মান কমে যায় না বরং প্রমান হয় যে, আমরা তাদের খেদমতে একান্ত আন্তরিক ছিলাম এবং এটাও প্রমান হয় না যে আমরা আসলেই অপরাধ স্বিকার করে নিচ্ছি বরং তাদের কাছে আমাদের সম্মান বেড়ে যায়। ঠিক তদ্রুপ আল্লাহর রাসুল (স) যদি তার তেইশ বছরের জিন্দেগীতে খোদার দ্বীনের খেদমত করে বিদায় বেলা আল্লাহর কাছে দোয়া চান যে, হে আমার রব ! তোমার দ্বীনের খেদমতে যদি আমার দ্বারা কোন ত্রুটি বিচ্যুতি হয়ে থাকে, তোমার দ্বীনের কাজে আমার পক্ষ থেকে বা আামাদের পক্ষ থেকে কোন অপূর্ণতা থেকে থাকলে আমাকে ক্ষমা করে দিও। এতে অবশই রাসুলুল্লাহ (স) সম্মান কমে যায় না বরং বেড়ে যাবে এবং তার উম্মাতরা শিক্ষা পাবে যে, কোন কাজেই নিজের কীর্তি মনে করা ঠিক নয় বরং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রাথর্না করাই তার রাসুলের সুন্নাত। এ কারনে আমরা দেখি যে, শেষ দিন গুলোতে হুজুর (স) বেশি বেশি ইস্তেগফার করেছেণ। এ সব দোয়া দ্বারা একথা প্রমান হয়না যে, হুজুর স তার ত্রুটি বিচ্যুতির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। এটা তার দায়িত্ব্য ছিল যে তিনি যেন বিদায় বেলা বেশি বেশি করে তসবিহ এবং ইস্তেগফার করেন এবং তিনি করেছেন বলেও হাদিসে রয়েছে। হাদিসে এসেছে- হযরত উম্মে সালামা বলেন : রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনের শেষের দিকে উঠতে বসতে চলতে ফিরতে তাঁর পবিত্র মুখে সর্বণ একথাই শুনা যেতো : --- আমি একদিন জিজ্ঞেস করলাম , হে আল্লাহর রসুল ! আপনি এ যিকিরটি বেশী করে করেন কেন ? জবাব দিলেন , আমাকে হুকুম দেয়া হয়েছে , তারপর তিনি এ সূরাটি পড়লেন । হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা ) রেওয়ায়াতে করেন , যখন এ সূরাটি নাযিল হয় তখন তিনি বেশি বেশি ইস্মেগফার করতে থাকেন : ইবনে আব্বাস (রা ) বলেন , এ সূরাটি নাযিল হবার পর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আখেরাতের জন্য শ্রম ও সাধনা করার ব্যাপারে খুব বেশী জোরে শোরে আত্মনিয়োগ করেন। এর আগে তিনি কখনো এমনভাবে আত্মনিয়োগ করেননি। (নাসায়ী ,তাবারানী ,ইবনে আবী হাতেম ও ইবনে মারদুইয়া )। উপরোক্ত তাফসিরের বিষয়ে হয়তো কারো দ্বীমত থাকতে পারে এবং থাকাটাই স্বাভাবিক। কেননা, তাফসির শাস্ত্রের এমন কোন কিতাব নেই যেখানে মতবিরোধ বা ইখতেলাফ না হয়েছে। তাই বলে এক জন আরেক জনের কথা থেকে নিজের মতো করে অর্থ উদ্ধার করে তার বিরুদ্দে ফতোয়া দেয়ার মতো নিকৃষ্ট কাজ আমাদের সম্মানিত আলেমদের কেউ করেননি, যারা এগুলো করে তারা ইয়াহুদী আর মুশরিকদের দালাল। তারা মুসলমানদের ঐক্যকে নিজেদের জন্য মরন তুল্য মনে করে। তাদের ধর্ম ব্যবসার দোকান গুলির আতংক ছিলো মওদূদীর দাওয়াত ও কর্মপদ্ধতি। তারা কখনো চায়নি তাদের তাসাউফ মার্কা তাফসির গুলো ছেড়ে দিয়ে মওদূদী আন্দোলন মুখী তাফসির সাধারন জনগন পড়তে শিখুক। মওদূদীর তাফসির পড়ার পড়ে একজন সাধারন শিক্ষিত মানুষের মনে কোরআন বুঝার যে প্রেরন সৃষ্টি হয় তা অন্যান্য তাফসিরের ক্ষেত্রে একে বারে বিরল। বিষয়টি কে আমরা হিংসার দৃষ্টিতে না দেখে নিজে যাচাই করলেই দেখতে পাবো। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের হক্কানী ইসলামী স্কলারাও তাফসিরে তাফহিমুলের বিষয়ে একই মত পোষন করেছেন। সৌদি আরবের মদীনা এবং বিখ্যাত আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য তালিকায় রয়েছে এই তাফসির। যারা কারো কথায় প্রভাবিত হয়ে এই তাফসির সম্পর্কে মনগড়া তাফসিরের অভিযোগ আনেন তারা যেন তাদের কমেন্টে সেই বিষয় গুলি তুলে ধরেন। পরবর্তি পর্বে আমরা আরো কিছু অভিযোগের বিষয়ে আলোচনা করব। আমাদের আলোচনায় কোন ভূল পরিলক্ষিত হলে জানিয়ে দিন। ফালতু কমেন্ট থেকে বিরত থাকুন। Collect Ziaul Haque
Posted on: Sun, 06 Oct 2013 09:25:37 +0000

Trending Topics



margin-left:0px; min-height:30px;"> Yesterday Kylie had her entire body x-rayed... We got some great
Trick or Go up to a person and say, I think youre my long-lost
Noi per sociale si intende: nazionalizzazione di tutte le imprese
Mail your areawise complaints , issues, suggestions or advices
Florene Trees - Banyon Roots II - T-Shirts Most likely youll
Just saw a post from a site I have...on Spanking...I do not agree
Salam n selamat pagi...kepada rakan2 sesiapa yg ingin memprolehi
New Year, New Lower Prices Did you hear the great news?

Recently Viewed Topics




© 2015