‘মুক্তিবাহিনীই গণহত্যা - TopicsExpress



          

‘মুক্তিবাহিনীই গণহত্যা করেছে’, ‘বলেছেন’ খালেদা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার বহুল আলোচিত কথোপকথন উদ্বৃত করে প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা বলেছেন, খালেদা জিয়া দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দাবি করে মুক্তিযোদ্ধাদের গণহত্যাকারী হিসেবে অভিহিত করেছেন। উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছেন, “খালেদা জিয়া ফোনালাপে বলেছেন, ‘মুক্তিবাহিনীর লোকেরাই গণহত্যা চালিয়েছিল’।” রোববার গভীর রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশন স্টেশনের একটি অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ইমাম এ কথা বলেন। শনিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী যখন তার সরকারি বাসভবনে বসে বিরোধী দলীয় নেত্রীর সঙ্গে কথা বলেন সেখানে উপদেষ্টা ইমাম অন্যান্য শীর্ষ আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থিত ছিলেন। দুই নেত্রীর ফোনালাপের বিভিন্ন বক্তব্য তুলে ধরে তিনি এটিএন বাংলাকে বলেন, “বিরোধী দলীয় নেত্রী উচ্চৈস্বরে কথা বলছিলেন, প্রায় সব কথা শোনা যাচ্ছিল।” দুই নেত্রীর আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরার পাশাপাশি ফোনালাপের সময় দু’জনের কন্ঠস্বর ও মানসিক অবস্থা কেমন ছিল তা বর্ণনা করেন তিনি। তার ভাষ্যমতে, আলোচনার ৩৭ মিনিট জুড়ে প্রধানমন্ত্রী হাসিমুখে শান্তভাবে আলাপ করেছেন। উত্তেজিত হননি। অপরপ্রান্তের সেলফোনধারী বিরোধী নেত্রীর কণ্ঠস্বরে স্বাভাবিক ছিল না। তার অনুমান, তিনি রাগান্বিত থাকতে পারেন বা সেধরনের মানসিক অবস্থায় ছিলেন খালেদা। আলোচনার এক পর্যায়ে শেখ হাসিনা ২১ অগাস্টে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে তাকে হত্যাচেষ্টার বিষয়টি তোলেন খালেদার কাছে। জবাবে খালেদা, ইমামের বর্ণনামতে বলেন,“সমাবেশে আপনারাই গ্রেনেড নিয়ে গিয়েছিলেন।” হাসিনাকে উদ্বৃত করে তার উপদেষ্টা বলেন, “আমরা তাহলে গ্রেনেড নিয়ে সুইসাইড করতে গিয়েছিলাম বলে বলতে চান আপনি।” লাল টেলিফোন ‘বিকল’ থাকার বিষয়টি আলোচনায় ছিল জানিয়ে উপদেষ্টা ইমাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে বিরোধীদলীয় নেত্রী জানান, তার ফোনটি অনেক বছর ধরে বিকল। তিনি আরো বলেন, পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে টেলিফোন সারাতে টেকনিশিয়ান পাঠানো হলে খালেদা জিয়ার বাসভবনে তাকে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি। ফোনালাপে শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে ১৫ অগাস্ট জন্মদিন পালনের বিষয়টি মনে করিয়ে দেন বলে জানান উপদেষ্টা ইমাম। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্বৃত করে তিনি বলেন, “আপনি তো আমাদের বাসায় অনেকবার এসেছেন, ছোট রাসেলকে তো আপনি দেখেছেন। তার মৃত্যুদিনে আপনি কিভাবে পারেন কেক কটাতে?” জবাবে খালেদার বক্তব্য শোনার দাবিকারী উপদেষ্টা বলেন, “তিনি বলেন, ‘আমার জন্মদিনে আমি কেক কাটবো’।” তখন হাসিনা বলেন, “সেদিন আপনার জন্মদিন নয়, জন্মদিন হলেও……..” হরতাল দেয়ার আগে সংলাপ শুরুর বেঁধে দেয়ার কথা টেলিফোনে খালেদা অস্বীকার করেন বলেন দাবি করেন এইচ টি ইমাম। খালেদাকে উদ্বৃত করে তিনি বলেন, “হরতাল শেষ হলে সংলাপের কথা বলেছি আমি।” সংলাপের প্রসঙ্গে আলাপ এলে বিরোধী দলীয় নেত্রী সকল রাজবন্দীদের মুক্তির দাবি করলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আপনি সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তিও চাইছেন?” জবাবে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সমরনায়ক প্রয়াত জেনারেল জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদাকে উদ্বৃত করে যুদ্ধকালীন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইমাম বলেন, “আপনাদের মুক্তিবাহিনীরাই গণহত্যা করেছে। যাদেরকে বিচার করছেন তারা যুদ্ধাপরাধী নয়।” প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে জামায়াতে ইসলামীর ‘সাহচর‌্য’ ছাড়ার কথা বলেন বলেও জানান ইমাম। ১৮ দলের মতামত ছাড়া হরতাল প্রত্যাহার করা যাবে না বলে খালেদা জিয়ার বক্তব্যের পর ‘হাসিনা তাকে বলেন, আপনি বললেই সব হয়ে যাবে।’ সর্বদলীয় সরকারের বিষয়ে কয়েকজন বিএনপি নেতার নাম উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বিএনপি প্রধানকে বলেন, “আপনার দলে ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকার, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও এমকে আনোয়ারের মত বাঘা বাঘা লোক আছে।” প্রসঙ্গত, শনিবার এক টেলিফোন আলাপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী দলীয় নেত্রীকে সোমবার গণভবনে নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়ে নির্বাচনকারীন সরকার নিয়ে সংলাপ শুরুর প্রস্তাব দেন। দীর্ঘ ৩৭ মিনিটের আলোচনায় দুই নেত্রীর মধ্যে আর কী কী বিষয়ে কথা হয়েছে তা নিয়ে জনমনে ব্যাপক কৌতুহল রয়েছে।
Posted on: Sun, 27 Oct 2013 22:56:52 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015