হালকা হাওয়া বইছে ।সেই - TopicsExpress



          

হালকা হাওয়া বইছে ।সেই হাওয়ায় নীল শাড়ি,কপালে টিপ পরা মেয়েটির খোলা চুল গুলো উড়ছে ।মেয়েটির নাম নদী ।আর সেদিকে একনজরে তাকিয়ে থাকতে থাকতে তানভীর এগিয়ে যাচ্ছে মেয়েটির দিকে । হাতে সদ্য ফোটা একটি লাল গোলাপ । মেয়েটির সামনে গিয়ে... -তানভীরঃ I love .....(কথা থামিয়ে) -নদীঃ ছকিনা ।বল বল বল।আমি জানি তুই ছকিনাকে খুব ভালবাসিস ।খুব মানাবে রে তোদের ।হুফ আমারতো ভেবেই খুব মজা লাগছে । -প্লিজ দোস্ত একবার বোঝার চেষ্টা কর । আমি তোকে খুব ভালবাসি । -কি ? -হুম খুব ভালবাসি । হঠাত ঠাস করে একটা আওয়াজ । কয়েক ন্যানো সেকেন্ডের মধ্যেই নদী তানভীরের গালের উপর একটা চড় বসিয়ে দিল । -নদী, তোর পায়ে পড়ি প্লীজ, আরেকটা চড় মার । নদী ভাবল, একটা থাপ্পড় খেয়ে বান্দরটার শিহ্মা হয়নি । তাই আরেকটা মেরে দিলো ঠাস করে । -থ্যাঙ্কু দোস্ত । একটা মারলে আমার বিয়ে হতনা ।তাই আরেকটা মারতে বললাম । দুটা মারলে বিয়ে হয় । আর বিয়েটা কিন্তু তোর সাথেই হবে । -তুই এত ফাজিল ক্যান? আমি তোকে ভালবাসি না । আর বিয়েতো দূরের কথা । -তোকে বাসতে হবে না ।আমি বেসে যাব । I love u....Not Chokina.. তানভীর ও নদী স্কুল লাইফ থেকেই ক্লোজ বন্ধু ।তারা আজ ভার্সিটি লাস্ট ইয়ারে । সেই কলেজ লাইফ থেকেই তানভীর নদীকে ভালবাসে এমনকি মাসে তিন চার বার করে প্রোপোজও করে বাট কাজ হয় না । রাত ১২ টা বেজে ১৭ মিনিট নদীকে অনলাইনে দেখে তানভীর স্টাটাস দেয়... ফ্রেন্ডজ, খুব শীঘ্রই আমার বিয়ে হবে । আজ একটা মেয়ের কাছে দুইটা থাপ্পড় খেয়েছি । ফিলিং লুঙ্গি ড্যান্স নদী হাসে । আচ্ছা পাগল ।সে স্ট্যাটাসের কমেন্ট পড়তে শুরু করে । কমেন্ট গুলা এরকমঃ 1. দোস্ত পার্টি দে । 2. আমার ভাগ্যে কবে এরকম মেয়ে জুটবে? 3. দোস্ত একটা পেইন কিলার খেয়ে নিস । থাপ্পড়ের ব্যথা বড়ই জালা দেয় । আমিও এককালে খাইসিলাম তো. . . . 4. থাপ্পড় মারল কিডা ? তানভীর রিপ্লাই দেয়, যে মারসে সে এই স্ট্যাসটা দেখবে এবং মুচকি মুচকি হাসবে । নদী স্ট্যাটাস আর কমেন্টগুলা পড়ে আসলেই হাসছিল।সে একটা কমেন্ট দিতে গিয়ে কি মনে করে দিল না ।হুট করে ল্যাপটপ অফ করে দিল । তানভীর এখন টিউশনিতে । সে বারবার ফেসবুকে ঢুকে চেক করছে নদী লাইক কমেন্ট কিছু দিসে কিনা ।কিন্তু নাহ দেয় নি । নদীতো এরকম করার কথা না । - ভাইয়া দেখেন তো । এই ক্যালকুলাসটা পারছি না । - আচ্ছা দাও বুঝিয়ে দি । - আপনি কি চিন্তিত? - কই নাতো । - আপনার গাল লাল মনে হচ্ছে! ব্যাপার কি? - ও কিছুনা আপু । বান্ধবী চড় মারসে । - হায় হায়! কেন? - প্রপোজ করসি তাই । ঠাস করে মেরে দিসে । - হিহিহি । ব্যাপার না । প্রথম প্রথম ইগনোর করে । - হুম সেটাই তো দেখছি । কি করি বলোতো? - কিছুদিন অন্য মেয়ের সাথে ঘুরেন । আপুর চোখে যাতে পড়ে । আপু তখন জলবে আর বিষ দৃষ্টিতে তাকাবে । - ওয়াও বেশ ভাল আইডিয়া । তো তুমি আমার সাথে ঘুর কিছুদিন! - আমি?? না না । আমি পারবনা। - আরে কিছু হবে না । চল একদিন । - বেশ ।কলেজ ফাঁকি দিয়ে আপনাদের ক্যাম্পাসে ঘুরে আসব। দুপুর ১টা ক্রিং ক্রিং ক্রিং নদীর ফোনের স্কিনে তানভীর নামটা ভেসে ওঠে । - নদী, বিকেলে সময় দিতে পারবি? - কোথায় যাবি? - মার্কেটে । - তুই যা । আমার টাইম নাই । - দেখ নদী তুই আগে কখনোই অজুহাত দিতি না । আমার সাথে ইদানিং এরকম করিস ক্যান? - ধুর ছাই ! আগে যেরকম ছিলাম এখনও সেরকম আছি । এখন যায় । কাজ আছে । তানভীর আর নিধিকে কিছুদিন ধারে ক্যাম্পাসে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে । নিধি ওর ছাত্রী । তানভীরের কাছের বন্ধুরা ব্যাপারটা জানে । নদী হাসানের কাছে গিয়ে বলে, দ্যাখ হাসান, তানভীর কি একটা ল্যাছড়া মেয়ের সাথে ঘুরছে সহ্য হয়? হাসান বলে, ল্যাছড়া হবে কেন? অনেক স্মার্ট । বেশ মানাচ্ছে দুজনকে! নদী ভাবে, আসলেই তো মেয়েটা ল্যাছড়া না । তাইলে কি তানভীর ওর সাথে. . . না না নদী কি ভাবছে এসব । তানভীর আর নিধি ক্যাফেটেরিয়াতে চা সমুচা খাচ্ছে দুজন মিলে বেশ আড্ডা দিচ্ছে । নদী আড়চোখে ব্যাপারগুলা খেয়াল করে । - ঐ তানভীর, বিকেলে তোর সময় হবে? নিধি বলে, আপু বসেন । কফির অর্ডার দি । - ধুর ছাই! রাখো তোমার কফি! তানভীর তোর সময় হবে ? - কই যাবি ? - মার্কেটে । - তুই যা । আমার টাইম নাই । - দেখ তানভীর, তুই আগে কখনোই অজুহাত দিতি না। আমার সাথে ইদানিং এরকম করিস ক্যান? - ধুর ছাই ! আগে যেরকম ছিলাম এখনও সেরকম আছি ।এখন যাতো এখান থেকে! - আচ্ছা গেলাম । নদী রাগ করে চলে যায় । নিধি বলে, দেখসেন ভাইয়া , আপু জলছে । - হেহেহে । বেশ জলছে । রাতে তানভীর রিলেশনশীপ স্ট্যাটাস চেন্জ করে দেয় । ITS COMPLICATED.. নদী এটা দেখে কেদে দেয় । তানভীরকে কল দেয় সে । - হ্যা নদী বল । - ঐ মেয়েটা কে? তুই ওকে ভালবাসিস? - জানিনা । শুন আমার বিয়ের বাজার কিন্তু তোকেই করতে হবে । তোর চয়েস ভাল । (নদী এবার আরো জোরে কেদে দেয়।) - কিরে কাদিস ক্যান? বিয়ের বাজার করতে বলসি। আগুনে ঝাপ দিতে তো বলি নাই। - তানভীর, তোকে ভালবাসি । - হুম জানি । তো সেদিন বলিস নাই ক্যান!? -আরে ঐটা এমনি মজা করেসিলাম । জানতাম নাকি তুই আরেক মেয়ের পাল্লায় পড়বি? - হেহে । আমি আবার কম কিসে? নিধি আমার ছাত্রী।এতদিন অভিনয় করসি । - কি? তুই এত বদমাস ক্যান? সামনে থাকলে থাপরাই গাল লাল করে দিতাম তোর। - চুপ থাক । বিয়ের বাজার কিন্তু তোকেই করতে হবে । - আবার শুরু করলি? - আমার আম্মা তোকে বেশ পছন্দ করে । ২ বছর পর আজ ওদের ইয়ের রাত । ইয়ের রাত মানে বাসর রাত আর কি! তানভীর স্ট্যাটাস দেয়, FRNDZ আজ আমাদের ইয়ের রাত । ইয়ের রাত মানে ইয়ের রাত আর কি! দুয়াপ্রার্থী । বন্ধুরা কমেন্ট দেয়, দুয়া করি ইয়ের রাতে বউ যেন তোরে থাপ্পড় না মারে । নদী হাসির ইমো দিয়ে কমেন্ট করে, নাহ আজ থাপ্পড় দিব না । আজ ওকে এতগুলা পাপ্পি দিব এই কমেন্টে অনেক অনেক লাইক পড়ে । তানভীরও হাসে । নদীও হাসে । ঐদিকে বন্ধুরাও হাসে এই খুনসুটি ভালবাসা দেখে । লিখাঃ তানভীর আহমেদ শাওন ।
Posted on: Wed, 12 Nov 2014 16:00:19 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015