রিয়াল মাদ্রিদ তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর জীবন কাহিনিঃ *****জন্ম পরিচয়***** ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পুরো নাম ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ডোস সান্তোস আভেইরা। ১৯৮৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি পর্তুগালের মাদেইরাতে জন্মগ্রহণ করেন রোনালদো। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো নামটি পর্তুগাল কোনো নাম নয়। রোনালদোর বাবা ছিলেন একসময়ের আমেরিকার প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানের ভক্ত। তাই ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বাবা আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও অভিনেতা রোনাল্ড রিগ্যান এর নামানুসারে ছেলের নাম রাখেন রোনালদো। রোনালদোর পিতার নাম জোসে দিনিস এভেরিও এবং মায়ের নাম মারিয়া ডোলোরেস দস সান্তোস এভেরিও। বড় ভাই হুগো এবং বড় দুবোন এলমা ও কাতিয়ার সাথে তিনি বেড়ে উঠেছেন। কাতিয়া পর্তুগালের একজন গায়িকা। মঞ্চে তিনি “রোনাল্ডা” নামে গান করেন। তার মার পরিবারের নাম দস্ সান্তোস এবং বাবার পরিবেরের নাম আভেইরো। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মজার একটি বিষয় দিয়ে লেখাটি শুরু করছি। ছোটবেলায় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে “Cry Baby” নামে ডাকা হত। এর কারণ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পাস থেকে যদি তার বন্ধুরা গোল করতে না পারতো তাহলে সে কান্না শুরু করে দিত। সত্যিই অদ্ভুত এক মানুষ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তবে এই অদ্ভুত মানুষটির জীবনই এক সময় সংকটাপন্ন ছিল। ছোটবেলায় রোনালদোর হৃদপিন্ডের অপারেশন হয়েছিল। সেই অপারেশনটি যদি সফল না হতো ফুটবল বিশ্ব দেখতে পেতো এমন গতির ঝড়। বিশ্বের যত নামীদামী ফুটবল তারকা রয়েছে তারা সবাই ছোটবেলা থেকেই পাড়ার গলিতে, মাঠে-ঘাটে ফুটবল নিয়ে দাঁপিয়ে বেড়িয়েছেন। কিন্তু ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো শুধুমাত্র দিনের বেলায়ই নয় রাতে ঘুমানোর সময়ও তার সঙ্গী ছিল ফুটবল। তার বিছানার পাশে সবসময় ফুটবল থাকতো। *****ফুটবলার হওয়ার পেছনের গল্প***** ফুটবল বিশ্ব আজ যে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে দেখছে তার পিছনে বন্ধুত্বের এক বিরল নিদর্শন লুকিয়ে রয়েছে। সে অনেক দিন আগের কথা। সে সময় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো অন্ধুর্ধ্ব ১৮ চ্যাম্পিয়নশীপে খেলতেন। একই দলে অ্যালবার্ট ফ্যানত্রাও নামে রোনালদোর আরও এক বন্ধু খেলত। একদিন স্পোর্টিং লিসবন ক্লাবের ম্যানেজার তাদের খেলা দেখতে এসে বলেন “ফাইনালে তোমাদের মধ্যে যে বেশি গোল করবে তাকেই আমরা আমাদের একাডেমী দলে নিব।” ম্যাচটা ৩-০ গোলে জিতে রোনালদোরা। যার মধ্যে ১ম গোলটি করেন রোনালদো এবং ২য় গোলটি করেন ফ্যানত্রাও। ৩য় গোলের সময়ই ফুটে উঠল বন্ধুত্বের উজ্জ্বল নিদর্শন। ফ্যানত্রাও গোলকিপারকে কাটিয়ে ফাঁকা পোস্টের সামনে দাঁড়িয়ে আছে, আলতো টোকা দিলেই গোল। ফ্যানত্রাও টোকা ঠিকই দিলেন, কিন্তু গোলপোস্টে নয় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা রোনালদোর দিকে। ফ্যানত্রাও এর বাড়িয়ে দেওয়া পাসে রোনালদো সহজেই গোলটি করে এবং স্পোর্টিং লিসবন একাডেমীতে খেলার সুযোগ পায়। ফ্যানত্রাও নিজেও জানতেন রোনালদো তার চেয়ে ভালো খেলোয়াড়। তাই রোনালদোরই উচিত সুযোগ পাওয়াটা। তাই নিজের স্বার্থ ত্যাগ করে বন্ধুত্বের নিদর্শন স্থাপনে বিন্দুমাত্র ভাবেননি ফ্যানত্রাও। এর পরের ঘটনা ফ্যানত্রাও এর জন্য ছিল বড় কঠিন। এরপর ফ্যানত্রাও এর ফুটবল ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে যায়। সে একপ্রকার বেকার হয়ে যায়। তারপরও তার রয়েছে বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি। যার পেছনে রয়েছে বন্ধুর প্রতি কৃতজ্ঞ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর অবদান। উল্লেখ্য স্পোর্টিং লিসবন ক্লাবের আরেক নাম ‘স্পোর্টিং ক্লাব ডি পর্তুগাল’। *****ফুটবলে পথচলা***** ছোটবেলা থেকেই ফুটবরের প্রতি রোনালদোর প্রবল আকর্ষণ ছিল। ৬ বছর বয়স থেকেই রোনালদো স্কুলের ফুটবল দলে খেলা শুরু করেন। বয়স যখন ৮ এর কোঠায় পৌঁছায় তখন যোগ দেন “আন্দোরিনহা” নামক একটি অপেশাদার ক্লাবে। ১৯৯৫ সালে, দশ বছর বয়সের মধ্যেই পর্তুগালে তার সুনাম ছড়াতে থাকে। মাদিয়েরার শীর্ষ দুটি দল “সিএস মারিতিমো” ও “সিডি ন্যাশিওনাল” তাকে পেতে উম্মুখ ছিল। অপেক্ষাকৃত বড় দল মারিতিমো আন্দোরিনহার ব্যবস্থাপকের সাথে একটি মিটিং- এ অংশ নিতে পারেননি। ফলে সিডি ন্যাশিওনাল রোনালদোকে হস্তগত করে। ন্যাশিওনালের হয়ে সে মৌসুমে শিরোপা জেতার পর স্পোর্টিং দলের সাথে তিনি চুক্তিবদ্ধ হন। এই ক্লাব থেকে যোগ দেন ‘স্পোর্টিং ক্লাব ডি পর্তুগাল’ এ। এখানে একটা বিষয় বলে রাখি, রোনালদোর প্রিয় ক্লাব ছিল বেনফিকা। আর ‘স্পোর্টিং ক্লাব ডি পর্তুগাল’ ছিল বেনফিকার চিরপ্রতিদ্বন্ধী । *****জীবনের আসল টার্নিং পয়েন্ট***** সময়টা ছিল ২০০৩ সালের ৬ আগষ্ট। স্পোর্টিং লিসবন এর সাথে একটি প্রীতি ম্যাচে অংশগ্রহণ করতে স্যার অ্যালেক্স ফারগুসন এর দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড লিসবন এ আসে। সেই ম্যাচে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ফুটবল ম্যাজিকে ফারগুসন এতটাই ডুবে ছিলেন যে, তার দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ৩ – ১ গোলে হেরে যাচ্ছে সেদিকে তার খেয়ালই ছিল না। স্বভাবত কোনো ম্যাচে হারার পর ফারগুসন রাগে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। কিন্তু সেই ম্যাচটি শেষে ফারগুসন এর মুখে ছিল হাসির ঝিলিক। ম্যাচ শেষে সাধারণত যে সংবাদ সম্মেলনগুলো অনুষ্ঠিত হয় সেখানে ম্যাচের বিষয়গুলো নিয়েই কথা বলা হয়ে থাকে। কিন্তু ফারগুসন সেই সংবাদ সম্মেলনেই ঘোষণা দিলেন, রোনালদোকে আমার চাই-ই চাই। প্রায় ১৬ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ২০০৩ সালে স্পোর্টিং লিসবন থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ম্যাঞ্চ েস্টার ইউনাইটেডের ইতিহাসে কখনও কোনো খেলোয়ারের একদিনের খেলা দেখেই কিনে নেওয়া হয়নি। রোনালদোই সেই একমাত্র ব্যাক্তি যার একটি ম্যাচ দেখেই ইউনাইটেড এর দলে কিনে নেওয়া হয়। *****২৮ নম্বর থেকে এক লাফে ৭ নম্বরে***** ক্রিস্টিয়ানো স্পোর্টিং লিসবন এ ২৮ নম্বর জার্সি পড়ে খেলতেন। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেওয়ার পর রোনালদোকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, সে কত নম্বর জার্সি চাও। রোনালদোর চাওয়া ছিল ২৮ নম্বরই। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে ফারগুসন রোনালদোকে জর্জ বেস্ট, ব্রায়ান রবসন, এরিক ক্যান্টোনা, ডেভিড ব্যাকহ্যামদের ৭ নম্বর জার্সিটি দেন। সেই থেকে জাতীয় দল, ক্লাব দল সব জায়গাতেই ৭ নম্বর জার্সিটি রোনালদোর জন্য বরাদ্দ হয়ে যায় এবং একই সাথে রোনালদো পরিচিত হন সি আর সেভেন (CR7) নামে। *****ম্যাঞ্চেস্ টার ইউনাইটেডের জীবন***** ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ম্যানচেস্টারের হয়ে ২০০৩ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত খেলেছেন। বহু ঢাকঢোল পিটিয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে রোনালদোকে নিয়ে এলেও প্রথম দিকে ১ম একাদশে রোনালদোর জায়গা ছিল না। ওল্ড ট্রাফোর্ডে বোল্টন ওয়ান্ডারার্সের বিরুদ্ধে ম্যাচের ৬০ তম মিনিটে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মঠে নামানো হয় রোনালদোকে। ম্যাচে তখন ম্যান ইউ ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল। ম্যাচে রোনালদোকে ফাউল করার কারণে ম্যান ইউ একটি পেনাল্টি পায়। তবে সতীর্থ নিস্তেলরয় সেই পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন। ম্যাচটি ম্যান ইউ ৪ – ০ গোলের ব্যবধানে জিতে নেয়। ২০০৫ সালের ২৯শে অক্টোবর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে প্রিমিয়ারশিপে ১০০০ তম গোল করেন রোনালদো। তবে মিডলসব্রোর বিরুদ্ধে ওই ম্যাচটি ম্যান ইউ ৪ – ১ গোলে হেরে যায়। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে রোনালদো উইঙ্গার হিসেবে খেলতেন। যেকোনো উইং এ নিজেকে মানিয়ে নিতে পারতেন তিনি। একজন উইঙ্গার হয়ে দলকে একাই টেনে নিয়ে গিয়েছে অনেক দূর পর্যন্ত। ২০০৮ সালে দলকে জিতিয়েছে চ্যাম্পিয়নস লীগ। ঐ বছরই মনোনীত হয়েছিল ফিফার বর্ষসেরা খেলোয়াড়। গোল্ডেন বুট জোড়াও নিয়ে নিয়েছিলো নিজের দখলে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে রোনালদো জিতেন: ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ: ২০০৬-০৭, ২০০৭-০৮, ২০০৮-০৯ এফ.এ. কাপ: ২০০৭ লীগ কাপ: ২০০৫-০৬, ২০০৮-০৯ চ্যাম্পিয়নস লীগ: ২০০৭-২০০৮ ফিফা ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপ: ২০০৮ *****রিয়াল মাদ্রিদ এ যোগদান***** ২০০৯ সালের ৯ জুলাই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছ থেকে ৮০ মিলিয়ন পাউন্ড দিয়ে ৬ বছরের জন্য কিনে রোনালদোকে। ১ জুলাই রিয়াল মাদ্রিদে যোগদান করে ২১ জুলাই রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি গায়ে মাঠে নামেন রোনালদো। প্রথম দিকে রিয়াল মাদ্রিদের ৭ নম্বর জার্সিটি রিয়ালের আরেক তারকা খেলোয়াড় রাউল গনজালেস ২০১০ সালে রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে যাওয়ার পর ৭ নম্বর জার্সিটি রোনালদোকে দেওয়া হয়। রিয়াল মাদ্রিদ এর হয়ে ২০০৯-২০১০ মৌসুমে রোনালদো ৩৫ ম্যাচে ৬টি হ্যাট্রিক সহ ৩৩ গোল করেন। এরপরই ইনজুরির কবলে পড়েন রোনালদো। ২০১০ সালের ব্যর্থ বিশ্বকাপ ফুটবল মিশন শেষে ২০১০-২০১১ মৌসুমে এসে আবার ঝলসে উঠেন। এই মৌসুমে ৫৪ ম্যাচে ৫৩ গোল করেন রোনালদো। জোসে মরিনহো রিয়াল মাদ্রিদের ক্যারিয়ারের সব কয়টি এল ক্লাসিকো জয়ের জয়সূচক গোলটি এসেছে রোনালদোর পা থেকে। স্প্যানিশ লীগে টেলমো জারার ৩৮ গোল কে ডিঙ্গিয়ে রোনালদো গড়েছে সর্বোচ্চ ৪০ টি গোলের রেকর্ড। তাই শীর্ষে এখন রোনালদোর নাম। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে রোনালদো জিতেনঃ লা লিগাঃ ২০১১-১২ কোপা ডেল রেয়ঃ ২০১০-১১,২০১৩-১৪ স্প্যানিশ সুপার কাপঃ ২০১২-১৩ ***রিয়াল মাদ্রিদে পরিসংখ্যান*** ২০০৯-১০ সিজনঃ ম্যাচ সংখ্যাঃ ৩৫ গোল সংখ্যাঃ ৩৩ ২০১০-১১ সিজনঃ ম্যাচ সংখ্যাঃ ৫৪ গোল সংখ্যাঃ ৫৩ ২০১১-১২ সিজনঃ ম্যাচ সংখ্যাঃ ৫৫ গোল সংখ্যাঃ ৬০ ২০১২-১৩ সিজনঃ ম্যাচ সংখ্যাঃ ৫৫ গোল সংখ্যাঃ ৫৫ ২০১৩-১৪ ম্যাচ সংখ্যাঃ ৪১ গোল সংখ্যাঃ ৪৫ *****আন্তর্জাতি ক ফুটবলে অভিষেক***** ২০০৩ সালে পর্তুগালের হয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক ঘটে রোনালদোর। ম্যাচটি ছিল কাজাখস্থানের বিরুদ্ধে। *****২০০৪ ইউরো***** এরপর ২০০৪ সালের ইউরো কাপের উদ্ধোধনী খেলায় পর্তুগাল গ্রীসের কাছে ২-১ গোলে হেরে যায়। পর্তুগালের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন রোনালদো। এটিই ছিল রোনালদোর ১ম আন্তর্জাতিক গোল। সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ২-১ গোলে জয়ী হয় পর্তুগাল। যার ১ম গোলটি করেন রোনালদো। তবে ফাইনালে রোনালদোর পর্তুগাল গ্রীসের বিপক্ষে হেরে যায়। পুরো টুর্নামেন্টে মাত্র ২টি গোল করলেও ফুটবল বিশ্বের নজড় কারতে সক্ষম হন। ২০০৪ সালের গ্রীষ্ম অলিম্পিকে পর্তুগালের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পান রোনালদো। এই প্রতিযোগিতায় রোনালদো একটি গোল করেন কিন্তু পর্তুগাল ১ম রাউন্ড থেকেই বিদায় নেয়। *****২০০৬ বিশ্বকাপ***** ২০০৬ সালের বিশ্বকাপের মধ্য দিয়ে বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসরে অভিষেক হয় রোনালদোর। এর আগে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ইউরোপিয়ান অঞ্চলের ২য় সর্বোচ্চ গোলদাতা হন রোনালদো। বাছাইপর্বের এই প্রতিযোগিতায় রোনালদো ৭টি গোল করেন।ইরানের বিরুদ্ধে পেনাল্টি কিক থেকে রোনালদো বিশ্বকাপে তার প্রথম গোল করেন। ২০০৬ ফুটবল বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে এসে আচমকা এক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন রোনালদো। ৮ জুলাই পর্তুগাল ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে ইংল্যান্ডের ওয়েইন রুনির সাথে পর্তুগীস ডিফেন্ডার রিকার্ডো কার্ভালহোর সংঘর্ষ হয়। এতে রেফারি রুনিকে লাল কার্ড দেখায়। সে সময় ইংরেজ গণমাধ্যম রুনির লাল কার্ড দেখার পিছনে রোনালদোর ভূমিকা রয়েছে বলে সরব হয়। রোনালদোর বিরুদ্ধে চোখ টেপার একটি অভিযোগ ছিল। ম্যাচে ইংল্যান্ড হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয়। এরপরই ইংরেজি দৈনিকগুলোর রোষানলে পড়েন রোনালদো। যার ফলে ম্যান ইউ ছাড়ার মত সিদ্ধান্তও নিয়েছিলেন সেসময়। কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডকে বিদায় করার পর সেমিফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে যায়। সেমিফাইনালের পুরো এই ম্যাচটি রোনালদোকে দর্শকদের ধুয়োধ্বনি শুনে খেলতে হয়েছে। এই আসরে রোনালদো সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হন একমাত্র ইংল্যান্ডের সমর্থকদের খারাপ ই-মেইল ক্যাম্পেইনের কারণে। যা অনলাইন ভোটিং এর ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করেছিল। এই আসরে সেরা তরুণ ফুটবলারের পুরস্কারটি জিতে নেয় জার্মানির লুকাস পোডলস্কি।ইংল্যা ন্ডের সমর্থকদের রোষানলে পড়ে ইংল্যান্ডের ক্লাবে খেলার মনমানসিকতা হারিয়ে রোনালদো ম্যান ইউ ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিলেও ২০০৬ সালের ১২ জুলাই ম্যান ইউ এক বিবৃতিতে জানায় রোনালদোকে বিক্রির কোনো সম্ভাবনা নেই। স্বয়ং ওয়েইন রুনিও রোনালদোকে ম্যান ইউ না ছেড়ে সকল মতপার্থক্য ভুলে যেতে অনুরোধ করেন। অবশেষে রোনালদো সে মৌসুমে ম্যান ইউতেই থেকে যান। *****ইউরো ২০০৮***** ২০০৮ সালের ইউরো বাছাইপর্বে রোনালদো ৮ গোল করেন। ২০০৪ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে খন্ডকালীন অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পালন করা রোনালদো ২০০৮ সালের ইউরোতে এসে ফুল টাইম অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পান। এই প্রতিযোগিতায় রোনালদোর পর্তুগাল কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে ২-৩ গোলে হেরে বিদায় নেয়। এই টুর্নামেন্টেই পর্তুগালের ৭ নম্বর জার্সি গায়ে মাঠে নামেন রোনালদো। আগে যেটি ছিল লুইস ফিগোর দখলে। *****২০১০ বিশ্বকাপ****** ২০১০ এর বিশ্বকাপে পর্তুগাল প্রথম খেলায় মুখোমুখি হয় আইভরি কোস্টের। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় ১৫ই জুন। গ্রুপ পর্বের ম্যাচের সবগুলো ম্যাচেই রোনালদো ম্যান অব ম্যাচ নির্বাচিত হন। এর মধ্যে গ্রুপ পর্বের এক ম্যাচে উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে ৭ – ০ গোলের বড় ব্যবধানে জিতে পর্তুগাল। আর এই ৭টি গোলই করেন রোনালদো। গ্রুপ পর্বে দুর্দান্তভাবে শেষ করা পর্তুগাল কোয়ার্টার ফাইনালে এসে স্পেনের কাছে হেরে ২০১০ এর বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয়। *****ইউরো ২০১২***** ইউরো ২০১২ বাছাইপর্বে রোনালদো ৭ গোল করেন। মূল পর্বে পর্তুগালের সাথে বি গ্রুপে সঙ্গী হয় নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক ও জার্মানি। এটি ছিল ইউরো ২০১২ এর ডেথ গ্রুপ। ১ম ম্যচে পর্তুগাল ১-০ গোলে জার্মানির কাছে হেরে যায়। ২য় ম্যাচে ডেনমার্ককে ২ – ৩ গোলে পরাজিত করে পর্তুগাল। গ্রুপের শেষ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে ২ – ১ গোলে হারিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে পর্তুগাল। এই ম্যাচে রোনালদো ১টি গোল করেন। কোয়ার্টার ফাইনালে চেক রিপাবলিক কে ১-০ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে পর্তুগাল। জয়সূচক এই গোলটি আসে রোনালদোর দুর্দান্ত এক হেড থেকে। সেমিফাইনালে স্পেনের মুখোমুখি হয় পর্তুগাল। ম্যাচে রোনালদো গোল করার বেশ কিছু সুযোগ পায়। কিন্তু কোনো সুযোগই কাজে লাগাতে পারেননি। ম্যাচটি গোলবিহীনভাবে শেষ হয়। খেলা গড়ায় ট্রাইবেকারে। ট্রাইবেকারে ৪-২ গোলে হেরে যায় পর্তুগাল। পেনাল্টি সট নেওয়ার জন্য যে লাইন আপ ঠিক করা তাতে রোনালদোকে রাখেননি কোচ পাওলো বেন্তো। তার মতে রোনালদো পেনাল্টি শট নেওয়ায় তেমন প্রস্তুত ছিলেন না। *****২০১৪ বিশ্বকাপ***** ২০১৪ সালে ব্রাজিলে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ ফুটবলে পর্তুগালের অংশগ্রহণ ছিল অনিশ্চিত। বাছাইপর্বের শেষ দিকে এসে প্লে- অফের কবলে পড়ে পর্তুগাল। প্লে-অফে ইউরোপের আরেক জায়ান্ট সুইডেনের সামনে পড়ে পর্তুগাল। ১ম ম্যাচে রোনালদোর একমাত্র গোলে সুইডেনকে হারিয়ে এগিয়ে থাকে পর্তুগাল। ফিরতি ম্যাচে রোনালদোর দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিকে ৩-০ গোলে সুইডেনকে হারিয়ে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করে পর্তুগাল। বাছাইপর্বের ১০ ম্যাচে রোনালদো নিজে ৮টি গোল করেন এবং ২টি গোলে সহায়তা করেন। *****পর্তুগালে রোনালদোর পরিসংখ্যান***** ২০০৩ সালঃ ম্যাচঃ ২ গোলঃ ০ ২০০৪ সালঃ ম্যাচঃ ১৬ গোলঃ ৭ ২০০৫ সালঃ ম্যাচঃ ১০ গোলঃ ২ ২০০৬ সালঃ ম্যাচঃ ১৪ গোলঃ ৬ ২০০৭ সালঃ ম্যাচঃ ১০ গোলঃ ৫ ২০০৮ সালঃ ম্যাচঃ ৮ গোলঃ ১ ২০০৯ সালঃ ম্যাচঃ ৭ গোলঃ ১ ২০১০ সালঃ ম্যাচঃ ১১ গোলঃ ৩ ২০১১ সালঃ ম্যাচঃ ৯ গোলঃ ৭ ২০১২ সালঃ ম্যাচঃ ১৩ গোলঃ ৫ ২০১৩ সালঃ ম্যাচঃ ৯ গোলঃ ১০ ২০১৪ সালঃ ম্যাচঃ ১ গোলঃ ২ *****অনন্য অসাধারণ রোনালদো***** ক্ষীপ্র গতি, অসাধারণ ড্রিবলিং, একের পর এক গোল করা নিয়ে রোনালদোকে নিয়ে কৌতুহলের শেষ নেই। ফুটবল ভক্তদের সেই কৌতুহলের অবসান ঘটানোর জন্য “Castrol Edge” নামের এক প্রতিষ্ঠান Cristiano Ronaldo: Tested To The Limit নামে একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করে। এই ডকুমেন্টারিতে রোনালদোর অজানা সব তথ্য বের হয়ে আসে। এই ডকুমেন্টারিটি তৈরিতে বিশেষজ্ঞ হিসেবে ছিলেন – আর্সেন ওয়েঙ্গার- আর্সে নাল ফুটবল ক্লাবের ম্যানেজার ফ্যাবিও ক্যাপেলো-ইংল্যা ন্ড জাতীয় ফুটবল দলের ম্যানেজার অ্যান্ডি আন্সাহ- ফুটবল উপদেষ্টা নিল স্মিথ- বায়োমেকা নিক বিশেষজ্ঞ ড্যারেন ক্যাম্পবেল-সাবে ক অলিম্পিক স্প্রিন্ট চ্যাম্পিয়ন ডেভ অলরেড-ফুটবল এবং রাগবি কোচ জয়ী উইমসহার্সট- স্পো র্টস সাইকোলোজিস্ট Body Strength, Mental Ability, Technique এবং Skill এই চারভাগে সম্পূর্ণ ডকুমেন্টারিটি ভাগ করা হয়েছে। Body Strength টেস্টের মাধ্যমে শারীরিক শক্তি পরীক্ষা করা হবে। এজন্য দুইটি ২৫ মিটার দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। একটি সোজা পথে, আরেকটি আাঁকাবাঁকা পথে। একজন পেশাদার স্প্রিন্টার রোনালদোর সাথে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। তার নাম অ্যাঙ্গেল ডেভিড রড্রিগেজ। ১ম দৌড় শেষে দেখা গেলো (সোজা পথে) রড্রিগেজের সময় লেগেছে ৩.৩১ সেকেন্ড এবং রোনালদোর সময় লেগেছে ৩.৬১ সেকেন্ড। আাঁকাবাঁকা পথের দৌড়ে পেশাদার স্প্রিন্টার রড্রিগেজকে হারিয়ে দেন রোনালদো। Body Strength পরীক্ষা করার জন্য রোনালদোর হাই জাম্প পরিমাপ করা হয়। এতে দেখা যায় জায়গায় দাঁড়িয়ে লাভ দিলে উচ্চতা দাঁড়ায় ৪৪ সেন্টিমিটার এবং কিছুটা পথ দৌড়ে এসে জাম্প করলে তা ৭৮ সেন্টিমিটারে পৌছায়। এরপর মানসিক সামর্থ্য বা Mental Ability পরীক্ষা করার জন্য ১ম পরীক্ষা হিসেবে রোনালদোর চোখে বসানো হয় আই ট্র্যাকার। এটির মাধ্যমে চোখের নড়াচড়া পরীক্ষা করা হয়। এতে দেখা যায় বল নিয়ে ড্রিবলিং করার সময় রোনালদো ৮ সেকেন্ডে ৩০ বার চোখ মুভ করেছেন। একজন স্বাভাবিক মানুষ এই সময়ে ১৫ বারের মত চোখ মুভ করতে পারেন। এরপরের পরীক্ষাটি আরও অদ্ভুদ। পরীক্ষাটি এরকম ছিল – রোনালদো গোলপোস্টের সামনে দাঁড়িয়ে থাকবে। দূর থেকে গোলপোস্টে বল মারা হবে। বল মারার সাথে সাথে আলো নিভিয়ে অন্ধকার করে ফেলা হবে। অনুমান করে রোনালদোকে গোল করতে হবে। সবাইকে হতবাক করে দুইবারই গোল করেন রোনালদো। একটি হেড করে আরেকটি পা দিয়ে। এরপরের পরীক্ষাটিও অন্ধকারের মধ্যে করা হল। এবারও বল মারার সাথে সাথে লাইট অফ করে দেওয়া হবে এবং যে বলটি মারবে তার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখেই বলটির গতি ও উচ্চতা বুঝতে হবে। এবারও সবাইকে হতবাক করে কাঁধের সাহায্যে গোল করেন রোনালদো। তৃতীয় পরীক্ষা হিসেবে রোনালদোর Technique পরীক্ষা করা হয়। বলকে হাওয়ায় সুইং খাওয়ানোয় রোনালদোর রয়েছে অবিশ্বাস্য দক্ষতা। আউটসুইং, ইনসুইং দুই ধরনের সুইং করার ক্ষমতা রয়েছে রোনালদোর। বলের এক পাশে বেশি প্রেসার দিয়ে কিক করার ফলে দেখা গেছে যে, বল তার আসল গতিপথ থেকে ৩ মিটারের ও বেশি ভেতরের দিকে সুইং করে প্রবেশ করে। এবং যখন বলের মাঝামাঝি বা সেন্ট্রাল পজিশন এ কিক করে, তখন বলটা তেমন সুইং করেনা, কিন্তু শেষ পর্যায়ে গোল পোস্টের কাছাকাছি এসে বল দ্রুত মুভ করে যেটাকে বলা হয় Instant Deviation। ফ্রি-কিকের গতিশক্তি পরীক্ষায় দেখা যায় – পরপর ৬টি কাঁচের দেয়াল সাজানো হয়। রোনালদোকে কিক করে এই কাঁচের দেওয়াল ভাঙতে হবে। রোনালদো ঘন্টায় ৮০ মাইল বেগে কিক করে ৩টি কাঁচের দেয়াল ভেঙ্গে ফেলেন। স্কিল টেস্টে বলের প্রতি তার পায়ের মুভমেন্টকে দেখানো হয়েছে। এখানে লেজার লাইট সমৃদ্ধ বন্দুকের সাহায্য নেয়া হয়েছে। লেজার লাইটের উদ্দেশ্য থাকবে তা বলের উপর ধরে রাখা, আর রোনালদোকে চেষ্টা করতে হবে লেজার যেন বলের উপর না পড়ে! এই টেস্টের পর রোনালদো বললেন, “একটা বল নিয়ে এভাবে কাটানো খুবই কষ্টকর। আমি খুব ক্লান্ত। আমি সব সময় বল নিয়ে টেনে খেলতেই পছন্দ করি।” *****ফিফা ব্যালন ডি’অর লাভ***** ২০১৩ সালের বর্ষসেরা নির্বাচিত হয়ে রিয়ালের পর্তুগিজ উইঙ্গার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো অর্জন করেন কাঙ্ক্ষিত এই ট্রফি। ভোটাভুটিতে রোনালদোর (১৩৬৫ ভোট) প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন মেসি (১২০৫)। তৃতীয় হওয়া ফ্র্যাঙ্ক রিবেরির ভোট ১১২৭। এছাড়া ২০০৮ সালেও একবার এই ট্রফি জয় করেন রোনালদো। *****নিজের নামে তৈরি করেছেন জাদুঘর***** ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো তার ভক্তদের জন্য একটি জাদুঘর বানিয়েছেন। নিজের জন্মস্থান মাদেইরা দ্বীপপুঞ্জে এই যাদুঘরটি বানানো হয়েছে। যার নাম ‘সিআর সেভেন’। ক্যারিয়ারে পাওয়া শতশত ট্রফি, সম্মাননা ও দুর্লভ ফটোগ্রফি দিয়ে ভরা থাকবে জাদুঘর। *****সর্বাধিক বেতনভুক্ত ফুটবলার***** লিওনেল মেসি, গ্যারেথ বেলের চেয়েও রোনালদোর বেতন বেশি। রিয়াল মাদ্রিদের সাথে নতুন চুক্তি অনুযায়ী রোনালদোর বার্ষিক বেতন হবে দেড় কোটি ইউরো। লিওনেল মেসির বার্ষিক বেতন ১ কোটি ৩০ লাখ ইউরো এবং গ্যারেথ বেলের বেতন এক কোটি ইউরো। *****মানবপ্রেমী রোনালদো***** দাতব্য কর্মকান্ডের সাথে বরাবরই নিজেকে সম্পৃক্ত করেছেন রোনালদো। ২০০৫ সালের জুনে তিনি মার্তুনিস নামে এক ১১ বছর বয়সী সুনামি থেকে বেঁচে যাওয়া ইন্দোনেশিয়ান ও তার বাবাকে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব দেখার সুযোগ করে দেন, যার সম্পূর্ণ খরচ তিনি নিজে বহন করেন। পরে সব খেলোয়াড়েরা মিলে তার জন্য ইন্দোনেশিয়ায় একটি বাড়ি কিনতে সাহায্য করেন। বিশ্বকাপ বাছাই খেলার পর রোনালদো ইন্দোনেশিয়ায় যান। তিনি সেখানকার সুনামিদুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং অর্থ- সাহায্য তুলতে অংশ নেন। তিনি ইন্দোনেশিয়ার উপ-রাষ্ট্রপতি জুসুফ কাল্লা ও পূর্ব টিমোরের রাষ্ট্রপতি জানানা গুসমাওর সাথে দেখা করেন এবং তার নিজস্ব খেলার সরঞ্জামাদির নিলাম করে ৬৬,০০০ পাউন্ড সংগ্রহ করেন। *****সিআর৭ নামে নিজস্ব বুটিক হাউস***** সিআর৭ নামে পর্তুগালে রোনালদোর একটি বুটিক হাউস রয়েছে। এটি তার বোনেরা পরিচালনা করে। *****মাদামতুসো জাদুঘরেও রোনালদো***** মাদামতুসো জাদুঘরে শুধুমাত্র বিখ্যাত লোকদের মূর্তিই শোভা পায়। ২০১০ সালের বিশ্বকাপের আগে মাদাম তুসো জাদুঘরে রোনালদোর মূর্তি উন্মোচন করা হয়। *****রোনালদোর খুঁটিনাটি***** মাদাম তুসো’র জাদুঘরে রোনালদোর মোমের প্রতিকৃতি বিদ্যমান। তা ২০১০ এর বিশ্বকাপের আগে উন্মোচিত হয়। ছোটবেলায় রোনালদোকে “little-bee” বলা হত, কারন খেলার সময় তাঁকে কেউ ধরতে পারত না। রোনালদোকে তার ভক্তরা সংক্ষেপে CR7 নামে সম্বোধন করেন। CR7 নামে পর্তুগালে ফ্যাশনিস্ট রোনালদোর একটি বুটিক হাউস আছে। ফুটবলের পাশাপাশি টেবিল টেনিসেও পটু রোনালদো। রোনালদো হরর ফিল্ম দেখতে অনেক পছন্দ করেন। রোনালদোর প্রিয় অভিনেত্রী হচ্ছেন আঞ্জেলিনা জোলি। রোনালদোর ফ্রী কিকের গতি ঘন্টায় ১৩০ কিলোমিটারের কাছা কাছি । যার অর্থ প্রতি সেকেন্ডে ৩১.১ মিটার, যা অ্যাপোলো ১১ রকেটের নিক্ষেপন গতির চেয়েও দ্রুত । অ্যাপোলো ১১ রকেট ১ সেকেন্ডে অতিক্রম করে ৭.৩ মিটার।
Posted on: Mon, 04 Aug 2014 05:30:45 +0000