একটা ইনিংসে তিনটি রান আউট, তিনটিই দৃষ্টিকটু। প্রথমবার মুমিনুল হক, দ্বিতীয়বার সাকিব আল হাসান আর শেষেরটা শাহাদাত হোসেন। টেস্ট ম্যাচে নির্দিষ্ট একটি ইনিংসে তিনটি রান আউট খুব একটা দেখা যায় না। কিন্তু বাংলাদেশের ইনিংস বলে কথা! এখানে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। মিরপুর টেস্টে জিম্বাবুয়ে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৪০ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার পর যে বড় লিডের স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ তিন রান আউটে সেই স্বপ্ন এখন ভূলুণ্ঠিত। আপাতত নামমাত্র লিডেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ২৫৪ রানে। জিম্বাবুয়ের চেয়ে মাত্র ১৪ রানে এগিয়ে থাকল বাংলাদেশ। চা-বিরতির পর ভরসার কেন্দ্র হয়ে ছিলেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। একাই লড়ে যাচ্ছিলেন জিম্বাবুয়ে-আক্ রমণের বিপক্ষে । কিন্তু ব্যক্তিগত ৬৪ রানে পানিয়াঙ্গারার তৃতীয় শিকারে পরিণত হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। মুশফিকুর রহিম অবশ্য উইকেটের একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে মাহমুদউল্লাহ ও শুভাগত হোমকে। মাহমুদউল্লাহ ৬৩ রানের ভালো একটা ইনিংস খেললেও সিকান্দার রাজাকে সুইপ খেলতে গিয়ে এলবি’র ফাঁদে পড়েন। অনিশ্চিত ওই শট খেলার খেসারত দিয়ে শেষ পর্যন্ত ডিআরএসের ‘হক আই’ এর শিকার ওই মাহমুদউল্লাহ। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে জুটি জমেছিল দুটো। প্রথমে মুমিনুল হক, পরে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে। দুটো জুটিকেই এগিয়ে নেওয়া যেত আরও অনেক দূর। কিন্তু দুটো জুটির সমাপ্তি ঘটেছে বড় অসময়ে। মুমিনুল হকের সঙ্গে জুটিটির ভাঙে মুমিনুলের এক বাজে রান আউটে। মধ্যাহ্ন বিরতির অল্পক্ষণ আগে একটা দ্রুত রান নিতে গিয়ে সিকান্দার রাজার সরাসরি থ্রো’র শিকার হন মুমিনুল। ‘শিকার হোন’ না বলে বলা উচিত ‘ফাঁদে পড়েন’। ফাঁদে পড়েন একেবারেই নিজের নিবুর্দ্ধিতার কারণে। হঠাৎ করেই যেন তিনি গুলিয়ে ফেলেন ক্রিকেটের প্রাথমিক-পাঠ। নন- স্ট্রাইকিং এন্ডে রানের জন্য দৌঁড়াতে থাকা মুমিনুল ক্রিজে পৌঁছেছিলেন রাজার সরাসরি থ্রো’র প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই। কিন্তু ক্রিজে ঢোকার সময় তিনি তাঁর ব্যাটটি ঝুলিয়ে রেখেছিলেন শূন্যে। মুশফিকের সঙ্গে ৬৪ রানের জুটিটার সমাপ্তি ঘোষণা করেন ওই মাহমুদউল্লাহই। চা-বিরতির আগ দিয়ে তাঁকে কে বলেছিল সুইপের মতো একটা অনিশ্চিত শট খেলতে! সাকিব কী নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতে পারেন? মনে হয় না! কারণ মাহমুদউল্লাহর মিডঅফে খেলা বলটি যে দ্রুততার সঙ্গে ফিল্ডারের হাতে পৌঁছে, তাতে তাঁর ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়াটা মোটেও উচিত হয়নি সাকিবের। ফিল্ডার বল ছঁুড়ে দিলে বোলার চাতারা স্টাম্প ভেঙে দিতে একেবারেই ভুল করেননি। তিনটি ফিফটি আলোকিত করেছে বাংলাদেশের ইনিংসকে। মুমিনুলের ৫৩, মাহমুদউল্লাহ’র ৬৩ ও মুশফিকুর রহিমের ৬৪- বাকী ব্যাটসম্যানরা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুর টেস্ট ভুলে গেলেই পারেন। সে হিসেবে লোয়ার অর্ডার তাইজুল ইসলাম লজ্জা পাইয়ে দিতে পারেন অন্য ব্যাটসম্যানদের। একেবারে আনকোরা এই খেলোয়াড়ও ব্যাট হাতে ১৯টি রান করে দিয়ে এসেছেন, যেখানে ব্যর্থতার ঘানি টেনেছেন তামিম, শামসুর, সাকিবের মতো ব্যাটসম্যানরা। বাংলাদেশের পক্ষে ‘চতুর্থ সর্বোচ্চ’ সংগ্রহ শুভাগত হোম চৌধুরীর। তাঁর সংগ্রহ মাত্র ১৪! শেষ দিকে জুবায়েরের ৭ ও আল-আমিনের ৯ মান কিছুটা হলেও বাঁচায় বাংলাদেশের। ৫৯ রানে ৫ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ইনিংসের সর্বনাশ ঘটিয়েছেন তিনাশে পানিয়াঙ্গারা। একটি করে উইকেট তাফাদজাওয়া কামুনগোজি ও সিকান্দার রাজার। Like page:-হাদিস জানুন এবং আমল করুন
Posted on: Mon, 27 Oct 2014 02:45:06 +0000
Trending Topics
Recently Viewed Topics
© 2015