হিজড়াদের চাঁদাবাজি এবং - TopicsExpress



          

হিজড়াদের চাঁদাবাজি এবং তাদের পুনর্বাসন শাহ আবদুল হান্নান এ লেখায় দু’টি বিষয় আলোচনা করব। একটি হচ্ছে হিজড়াদের অসহনীয় চাঁদাবাজি; অন্যটি হচ্ছে তাদের পুনর্বাসন। কিছু দিন আগে নয়া দিগন্তের সম্পাদক সাহেবও আমার সাথে এক আলোচনায় হিজড়াদের অসহনীয় চাঁদাবাজির উল্লেখ করেছিলেন। আমি নিজেও দেখতে পাচ্ছি, হিজড়াদের সম্পর্কে প্রায় সবাই আতঙ্কিত। আমার খালার বাসায় কয়েক মাস আগে হিজড়ারা ঢুকে পড়ে। তারপর কয়েক হাজার টাকা না পাওয়া পর্যন্ত তারা স্থান ত্যাগ করতে অস্বীকার করে। আমার নিজের বাসায় গত ২৭ ডিসেম্বর তিনজন হিজড়া ঢুকে পড়েছিল। আমি বাসায় ছিলাম না। তারা আমার ছয় মাসের নাতিকে নিয়ে যেতে চায়। বাসার লোকেরা আমার নাতিকে একটি ঘরে লুকিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখে। তারা ভয় দেখায়, টাকা না দিলে তারা তাদের কাপড় খুলে ফেলবে। শেষ পর্যন্ত কিছু টাকা দিয়ে তাদের হাত থেকে উদ্ধার পাওয়া সম্ভব হয়। বাসার আশপাশের লোকদের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি, তারা এভাবেই এক ধরনের নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। তারা তরিতরকারি বিক্রেতাদের থেকে তরকারি না বলেই নিয়ে যায়। এ ছাড়া তাদেরকে কয়েক মাস পর পর টাকা দিতে হয়। পুলিশও হিজড়াদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না। এর কোনো কারণ আছে কি না, জানা নেই। পুলিশের আইজিপিকে বলব, তিনি যেন সমস্যার গভীরতা বোঝার জন্য তদন্ত করে তাদের ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেন। এটা একটা বড় সমস্যা হয়ে গেছে। এটা আর ছোট সমস্যা নেই। আমি নিজে মানবতাবাদী। তারপরও এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রয়োজন বোধ করছি। হিজড়াদের একটি সংগঠন আছে। কিছু দিন আগে তাদের সম্মেলন ও র‌্যালি হতেও দেখেছি। হিজড়াদের সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে বলব, তারা যেন এ চাঁদাবাজি বন্ধ করার ব্যবস্থা করেন। এভাবে চাঁদাবাজি করা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমি জানি, তাদেরও পেট আছে, খাবার দরকার। কিন্তু তাদেরকে অন্য অভাবীদের মতো সাহায্য চাইতে হবে। চাঁদাবাজি করা যাবে না। জোরাজুরি করা যাবে না। এখন সমস্যার অন্য দিক আলোচনা করব। তা হলো, তাদের পুনর্বাসনের বিষয়। এক হিসাবে তাদের সংখ্যা চব্বিশ হাজারের মতো। অন্য হিসাবও থাকতে পারে। ওরা ঠিক পুরুষও নয়, আবার নারীও নয়। তারা বিবাহিত জীবন যাপন করতে পারে না। তারা সমাজে স্থান পায় না। সরকার তাদেরকে ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ বলে ঘোষণা করেছে। কিন্তু তৃতীয় লিঙ্গ বলে কিছু নেই। কুরআনেও মানবজাতির পুরুষ ও স্ত্রী ছাড়া অন্য লিঙ্গের কথা বলা হয়নি। সুতরাং তাদেরকে তৃতীয় লিঙ্গ না বলে অস্পষ্ট লিঙ্গ বা unclear gender বলা যেতে পারে। কারণ, তারা হয় প্রধানত নারী বা প্রধানত পুরুষ। সে যাই হোক, তাদের সমস্যার সমাধান অপরিহার্য। প্রথমত, জাতীয় সচেতনতা প্রয়োজন যাতে পিতামাতা শুরুতেই এ ধরনের শিশুদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। অল্প বয়সে সার্জারির মাধ্যমে তাদের লিঙ্গ ঠিক করা সম্ভব। এই চিকিৎসা ব্যয়বহুল বলে এসব ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ব্যয় সরকার বহন করা উচিত। চাকরির ক্ষেত্রে তাদের লিঙ্গ নিয়ে সমস্যা তেমন হওয়া উচিত নয়। তাদেরকে পুরুষ বা নারী লেখার স্বাধীনতা দেয়া যেতে পারে এবং সব উপযুক্ত কাজে নিয়োগ করা যেতে পারে। তাদের জন্য আলাদা কোটা করার দরকার নেই। তাদের সাধারণ কোটাতেই চাকরি দেয়া যায়। তবে যদি কেউ নিজেকে হিজড়া বলে ঘোষণা দেয়, তাহলে সাধারণ কোটাতেই তাদের অগ্রাধিকার দেয়া যেতে পারে। তবে তাদের মধ্যে যারাই বেকার, তাদের পূর্ণ বেকারভাতা দেয়া যায়। এর পরিমাণ এমন হওয়া উচিত যাতে তারা মোটামুটি চলতে পারে। তাদের থাকার কোনো সমস্যা আছে কি না সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় তা স্টাডি করতে পারে। গোটা বিষয়টিই সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে দেখতে হবে। জানতে পেরেছি, তারা ঢাকায় বাসা ভাড়া করেই থাকে, যদিও তারা অপছন্দনীয়। সামগ্রিক বিষয়টির প্রতি জাতি, সরকার ও পুলিশ প্রশাসনের আশু দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। লেখক : সাবেক সচিব, বাংলাদেশ সরকার
Posted on: Fri, 23 Jan 2015 02:41:58 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015