হিস্টোলজি জ্যাংকুইরা, - TopicsExpress



          

হিস্টোলজি জ্যাংকুইরা, গ্যাননের লেখককে ইমেইল করেছিলেন এক বড় ভাই । টার্গেট মলেকুলার বায়োলজিতে PHD/রিসার্চ করা । তখন মাত্র ইন্টার্নশিপ শেষে প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে লেকচারারের জব নিয়েছি । ইমিডিয়েট সিনিয়র ব্যাচ কলিগের GRE, TOEFL, ICDDR,B’র চাকরির জন্য ছোটা দেখে অবাক হতাম । ভাই বলতেন, আইটির পর THE NEXT BIG THING হচ্ছে মলেকুলার বায়োলজি এবং জেনেটিক্স । মেডিকেল রিসার্চ ফান্ডিং,প্রি/প্যারা ক্লিনিক্যাল সাবজেক্টে ক্যারিয়ার-এখনো আমার কাছে মিথ । IEDCR এ তিন দিনের ট্রেনিংয়ে মিথের কয়েকজন চরিত্রের দেখা পেলাম । “বাংলাদেশে মলেকুলার বায়োলজি নিয়ে কাজ করবো, এ কথা শুনে তখন মানুষ হাসত । এখন IEDCR এ ভাইরাস আইসোলেশন, ডিএনএ এক্সট্রাকশন সহ অনেক কিছু হয়” ।ডাঃ এ এস এম আলমগির তাঁর লেকচার শুরু করলেন এ দু লাইন দিয়ে । এরপর কখনো ইউএসএ আটলান্টার CDC BSL-4(Bio Safety Lab-4), কখনো SARS রোগের প্রাদুর্ভাবে পৃথিবীর এ প্রান্ত হতে ওপ্রান্তে ছুটে যাওয়া, WHO’র বিভিন্ন মিটিং এ কূটনীতিকদের মত দরকষাকষি করে বার্ড ফ্লু’র ভ্যাক্সিন নিয়ে আসা-গোগ্রাসে গিলছিলাম স্যারের লেকচার । “বিদেশ থেকে যখন কোন ফোন আসে, আম্মা তখন পেছনে দাঁড়িয়ে কাঁদতে থাকে তাই EBOLA’র OUTBREAK Investigation এ যেতে পারি নি তারপরেও বাংলাদেশে যে কোন অজ্ঞাত রোগে কোন Mass Casualty হলে সবার আগে আমি যাবো” । World War Z হলিউড মুভির নায়ক ব্র্যাড পিট এবং একজন ভাইরোলজিস্টের রিয়েল লাইফ ভার্সনের গল্প শুনছি মনে হলো । শুধু ডাঃ আলমগীর নন, IEDCR এর একেকজন চিকিৎসকের ক্লাস শেষে মনে হয় তারা একেকজন ডিটেকটিভ, সায়েন্টিস্ট, ডিপ্লোম্যাট, প্ল্যানার, মিডিয়া এনালিস্ট, সরকারের নীতি নির্ধারক আমলা । কারো গলায় WHO, UN, ICDDR,B এর আইডি কার্ড ঝুলানো, কারো ডেসিগনেশন ন্যাশনাল কনসালটেন্ট, চীফ ইনভেস্টিগেটর কারো ডিপার্টমেন্টের নাম Medical Social Science, কেউ কাজ করছে সরকারের খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক হাই প্রোফাইল প্রজেক্টে । ভাইরোলজিস্ট ছাড়া বাকি সবারই ব্যাকগ্রাউন্ড পাবলিক হেলথ । “আপনারা যেমন এক এক জন রোগী নিয়ে কাজ করেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এক সিস্টেমের রোগ নিয়ে কাজ করেন, একটা নির্দিষ্ট ওয়ার্ড বড়জোর একটা হাসপাতালের মঙ্গলের জন্য কাজ করেন-আমরা পুরো সমাজ, দেশের সুরক্ষার জন্য কাজ করি । কোন অজ্ঞাত রোগের প্রাদুর্ভাব হলে দ্রুততম সময়ে পৌঁছে যাই, সে রোগের কারণ অনুসন্ধান করি, রোগ যেন না ছড়ায় সম্ভাব্য সকল ব্যবস্থা নেই, জনমনে আতঙ্ক কাটানোর জন্য প্রশাসনকে সাহায্য করি । আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে নমুনা সংগ্রহ করে সেগুলো আমাদের ঢাকা ল্যাবে পরীক্ষা করি । আমাদের BSL-3 ল্যাব আছে, পৃথিবীতে এর চাইতে প্রযুক্তি এবং নিরাপত্তার দিক থেকে উন্নত ল্যাব BSL-4 এর সংখ্যা বেশি না, ক্ষেত্র বিশেষে BSL-4 এর কাজ আমরা আমাদের ল্যাবেই করি(নিপাহ ভাইরাসের কাজ) । ঘটনা ঘটলে সেটার ত্বরিত ব্যবস্থা নেয়াই শুধু নয় পূর্ব প্রস্তুতি, গবেষণা, প্রশিক্ষণ দেয়াও আমাদের কাজ । সে জন্যেই আপনাদের ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে, বিশ্ব জুড়ে EBOLA আতংকের নাম হলেও আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি । কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে বিশেষ EBOLA ওয়ার্ড করা আছে, যেমনটা সৌদীতে পবিত্র হজ্ব উপলক্ষে হাজীদের মার্স করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি আছে । নিপাহ ভাইরাস নিয়ে পৃথিবীর সকল টেক্সট বুকের ৯০% তথ্যই আমাদের গবেষণা থেকে নেয়া । এছাড়া স্বল্প মেয়াদি(৩ মাস)-Certificate Course On Clinical Epidemiology, দীর্ঘ মেয়াদী(২বছর)-Field Epidemiology Training Program, CDC USA এবং বাংলাদেশের যৌথ প্রচেষ্টার একটি কোর্স পরিচালনা করছে ।(CDC লিখে গুগল করলে এটা কতটা প্রেস্টিজিয়াস বোঝা যাবে)” । “তবে সব কিছুর মাঝেও কষ্টের ব্যাপার থাকে । ফরিদপুরে যে ইন্টার্ন চিকিৎসক নিপাহতে মারা গেলো তাঁর আগের দিনও আমি নিজে সব ইন্টার্নকে ব্রিফ করেছি । Unconscious রোগীদের (Suspected Encephalitis) নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে মাস্ক+গ্লাভস ব্যবহার করতে, সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে ফেলতে । একটা অজ্ঞান বাচ্চা আসলো, ইন্টার্ন বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে দৌড়ে গেলো অক্সিজেন দেবার জন্য । সম্ভবত সেভাবেই সে ইনফেক্টেড হয় । ডাক্তাররা কেন গ্লাভস মাস্ক ব্যবহার করে না বুঝি না, হাসপাতালের এপ্রোন পরে কিভাবে বাসায় যায় সেটাও বুঝি না-এপ্রোন পরে বাসায় গেলেন তো জীবানু নিজে তো নিয়েছেনই Better half বা বাচ্চাকেও গিফট হিসেবে দিয়ে আসছেন” । US থেকে আমি যখন পিএইচডি করে ফিরি সবাই বলেছিলো বাংলাদেশে এসব কিছু সম্ভব নয়-খরচেও কুলোবে না । আমরা করে দেখিয়েছি-ইচ্ছে করলেই ভালো কাজ করা যায়, লেগে থাকলে সব হয় । সততা থাকলে, কাজ দেখাতে পারলে টাকার অভাব হবে না, Resource এর অভাব হবে না । জিনিয়াস বড় ভাইয়ের কার্যকলাপ দিয়ে শুরু করেছিলাম-শেষ করছি স্যারের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে । অল্প যে কয়েকজন মেনটরের সংস্পর্শে এসেছি মুগ্ধ হয়েছি । যারা একটু ভিন্ন পথে হেঁটেছেন তাঁরা এত দূর চলে গেছেন যে তাঁরা ধরাছোঁয়ার বাইরে, আমরা তাঁদের চিনি না । তাঁদের কথা অন্যদের জানানো দায়িত্ব মনে করি বলেই “জোনাকী এবং কয়েকজন স্টেথোস্কোপের যোদ্ধা-৩” এর আজকের লেখা । ৭/৯/১৪
Posted on: Fri, 19 Sep 2014 13:47:27 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015