লিশ সদরে ছুটির আবেদনের - TopicsExpress



          

লিশ সদরে ছুটির আবেদনের হিড়িক 04 Oct, 2013 সরকারের শেষ সময়ে দীর্ঘ ছুটিতে যেতে চান এতদিনের ‘সুবিধাভোগী’ প্রায় দেড় ডজন পুলিশ কর্মকর্তা। পুলিশ সদর দফতরে দীর্ঘ হচ্ছে তাদের ছুটির আবেদনের তালিকা। ব্যক্তিগত কারণ, দ্বৈত নাগরিকত্ব রক্ষা, কিংবা বিদেশে উচ্চতর শিক্ষার অজুহাতে একের পর এক ছুটির আবেদন করা হচ্ছে। ছুটি মঞ্জুর করানোর কাজে ব্যস্ত ডিআইজি থেকে শুরু করে এসপি পদমর্যাদার কর্মকর্তারা। সাম্প্রতিক সময়ে ছুটি আবেদনের ‘হিড়িক’ পড়ার বিষয়টি নিয়ে খোদ পুলিশ বিভাগেও ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। বিষয়টি সন্দেহের চোখে দেখছেন সরকারের ঊর্ধ্বতনরা। বিব্রতকর এ পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে তিরস্কার করা হয়েছে। কয়েকজনকে ছুটির আবেদন প্রত্যাহারের নির্দেশও দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ঘটনার পর চুপসে পড়েছেন সুবিধাভোগী এসব কর্মকর্তার অনেকে। অন্যদিকে, এতদিন ‘লোভনীয়’ পদগুলোতে পেস্টিং নিতে পুলিশ কর্মকর্তারা দৌড়ঝাঁপ করলেও এখন দেখা দিয়েছে ঠিক বিপরীত চিত্র। অনেক পুলিশ কর্মকর্তাই এখন অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ পদে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদায়ন চাইছেন সিআইডি, এসবিসহ পুলিশ বিভাগের নতুন ইউনিটগুলোতে। ঢাকাসহ মেট্রোপলিটন এলাকা ছেড়ে অনেকেই জেলা শহরের কম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলোতে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। সূত্রগুলো বলছে, অসুস্থতা, পরিবারিক সমস্যা অথবা বয়সের দোহাই দিয়ে এসব পুলিশ কর্মকর্তা ক্ষমতার পালাবদলের আগেই ‘নিরাপদ অবস্থানে’ থাকতে চান। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার। যুগান্তরকে তিনি বলেছেন, ‘উচ্চ শিক্ষাসহ নানা কারণে কিছু কর্মকর্তা অর্জিত ছুটির জন্য আবেদন করেছেন। তবে এটি সন্দেহজনক কিছু নয়।’ সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, পুলিশে নীতি নির্ধারকদের অন্যতম সদর দফতরে কর্মরত এআইজি (প্লানিং অ্যান্ড রিসার্স) প্রলয় কুমার জোয়ার্দার উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়ার কথা বলে দুই বছরের ছুটি নিয়েছেন। তার ছুটি চলতি মাসের ১৫ তারিখ বলবৎ হওয়ার কথা। গোয়েন্দা পুলিশের এক সময়ের দাপুটে কর্মকর্তা (বর্তমানে ওএসডি) ডিসি মোল্লা নজরুল ইসলাম, উপ-কমিশনার বিপ্লব সরকার, আবদুল্লাহ আরেফ, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মেহেদি হাসান ছুটির দরখাস্ত করেছেন। বহুল আলোচিত লালবাগ জোনের পুলিশের উপ-কমিশনার হারুন অর রশিদও রয়েছেন ছুটির আবেদনকারীদের তালিকায়। দ্বৈত নাগরিক হারুন অর রশিদ যেতে চান তার স্ত্রী-সন্তানের কাছে আমেরিকায়। ছুটিতে যেতে চান পুলিশ সদর দফতরে কর্মরত একজন ডিআইজি এবং রাজধানীতে কর্মরত আরও তিন উপ-পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার কর্মকর্তা। ইতিমধ্যেই ছুটি নিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গোয়েন্দা পুলিশের জয়েন্ট কমিশনার মনিরুল ইসলাম। লন্ডনের নার্দামব্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যারিস্টার-অ্যাট-ল পড়ার জন্য অর্জিত ছুটির ১১ মাস মঞ্জুরও হয়েছে। তবে শেষ মুহূর্তে নানা সমালোচনার মুখে তিনি নিজেই ছুটি বাতিলের আবেদন করেছেন। আবেদনটি পুলিশ সদর দফতর হয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মনিরুল ইসলাম বলেছেন, পড়াশুনোর জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার সব প্রস্তুতি তিনি সম্পন্ন করেছিলেন। কিন্তু বিষয়টি অনেকে ভালো চোখে দেখেননি। তাকে নিয়ে কোনো বিতর্ক হোক তা তিনি চান না। তিনি বলেন, এ মুহূর্তে বিদেশ গেলে সমালোচকরা সুযোগ পেত। এ কারণে তিনি শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত বদলেছেন। তবে ২০১৪ সালে তার দেশের বাইরে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে বলে তিনি জানান। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সরকারের শেষ সময়ে দীর্ঘ ছুটিতে যাওয়ার জন্য আবেদনের বিষয়টি নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে পুলিশ সদর দফতরকে। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও অবহিত করা হয়। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দফতর পর্যন্ত গড়ায়। পরে আলোচিত এসব পুলিশ কর্মকর্তার কয়েকজনকে মন্ত্রণালয়ে ডেকে তিরস্কার করা হয়। এ পরিস্থিতিতে চুপসে গেছেন অনেকে। সরকারের নীতি নির্ধারকদের তিরস্কারের মুখে অনেকে তাদের সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেছেন। অন্যদিকে, সরকারের শেষ সময়ে পুলিশের ‘লোভনীয়’ পদগুলো ফাঁকা হতে শুরু করেছে। এতদিনে যারা এসব পদে যোগাদানের জন্য রীতিমতো যুদ্ধ করেছেন, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে এখন তারা অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ পদে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। ইতিমধ্যেই অনেক কর্মকর্তা সিআইডি, এসবি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, পিআইবি, এসপিবিএনসহ নবগঠিত বিভিন্ন ইউনিটে বদলি হয়েছেন। সুবিধাভোগী এসব কর্মকর্তার চাপে ইতিমধ্যেই পুলিশের বিশেষ শাখা এসবি এখন কানায়-কানায় পূর্ণ। একই অবস্থায় অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ঢাকা মেট্রোপলিটনসহ দেশের মেট্রোপলিটন পুলিশের থানাগুলোতেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এতদিন মেট্রোপলিটন থানাগুলোতে (গুরুত্বপূর্ণ) যোগদানের জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নানামুুখী তদবিরে (!) অতিষ্ঠ ছিল পুলিশ সদর দফতরসহ সংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলো। এখন সময় বদলেছে। ইতিমধ্যেই সুবিধাভোগী এসব পুলিশ কর্মকর্তার অনেকেই বিভিন্ন জেলায় (কম গুরুর্ত্বপূর্ণ) বদলির চেষ্টা করছেন। পারিবারিক এবং শারীরিক অসুবিধাসহ নানা কারণ দেখিয়ে এসব কর্মকর্তা বদলির আবেদন করছেন। অনেক কর্মকর্তা ‘নিরাপদে থাকবে’ উদ্দেশ্যে কম গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বদলি নিয়ে চলে গেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতার পালাবদল হলে সমস্যা হতে পারে এমন ধারণা থেকে কিছু কর্মকর্তা আগেভাগেই নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন। কিছু কর্মকর্তা আগামী কয়েক মাসে আন্দোলন-সংগ্রামে বড় ধরনের সহিংসতা হতে পারে ভেবে নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছেন। উৎসঃ যুগান্তর Share on facebook Share on email Share on print 2
Posted on: Fri, 04 Oct 2013 06:42:56 +0000

Recently Viewed Topics




© 2015