১৯৪৭-৪৮ এ ভারত - TopicsExpress



          

১৯৪৭-৪৮ এ ভারত পপাকিস্তান স্বাধীন হলেও কেন বাংলা স্বাধীন হলোনা? সময়টা ১৯৪৬ কিংবা ১৯৪৭। অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, মাওলানা ভাসানী সহ পূর্ব বাংলার নেতারা উপলব্ধি করেন যে, বাংলা ভাষাভাষী মুসলিম অধ্যুষিত এই জনপদের নিপীড়িত মানুষের মুক্তির জন্য দরকার পুর্নাঙ্গ স্বাধীনতা। তাই তারা দাবী করেন এক পুর্নাঙ্গ স্বাধীন রাষ্ট্র অবিভক্ত বাংলা। ১৯৪৭ সালের ২৪ এপ্রিল হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী দিল্লীতে এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করেন- “বাংলা ভাগ হবেনা। বাংলা পাকিস্তানের সাথেও যাবেনা, ইন্ডিয়ার সাথেও যাবেনা। পূর্ব বাংলা, পশ্চিম বাংলা ও আসাম মিলে একটি পুর্নাঙ্গ স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।” হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী উপলব্ধি করেন যে যদি বাংলাকে পুনরায় ভাগ করা হয়, অধিকাংশ শিল্প কারখানা, শিল্প নগরী কলকাতা চলে যাবে পশ্চিম বাংলা তথা ভারতের দখলে। ফলশ্রুতিতে, পুর্ব বাংলা অর্থনীতিতে চরম ভাবে পিছিয়ে পরবে। তাই সমগ্র পূর্ব বাংলা, আসাম, পশ্চিম বঙ্গের মুসলিম অধ্যুষিত পূর্নিয়া জেলা সহ অধিকাংশ অঞ্চল হত এই অবিভক্ত বাংলার অন্তর্গত। “Bangla will not join either pakistan or india and will remain un partitioned. If bengal is partitioned , all industrial and commercial hub and the largest port will also go to the western part” – Suhorawardy. মোহাম্মাদ আলী জিন্নাহ সহ মুসলিম লীগের শীর্ষ নেত্রীবৃন্দ ও মেনে নিয়েছিলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর এই প্রস্তাব। কিন্তু এই প্রস্তাবে বাধ সাধেন মহাত্মা গান্ধী, জওহর লাল নেহেরু, সর্দার প্যাটেল সহ কংগ্রেসের শীর্ষ নেত্রীবৃন্দ। সব থেকে মজার ব্যাপার হল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নেতৃত্বে কলকাতার যেই সুশীল সমাজ ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করে ছিলেন এই বলে যে ‘বঙ্গ ভাগ হয়ে যাচ্ছে’; সেই সুশীলরাই আবার ১৯৪৭ সালে বঙ্গ কে ভেঙ্গে পশ্চিমবঙ্গকে ভারতমাতার সাথে অন্তর্ভুক্তির দাবী জানাতে থাকে। কংগ্রেস নেতৃবৃন্দের ধারণা ছিল এই যে ‘অবিভক্ত বাংলা’ যদি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে তবে এটি হবে আর এক টুকরো পাকিস্তান। জওহর লাল নেহেরু অভিমত প্রকাশ করেন যে – “আসাম এবং পশ্চিমবঙ্গ কোনভাবেই বাংলার অন্তর্গত হতে পারেনা।তাই এই প্রস্তাবিত রাষ্ট্র মেনে নেয়া হবেনা। আসাম এবং পশ্চিমবঙ্গ বাদে বাংলার যতটুকু অঞ্চল পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হবে, পাকিস্তান তা ধরে রাখতে পারবেনা। কালের আবর্তনে তা একদিন ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।” এভাবেই তৎকালীন কলকাতার সুশীল ব্রাহ্মণদের বিরোধিতা এবং কংগ্রেস নেত্রীবৃন্দের একগুঁয়েমির কারণে সলিল সমাধি ঘটে বাংলার মানুষের স্বপ্ন, একটি অবিভক্ত বাংলার; একটি পুর্নাঙ্গ স্বাধীন রাষ্ট্রের। একথা সত্য যে, ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাগ না হলে বংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্র পৃথিবীর মানচিত্রে আবির্ভূত হবার প্রশ্ন আসতনা। আমরা আজও অখণ্ড ভারতের অধীনে থাকতাম। আবার, এ কথাও সত্য যে, ১৯৪৭ পূর্ববর্তী সময়ে পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন সুশীল ব্রাহ্মণরা বিরোধিতা না করলে এবং কংগ্রেস নেত্রীবৃন্দ একগুঁয়েমি এবং সংকীর্ণতা না দেখালে আমাদের এই জনপদ ১৯৪৭ সাল হতেই পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হত এবং সমগ্র আসাম এবং পশ্চিমবঙ্গের একাংশ এই রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত থাকত। --- লেখা ভালো লাগলে এই পেজে লাইক দিয়ে এক্টিভ থাকুন আমরা পুর্ববাংলার কথা বলি, আমরা আর বাংলাদেশের কথা বলি। -- [ সূত্র - উইকিপিডিয়া, ভারত যখন স্বাধীন হল(লেখক- মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, নিখিল ভারত কংগ্রেস সভাপতি)] লিখেছেনঃ মো.শহিদুল আলম , চতুর্মাত্রিক ব্লগে (তারিখঃ ২৬ মার্চ ২০১৩, ২:৪৩ পূর্বাহ্ন)
Posted on: Wed, 04 Sep 2013 11:21:55 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015